সেরা ১০ ভারতীয় ছবির প্রথম তিনটিই বাঙালি পরিচালকের

ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে প্রথম দশটি ছবির তিনটিই বাঙালি পরিচালকের। এই তিনটি ছবির পরিচালক বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণাল। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম ক্রিটিকস (এফআইপিআরএসসিআই)-এর ‘ইন্ডিয়া চ্যাপ্টার’ একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। সেখানে সমালোচকদের মতামতের ভিত্তিতেই উঠে এসেছে এই তিন পরিচালকের তিনটি ছবির নাম।

সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’-কেই ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সেরা ছবি বলে চিহ্নিত করেছেন মতদাতারা। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৫৫ সালে সত্যজিৎ তার প্রথম ছবিটি তৈরি করেন। ‘পথের পাঁচালী’ সেই সময়ের ভারতীয় ছবির যাবতীয় ব্যাকরণ থেকেই যেন বেরিয়ে যায়। এই ছবির মাধ্যমেই ‘নিওরিয়্যালিজম’-এর জগতে পা রাখে ভারতীয় সিনেমা। সত্যজিতের এই কাজের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলতে দেরি হয়নি।

এফআইপিআরএসসিআই-এর তালিকায় পরের ছবিটি ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’। ১৯৬০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবি শক্তিপদ রাজগুরুর উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি। উদ্বাস্তু কলোনির এক মেয়ের সংগ্রাম নিয়ে তৈরি এই ছবিও বিশ্ব চলচ্চিত্রে এক স্বকীয় ভাষার অবতারণা করে। তালিকায় তৃতীয় নামটি মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ (১৯৬৯)-এর। উৎপল দত্ত ও সুহাসিনী মূলে অভিনীত এই ছবি ভারতীয় চলচ্চিত্রের আর এক বিশ্বজয়ের কাহিনি লিখে রাখে।

চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে আদুর গোপালকৃষ্ণণের মালয়ালাম ছবি ‘এলিপ্পাথায়াম’ (১৯৮১), গিরীশ কাসারাভাল্লির কন্নড় ছবি ‘ঘাটশ্রাদ্ধ’ (১৯৭৭) এবং এমএস সথ্যুর ‘গরম হাওয়া’ (১৯৭৩)। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে, সপ্তম স্থানটি আবার দখল করেছেন সত্যজিৎই, তার ১৯৬৪-এর ছবি ‘চারুলতা’ দিয়ে। অষ্টমে রয়েছে শ্যাম বেনেগালের ‘অঙ্কুর’ (১৯৭৪), নবমে গুরু দত্তের ‘পিয়াসা’ (১৮৫৪) এবং দশমে রমেশ সিপ্পির ১৯৭৫-এর ছবি ‘শোলে’।

এফআইপিআরএসসিআই নামের চলচ্চিত্র সমালোচকদের এই সংগঠনটি ১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কান, ভেনিস বা ভিয়েনা ইত্যাদি চলচ্চিত্র উৎসবে এই সংগঠন বিভিন্ন ছবিকে পুরস্কৃত করে থাকে। জানা গিয়েছে, এই মতগ্রহণ পর্বটি অত্যন্ত গোপনেই সামাধা করেছিল এফআইপিআরএসসিআই। এখানে মতামত দিয়েছেন সংগঠনের ত্রিশ জন সদস্য।

আনন্দবাজার পত্রিকা

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

two × four =