সাফল্যের দেখা পাচ্ছেন না অক্ষয়

অক্ষয় কুমার ভীষণ নিয়মতান্ত্রিক মানুষ। ঘুম, ব্যায়াম, খাওয়া, শুটিং—তাঁর প্রতিটি কাজ নিয়মে বাঁধা। দিনে ৮ ঘণ্টার বেশি শুটিং করেন না তিনি। কোনো সিনেমার জন্য ২৫-৩০ দিনের বেশি শিডিউলও দেন না। শাহরুখ, সালমান, আমিরের মতো অভিনেতারা যেখানে বছরে দুই-তিনটির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেন না, সেখানে অক্ষয় একের পর এক কাজ করে যান। বছরে তাঁর মুক্তি পাওয়া সিনেমার সংখ্যাও কম নয়। ২০২২ সালে ৬টি, ২০২৩-এ ৩টি এবং এ বছর ৬টি সিনেমা রয়েছে অক্ষয়ের মুক্তির তালিকায়।

অক্ষয় নিজেকে ‘প্রযোজকের লোক’ বলতেই ভালোবাসেন। কোনো সিনেমায় যুক্ত হওয়ার পর তাঁর একমাত্র চিন্তা থাকে, কীভাবে সিনেমাটি ঠিক সময়ে শেষ করা যায়। অক্ষয় মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে শুটিং হলেই যে সিনেমা ভালো হবে, তা নয়। অনেক আলোচিত সিনেমা আছে, যার শুটিং শেষ হয়েছে অল্প দিনে। এ ক্ষেত্রে তিনি আনেন টম ক্রুজের ‘মিশন: ইমপসিবল’-এর উদাহরণ। অক্ষয়ের দাবি, মাত্র ৫৫ দিনেই এ সিনেমার শুটিং শেষ হয়েছিল।

সম্প্রতি ভরদ্বাজ রঙ্গনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অক্ষয় কুমার বলেন, ‘আমি প্রতিদিন ঘড়ি ধরে ৮ ঘণ্টা কাজ করি। ক্যামেরা এমন একটা জিনিস, যাতে প্রতিটি সূক্ষ্ম বিষয় ধরা পড়ে। ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে শরীরে ক্লান্তি আসে, সেটা ক্যামেরায় বোঝা যায়। আমি খুব নিয়মতান্ত্রিকভাবে জীবনযাপন করি। শরীর ঠিক রাখার জন্য ৮ ঘণ্টা ঘুমের দরকার হয়, সারা দিনের খাবারের জন্য দুই ঘণ্টা, ব্যায়ামের জন্য দুই ঘণ্টা এবং বাকিটা সময় পরিবারের সঙ্গে কাটাই।’

শুটিংয়ের জন্য ৮ ঘণ্টা সময় দিলেও এই সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা করেন অক্ষয়। তিনি বলেন, ‘সেটে আসার পর থেকে ডিরেক্টর প্যাক আপ বলা পর্যন্ত আমি সারাক্ষণ সেটেই থাকি। এমনকি ভ্যানিটি ভ্যানেও যাই না।’ তবে এত নিয়মনিষ্ঠ হয়েও ইদানীং তার ফল খুব একটা ভালো হচ্ছে না। কয়েক বছর ধরে একের পর এক সিনেমা ফ্লপ হচ্ছে অক্ষয়ের। করোনা-পরবর্তী সময়ে ‘ওএমজি টু’ ও ‘সূর্যবংশী’ ছাড়া তাঁর সব সিনেমাই লগ্নি তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। সবশেষ ১২ জুলাই মুক্তি পাওয়া ‘সারফিরা’ মাত্র ২ কোটি ৪ লাখ রুপি ঘরে তুলতে পেরেছে প্রথম দিনে, যা ২০০৯ সালের পর অক্ষয়ের সর্বনিম্ন ওপেনিং।

তবে ব্যর্থতা থেকেও তিনি রোজ শিক্ষা নেন। অক্ষয় জানান, তিনি এমন অনেক নায়ককে দেখেছেন, যাঁরা খুব বেছে বেছে সিনেমা করার পরও তাঁদের সিনেমা সাফল্যের মুখ দেখেনি। অক্ষয় বলেন, ‘অমিতাভ বচ্চন একবার আমাকে বলেছিলেন, সাফল্য-ব্যর্থতা যা-ই আসুক, শুধু কাজ করে যাও। আমি এটাই শিখেছি। ক্যালকুলেশন, ম্যানিপুলেশন সব ভুল। সততা, মেধা আর ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস—এটাই আসল।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

four × 1 =