সুদানের দারফুরে ‘বিধ্বংসী’ ভূমিধসে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত

আফ্রিকার দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানের দারফুর অঞ্চলের একটি গ্রাম সোমবার ‘বিধ্বংসী’ ভূমিধসে বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ‘একজন ব্যক্তি ছাড়া একটি গ্রামের এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর ‘জরুরি’ সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।

সোমবার বিদ্রোহী একটি গোষ্ঠী এই খবর জানিয়েছে। সুদানের রাজধানী খার্তুম থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে। খবর বাসস।

সুদানের পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে একটি ‘বিধ্বংসী’ ভূমিধসে একটি পাহাড়ি গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ১ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। সোমবার রাতে এই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গ্রামটির জনসংখ্যা আনুমানিক এক হাজারের একটু বেশি। এরমধ্যে ভূমিধসে মাত্র একজন বেঁচে গেছেন।

সুদান লিবারেশন মুভমেন্ট/আর্মি (এসএলএম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের পর রোববার এই দুর্যোগ ঘটে, যা জেবেল মারা পাহাড়ের তারাসিন গ্রামকে ধ্বংস করে দেয়।

গ্রুপটি বলেছে, ‘প্রাথমিক তথ্যে গ্রামের সকল বাসিন্দার মৃত্যু ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। গ্রামটিতে আনুমানিক এক হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করে। তাদের মধ্যে কেবল একজন বেঁচে আছেন।’

এতে আরো বলা হয়েছে, ‘বিশাল এবং বিধ্বংসী’ ভূমিধসে লেবু উৎপাদনের জন্য পরিচিত এই অঞ্চলের কিছু অংশ ‘সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস’ হয়ে গেছে।

গোষ্ঠীটি জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সাহায্য সংস্থার কাছে ধুলো ও ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে থাকা মৃতদের উদ্ধারে সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে।

সুদান সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায়, দেশটিকে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মধ্যে একটিতে পরিণত করেছে।

এসএলএম বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যুদ্ধ থেকে দূরে থেকেছে। তবে সুদানের সর্বোচ্চ পর্বতমালার কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

দারফুরের সেনাবাহিনী সমর্থিত গভর্নর মিন্নি মিন্নাউই ভূমিধসকে ‘একটি মানবিক ট্র্যাজেডি যা এই অঞ্চলের সীমানা ছাড়িয়ে গেছে’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর কাছে এই সংকটময় মুহূর্তে জরুরিভাবে হস্তক্ষেপ এবং সহায়তা ও সহায়তা প্রদানের জন্য আবেদন করছি। কারণ, এই ট্র্যাজেডি আমাদের জনগণের একা বহন করার সক্ষমতা নেই।

চলমান যুদ্ধের কারণে দারফুরের বেশিরভাগ অংশ আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর কাছে এখনো প্রবেশের অনুমতি নেই। যার ফলে জরুরি মানবিক সহায়তা সরবরাহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদান সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার প্রাক্তন ডেপুটি, আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগলোর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের সূত্রপাতের ফলে দেশটি যুদ্ধে বিধ্বস্ত।

ধারাবাহিক আক্রমণের মাধ্যমে বুরহানের বাহিনী এই বছর মধ্য সুদান পুনরুদ্ধার করে। আরএসএফ দারফুরের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়। তারা একটি রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশার ছাড়া বাকি সবগুলো এবং দক্ষিণ কর্দোফানের কিছু অংশ জয় করেছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

one − one =