সালেক সুফী
সুপার এইটের নিজেদের প্রথম ম্যাচ টুর্নামেন্ট ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া হেসে খেলেই বাংলাদেশকে গুড়িয়ে দিয়ে ডাক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ২৮ রানে জিতে নিলো।বৃষ্টি বিঘ্নত ম্যাচে প্রথম ব্যাটিং করে বাংলাদেশ করেছিল ১৪০/৮। উইকেটে কোন দৈত্য দানব ছিল না। প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ১৪০ রান কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি করবে না জানাই ছিল। ভারী বৃষ্টি ম্যাচের ইতি টানার সময় ১১.২ ওভারে অস্ট্রেলিয়া পৌঁছে গিয়েছিলো ১০০/২। খণ্ডিত ম্যাচে প্রয়োজন ৭২/২। অস্ট্রেলিয়া জয়ী হবে জানাই ছিল। অনেকের ধারণা ছিল বাংলাদেশের ইদানিং ভালো করতে থাকা বোলিং আক্রমণ কিছুটা হলেও লড়াই করবে। একমাত্র তরুণ লেগ স্পিনার ছাড়া অন্য কারো বল পাত্তাই দিলো না অস্ট্রেলিয়া। উইকেটের চরিত্র পাল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেটের কংকাল বেরিয়ে পড়লো।
বাংলাদেশের বাটিংয়ের সূচনায় তানজিদ তামিমকে ফিরিয়েছিলো মিচেল স্টার্ক। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে শান্ত লিটন জুটি ধস সামাল দিলেও লিটনকে কখনো স্বস্তিতে খেলতে দেখা যায়নি। ২৫ বল খেলে ১৬ রান করা লিটন দলকে বিপদে ফেলে চলে যাবার পর টীম ম্যানেজমেন্ট পিঞ্চ হিটার হিসাবে রিশাদ হোসেনকে প্রমোট করেছিল। কৌশলটি কাজে লাগেনি। কাল ভালো খেলেছে নাজমুল শান্ত (৪১) এবং তাওহীদ হৃদয় (৪০)। দুই জন ছাড়া সাকিব, রিয়াদ বা নিজের দিকের কেউ অস্ট্রেলিয়ার তুখোড় আক্রমণের মুখে দাঁড়াতেই পারেনি। সাকিব, রিয়াদ, শেখ মাহেদী দৃষ্টিকটুভাবে উইকেট বিসর্জন দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার মত বিশ্বসেরা দলের বিরুদ্ধে ১৪০/৮ উইকেট ছিল মামুলি সংগ্রহ।
আগেই বলেছি উইকেটে ইভেন বাউন্স ছিল। বৃষ্টি বিঘ্ন ঘটার আশংকায় অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ট্রাভিস হেড এবং ডেভিড ওয়ার্নার দ্রুত ৬.৫ ওভারে ৬৫ রান তুলে নিয়েছিল। তাসকিন, মুস্তাফিজ কেউ রেহাই পায়নি ওদের আগ্রাসী ব্যাটিং থেকে। একমাত্র রিশাদ ট্রাভিস হেড (৩১) এবং মিচেল মার্শ (১) রানে ফিরিয়ে দিয়ে কিছুটা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। বৃষ্টিতে খেলার অকাল পরিসমাপ্তি ঘটে ১১.২ ওভারে। ওই সময় অস্ট্রেলিয়ার রান দাঁড়ায় ১০০/২। ডাক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে প্রয়োজন ছিল ৭২/২। ২৮ রানে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। দলের ব্যাটিং নেতৃত্ব দিয়েছে অপরাজিত ডেভিড ওয়ার্নার ৩৫ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করে। হ্যাটট্রিক অর্জন করি পাট কামিন্স ২৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে হয়েছে ম্যাচ সেরা।
যারা বাংলাদেশের প্রথম রাউন্ডে ধীর নিচু অসম বাউন্সের উইকেট গুলোতে বোলারদের চমৎকার নৈপুণ্য থেকে স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশ গ্রুপ অফ এইটে লড়াই করবে প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তারা হয়তো আশাহত হতে পারেন। কিন্তু নড়বড়ে ব্যাটিং নিয়ে এমনটাই তো হবার কথা। রাতারাতি বাংলাদেশ ক্রিকেট পাল্টে যায়নি। বাংলাদেশের পরের খেলা শক্তিশালী ভারত দলের বিরুদ্ধে। শেষ ম্যাচ খেলবে আফগানিস্তানের সঙ্গে। ব্যাটসম্যানরা ঘুরে না দাঁড়ালে আমি আশার ভরসা পাই না। এটাই বাংলাদেশ। এমনিতো হবার কথা।