সম্পদ পুনরুদ্ধারে যুক্তরাজ্যের এপিপিজি’র সাথে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের বৈঠক ১৭ মার্চ

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ১৭ মার্চ যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি সংক্রান্ত সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ (এপিপিজি) -এর সাথে একটি বৈঠক করবেন। বৈঠকে চুরি যাওয়া অর্থ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের সমর্থন চাওয়া হবে। খবর বাসস।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। তিনি আগামী ১৫ বা ১৬ মার্চ লন্ডন সফরে যাবেন। সেখানে তিনি আইন সংস্থা এবং সম্পদ পুনরুদ্ধার নিয়ে কাজ করেন এমন বিশেষজ্ঞদের সাথে বৈঠক করবেন। তিনি ১৭ মার্চ সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের সাথেও একটি বৈঠক করবেন’।

আলম বলেছেন, যুক্তরাজ্যে এপিপিজি’র সাথে বৈঠককালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ এবং সম্পদ জব্দ বা অবরুদ্ধ করার অনুরোধ করবেন।

বাসস থেকে প্রাপ্ত সরকারি নথি অনুসারে, ১৭ মার্চ ড. মনসুর সম্পদ পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাজ্যের সংক্রান্ত দুর্নীতি বিষয়ক এপিপিজি’র সাথে কথা বলবেন।

১৯ মার্চ তিনি আন্তর্জাতিক আইন সংস্থা এবং তদন্ত সংস্থাগুলোর সাথে সম্পদ পুনরুদ্ধারের ওপর আধা বেলার সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং মামলা-মোকদ্দমা তহবিল প্রদানকারীদের সাথে বৈঠক করবেন।

এছাড়া, তিনি পররাষ্ট্র দপ্তরের (এফসিডিও) মন্ত্রী, ন্যাশনাল ক্রাইমস এজেন্সি’র মহাপরিচালক (এনসিএ) এবং যুক্তরাজ্যের বর্তমান ও সদ্য-সাবেক বিচার মন্ত্রীর সাথেও বৈঠক করবেন।

এছাড়াও মে মাসের প্রথম দিকে লন্ডনে বাংলাদেশের সম্পদ পুনরুদ্ধার সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে তিনি আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সমন্বয় কেন্দ্র এবং বিশ্বব্যাংকের সাথে কাজ করবেন। সেখানে ৮-১০টি মানি লন্ডারিং-এর গন্তব্যস্থল দেশের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টাস্কফোর্স সদস্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডাররা অংশগ্রহণ করবেন।

তিনি মে মাসের প্রথম দিকে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সম্পদ পুনরুদ্ধার সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সমন্বয় কেন্দ্র এবং বিশ্বব্যাংকের সাথে কাজ করবেন যেখানে ৮-১০টি মানি লন্ডারিং গন্তব্যস্থল দেশের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের সদস্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদাররা অংশগ্রহণ করবেন।

এই সম্মেলনের লক্ষ্য হলো, শক্তিশালী ও অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক/অংশীদারিত্ব স্থাপন করা।

মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর থেকে সম্পদ পুনরুদ্ধারের অগ্রগতি সম্পর্কে সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে একজন এআরটিএফ পরামর্শদাতা মালয়েশিয়া সফর করেন এবং মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করেন। তখন মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ রোসাটমের ৪ বিলিয়ন ডলার ঘুষ এবং মালয়েশিয়ায় অন্যান্য বাংলাদেশি সম্পদের তদন্তে বাংলাদেশকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়ে একটি আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্র পাঠানো উচিত। এমনটাই জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা (জিওবি)-এর অফিসিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া একটি পোস্ট।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর/আন্তর্জাতিক দূত আগামী এপ্রিল মাসে সিঙ্গাপুরে সিঙ্গাপুরের অনাবাসী রাষ্ট্রদূত ডেরেক লোহ-এর সাথে দেখা করে সেখানে একটি কার্যকর কৌশল প্রতিষ্ঠা করবেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস সম্প্রতি চুরি যাওয়া কোটি কোটি ডলার ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছেন কারণ, সরকার আইনি প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য একটি বিশেষ আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে।

সেইসঙ্গে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য একটি কাঠামোও তৈরি করেছে।

সরকারি তথ্য অনুসারে, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছিল এবং এর মধ্যে ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশের ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে পাচার করা হয়েছিল।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

ten − 6 =