ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরীতে স্যাটেলাইট টেলিভিশন গ্রাহকদের ডিজিটাল ‘সেট টপ বক্স’ বসানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করে সরকারের দেওয়া সিদ্ধান্তে আবারও স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
মঙ্গলবার (৩১ মে) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি তিন মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করে।
কেবল নেটওয়ার্ক কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তরে গত ২৮ এপ্রিল সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তি কেন অসৎ উদ্দেশ্যপূর্ণ, অসাংবিধানিক, বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিবকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
‘কোনো নীতিমালা না করে’ সরকারে দেওয়া ওই বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে গত রোববার হাই কোর্টে রিট করেন কেবল নেটওয়ার্কের গ্রাহক ঢাকার গোরানের বাসিন্দা মো. আবুল কাউসার কল্পন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মোহাম্মদ মুশফিকুল হুদা।
রিটকারীর আইনজীবী মুশফিকুল সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত রুল দিয়ে বিজ্ঞপ্তিটি তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে।”
নীতিমালা তৈরি করতে ‘ইনপুট’ চাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে রিটকারীর আইনজীবী খন্দকার মোহাম্মদ মুশফিকুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, “তার মানে এ সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা নেই।
“প্রযুক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকার প্রস্তুত না। যেখানে নীতিমালা নেই, প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি যেখানে নেই, সেখানে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সরকার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না। যে কারণে বিজ্ঞপ্তিটি চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনটি করা হয়।
এর আগে গত বছর ৪ নভেম্বর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় নেটওয়ার্ক ডিজিটাল করা নিয়ে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে টিভি কেবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আসবে।
স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল দেখা অব্যাহত রাখতে ডিশ কেবল গ্রাহকদের এ সময়ের মধ্যে কেবল বা ফিড অপারেটরের সহযোগিতায় এনালগ পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটাল সেট টপ বক্স স্থাপনের জন্য অনুরোধ করা হয়।
অন্যথায় ৩০ নভেম্বরের পর ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল দেখা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল।
ওই গণবিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে ঢাকার খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা মো. সাহেদ কাওসার হাই কোর্টে রিট আবেদন করলে প্রাথমিক শুনানির পর তখন ওই গণবিজ্ঞপ্তিটিও স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট।
বিডিনিউজ