সহজেই নেদারল্যান্ডস বাধা পেরুলো পাকিস্তান

সালেক সুফী

২০২৩ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী দল পাকিস্তান কাল হায়দ্রাবাদের প্রায় দর্শক শুন্য রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের আইসিসি সহযোগী সদস্য নেদারল্যান্ডসকে ৮১ রানের বড় ব্যাবধানে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছে। বলবো না জয়টি অনায়েসে লব্ধ ছিল।  বোলিং ব্যাটিং দুই ক্ষেত্রেই বিশ্ব ক্রিকেট আসরে স্বল্প পরিচিত টিউলিপ ফুলের দেশ নেদারল্যান্ডস কিছু প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিং পাঠিয়ে বাবর জমি সহ চট জলদি তিনটি উইকেট তুলে নিয়েছিল কমলা রঙের ওলন্দাজ বাহিনী। সৌভাগ্য পাকিস্তানের। ওরা মুষড়ে পড়েনি। তরুণ সাউদ শাকিল (৬৮) আর পরিণত মোহাম্মদ রিজওয়ানের ( ৬৮) চওড়া ব্যাটে ভোর করে ওরা চতুর্থ উইকেটে দ্রুত ১২০ যোগ করে ম্যাচে ফিরে আসে।  শেষদিকে মোহাম্মদ নাওয়াজ (৩৯) এবং শাদাব খান (৩২) মূল্যবান রান জুড়ে দেয়ায় ৪৯ ওভারে ২৮৬ রান যোগ করে. পাকিস্তানের উঁচু মানের আগ্রাসী বোলিং মোকাবিলা করে এই টার্গেট অতিক্রম করা স্বল্প অভিজ্ঞ নেদারল্যান্ডস দলের সামর্থের অতিরিক্ত ছিল. তাই তুখোড় চৌকষ খেলোয়াড় বাস ডে লীডির একক নৈপুণ্য ( ৪/৬২ এবং ৬৭) কিছু সময়ের জন্য কিছুটা মাথা ব্যাথার কারণ হলেও সহজ জয় পায় পাকিস্তান। নেদারল্যান্ডস ইনিংস শেষ হয় ৪১ ওভারে ২০৫ রানে।

দুইদিন হয়ে গেলো। অনেক ঢাক ঢোল পেটানো বিশ্বকাপ এখনো দর্শক টানছে না. আজ শনিবার ,কাল রোববার। দুটো করে খেলা। হয়তো আজ থেকে মাঠে দর্শক ফিরবে। ক্রিকেট খেলায় গ্যালারি উপচে পড়া দর্শক ছাড়া খেলা লবন ছাড়া তরকারির মত স্বাদহীন মনে হয়.

প্রথম দিনে শিরোপাধারী ইংল্যান্ডের শোচনীয় পরাজয়ের পর কাল কিন্তু পাকিস্তান অনেক সতর্ক ছিল. বিশেষত ব্যাটিং গভীরতা বাড়ানো হয়েছিল স্পিন অল রাউন্ডার মোহাম্মদ নওয়াজকে ফিরিয়ে ব্যাটিং গভীরতা বাড়ানো হয়েছিল। নেদারল্যান্ডস বিশ্ব আসরে স্বল্প পরিচিত হলেও ওদের দলটি কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ ,জিম্বাবুয়ে ,আয়ারল্যান্ড ,স্কটল্যান্ডের মত দলকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে এসেছে।  দলে আছে ইংল্যান্ডে কাউন্টি ক্রিকেট খেলা কয়েকজন সদস্য।  ভারতের কিছু শহরে এখন বৃষ্টি হলেও কাল হায়দ্রাবাদে ছিল উষ্ণতা এবং উইকেট ছিল শুষ্ক।  টস জয়ী হয়ে নেদারল্যান্ডস পাকিস্তানকে ব্যাটিং করতে পাঠায়।  উইকেটে কিছুটা অসম বাউন্স ছিল ,গ্রিপ করছিলো এবং স্পিন ছিল. এমনিতেই নড়বড়ে পাকিস্তানের টপ অর্ডার শুরুতেই ধাক্কা খেলো। ৩৮ রান করতেই ফখর জামান ,বাবর আজম ,ইমাম উল হককে ফিরিয়ে চেপে ধরলো ওলন্দাজ বাহিনী। সৌভাগ্য পাকিস্তানের কোনঠাসা অবস্থানে থেকে নিয়ন্ত্রিত প্রতি আক্রমণ করে দলকে খেলায় ফেরালো উদীয়মান তরুণ সৌদি শাকিল (৬৮) আর পাকিস্তান বাটিংয়ের অন্যতম মূল ভরসা মোহাম্মদ রিজওয়ান (৬৮) . ওদের যোগাযোগে চতুর্থ উইকেটে দ্রুত ১২০ রান যোগ হওয়ায় বড় স্কোরের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তুখোড় ডাচ চৌকষ খেলোয়াড় বাস ডি লিডির (৪/৬২) বোলিং নৈপুণ্যে ৩০০ রানের  সীমা অতিক্রম করে নি পাকিস্তান স্কোর। লেট্ মিডল অর্ডারে মোহাম্মদ নাওয়াজ ( ৩৯) এবং সাদাব খানের (৩২) কার্যকরী অবদান রেখেছে।

নাসিম শাহ না থাকলেও হারিস রউফ ( ৩/৪৩) , হাসান আলী ( ২/৩৩) , ইফতিখার আহমেদ ( ১/১৬) ,মোহাম্মদ নাওয়াজ (১/৩১) ,শাহীন শাহ আফ্রিদি ( ১/৩৭) এবং শাদাব খানের (১/৪৮) বৈচিত্রপূর্ণ কার্যকরী বোলিং আক্রমণ মোকাবিলা করে ম্যাচ জয় করা নেদারল্যান্ডসের সামর্থের অতিরিক্ত ছিল. তবুও চেষ্টার ত্রুটি করেনি সেই চকোষ ডাচ বাস ডি লিডি (৬৭ ) এবং বিক্রমজিৎ সিংহ (৫২) . মিডল অর্ডার অথবা লেট্ অর্ডারে কেউ রুখে দাড়ালে গল্পটা ভিন্ন হতে পারতো। যাহোক স্বস্তির জয়ে শুভ সূচনা পেলো অনেকের প্রিয় পাকিস্তান। দীর্ঘ ১২ বছর পর ভারতে খেলতে এসেছে। টপ অর্ডার ব্যাটিং সামনে নিলে দলটি তৌরামেন্টের অন্যতম ফেভারিট তকমা বজায় রাখবে বলে মনে হয়.

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

nineteen + fourteen =