সাকিব-মিরাজের  ঘুর্ণিতে ১৫৬ রানে গুটিয়ে গেল আফগানিস্তান

দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিসরাজের দুর্দান্ত বোলিং নৈপুন্যে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করা আফগানিস্তানকে ১৫৬ রানে অলআউট করে দিয়েছে বাংলাদেশের । ৩৭ দশমিক ২ ওভার ব্যাট করা আফগানিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ। সাকিব ও মিরাজ নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট।

ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। ব্যাট হাতে নেমে বাংলাদেশের তিন পেসার তাসকিন আহমেদ-শরিফুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমানকে দারুণভাবে সামাল দেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। ৮ ওভারে বিনা উইকেটে ৪৭ রানের সূচনা করেন তারা।

তিন পেসার আফগানিস্তানে উদ্বোধনী ভাঙ্গতে ব্যর্থ হওয়ায় চতুর্থ বোলার হিসেবে নিজেই আক্রমনে আসেন সাকিব। ইনিংসের নবম ও নিজের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন পঞ্চম বিশ^কাপ খেলতে নামা সাকিব। টাইগার দলপতির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে তানজিদ হাসানকে ক্যাচ দেন ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৫ বলে ২২ রান করা ইব্রাহিম।

দলীয় ৪৭ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন গুরবাজ ও রহমত শাহ। দেখেশুনে খেলে রানের চাকা সচল রাখেন তারা। ১৫ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৮৩ রান পেয়ে যায় আফগানিস্তান।

ইনিংসের ১৬তম ও নিজের চতুর্থ ওভারে আবারও বাংলাদেশকে আবারো ব্রেক থ্রু এনে দেন  সাকিব। আবারও সাকিবের অফ-স্টাম্পের বাইরের বলে সুইপ করতে গিয়ে মিস টাইমিংয়ে কাভারে লিটন দাসকে ক্যাচ দেন ১৮ রান করা রহমত।

এরপর অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদিকে নিয়ে আফগানিস্তানের রান ১শ পার করেন গুরবাজ। ২৫তম ওভারে শাহিদিকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে তৃতীয় সাফল্য এনে দেন মিরাজ। সাবধানে খেলতে থাকা শাহিদি ৩৮ বল খেলে ১৮ রান করেন।

পরের ওভারে উইকেটে সেট ব্যাটার গুরবাজকে ফেরান  মুস্তাফিজ। ডিপ পয়েন্টে তানজিদকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬২ বলে ৪৭ রান করা গুরবাজ।

১১২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানিস্তান। এ অবস্থায় আফগানিস্তানের মিডল অর্ডারের দুই ব্যাটারকে আউট করে চাপ আরও বাড়ান সাকিব ও তাসকিন। ২৯তম ওভারে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে দারুন এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন সাকিব। ১৩ বলে ৫ রান করেন নাজিবুল্লাহ। পরের ওভারে ১২ বলে ৬ রান করা মোহাম্মদ নবির উইকেট উপড়ে ফেলেন তাসকিন। ১২৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতন হয় আফগানিস্তানের।

এ অবস্থায় সপ্তম উইকেটে ২৬ বলে ২৪ রান যোগ করে আফগানিস্তানের রান দেড়শতে নেন আজমতুল্লাহ ওমারজাই ও রশিদ খান। ৩৫তম ওভারে রশিদকে ব্যক্তিগত ৯ রানে বোল্ড করে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন মিরাজ।

৩৫তম ওভারে দলীয় ১৫০ রানে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে রশিদ ফেরার পর আফগানিস্তান ইনিংসের শেষ ৩ উইকেট দ্রুতই তুলে নেন শরিফুল ও মিরাজ। ৩৭ দশমিক ২ ওভারে ১৫৬ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান। ওমারজাইকে ২২ রানে এবং নাভিন উল হককে খালি হাতে বিদায় করেন শরিফুল। মুজিব উর রহমানকে রানের খাতা খুলতে দেননি মিরাজ। অর্থাৎ বাংলাদেশী বোলারদের সামনে  ধুকতে থাকা আফগানরা ৪৪ রানে শেষ ৬ উইকেট হারায়।

সাকিব ৮ ওভারে ৩০ রানে ও মিরাজ ৯ ওভারে ২৫ রানে ৩টি করে উইকেট নেন। শরিফুল ৩৪ রানে ২টি, তাসকিন ৩২ রানে ও মুস্তাফিজ ২৮ রানে ১টি করে উইকেট শিকার করেন।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

18 − eleven =