স্পিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া

সালেক সুফী

শ্রীলংকার গলে অনুষ্ঠানরত ওয়ার্ন-মুরালিধরন টেস্ট সিরিজের বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম দিনশেষে ২ উইকেট হারিয়ে ৩২০ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া।  তৃতীয় উইকেট জুটিতে উসমান খোয়াজা ১৪৭* এবং অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ১০৪* ম্যাচের দিক নির্দেশক ১৯৫ রানের জুটি গড়ে চালকের ভূমিকায় নিয়েছে সফরকারী দলকে।

উইকেটে স্পিন ধরছে শ্রীলংকান স্পিনাররা সারা দিন ভালো বোলিং করেছে। কিন্তু সঠিক কৌশল নিয়ে দারুন প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়া দল ইতিমধ্যে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এই টেস্টে শ্রীলংকা টিকে থাকতে হলে আজ প্রথম ঘণ্টায় দ্রুত কিছু উইকেট তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস ৪০০ রানে সীমিত রাখতে হবে।

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলার বিষয়টি মীমাংসিত হয়ে গেছে। বর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের ফলাফল ভিন্ন হলে চলতি সিরিজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারতো। অস্ট্রেলিয়ার তথা বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথ কাল টেস্ট ক্রিকেটে ১০,০০০ বা ততোধিক রান সংগ্রাহক ১৫ জনের কুলিন ক্লাবের সদস্য হবার পাশাপাশি নিজের ৩৫ম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করে।  খাওয়াজা ১৬ম সেঞ্চুরির পাশাপাশি একমাত্র অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকার বিরুদ্ধে সফরে শত রান করার গৌরব অর্জন করে।

বেশ কিছু দিন খাওয়াজার ব্যাটে রান ছিল না। বর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে জাসপ্রিত বুমরার নেতৃত্বের ভারত বোলিং আক্রমণের সামনে অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার খাবি খেয়েছে। অস্ট্রেলিয়া কিন্তু ডেভিড ওয়ার্নারের অবসর ঘোষণায় ওপেনারদের নিয়ে চিন্তিত ছিল।

বিশেষত শ্রীলংকায় স্পিন সহায়ক উইকেটে তরুণ অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান স্যাম কনস্টাস বা নাথান মাকসুইনির উপর নির্ভর করতে পারেনি। তাই পরিবর্তিত কৌশল হিসেবে ফর্মে থাকা তুখোড় মারকুটে ব্যাটসম্যান ট্রাভিস হেডকে প্রমোট করে খাওয়াজার সঙ্গী করে টিম ম্যানেজমেন্ট। ভরসা ছিল খাওয়াজা আস্থার প্রতিদান দিবে।

কাল টস জয় করে ব্যাটিং সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠা করেনি। দুটি দল তিন স্পিনার নিয়ে দল সাজিয়েছে। স্বাগতিক দলে রয়েছে নিশাথ পেরিস, প্রবাথ জয়াসুরিয়া এবং জেফ্রি ভান্ডারসে। অস্ট্রেলিয়া নাথান লায়নের সঙ্গী করেছে টড মারফি এবং ম্যাথিউ কুনারমানকে।  এই উইকেটে তৃতীয় এবং চতুর্থ ইনিংসে উইকেটে বাড়তি স্পিন ধরবে বলাই বাহুল্য।

কাল শুরুতেই কৌশল অনুযায়ী ট্রাভিস হেড এবং খাওয়াজা শ্রীলংকান বোলারদের প্রতি আক্রমণ করে দ্রুত ১৪.৩ ওভারেই ৯২ রান তুলে নিয়ে স্বাগতিক দলকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়।  সৌভাগ্য স্বাগতিক দলের টি২০ ঢঙে ব্যাটিং করতে থাকা ৪০ বলে ৫৭ রান করা ট্রাভিস হেডকে জয়াসুরিয়া ফেরাতে পেরেছিল।

কিছুক্ষণ সংগ্রাম করে মার্নাস লাবু সাং ২০ রান করে বিদায় নিলে শুরু হয় দুই চ্যাম্পিয়ন ব্যাটসম্যান খাওয়াজা এবং স্মিথের মহাকব্যিক জুটি। বলবো না শ্রীলংকা ভালো বোলিং করেনি। তবে উইকেট এবং বোলিং অনুযায়ী দারুন ব্যাটিং করেছে এই জুটি। খাওয়াজার অপরাজিত ১৪২ রানের ইনিংসে ছিল ১০ চার এবং একটি ছয়।  স্মিথের অপরাজিত ১০৪ রানের ইনিংসটিও সাজানো ছিল ১০ চার এবং এক ছয়ে। বৃষ্টির কারণে খেলা আগে শেষ হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পায় শ্রীলংকা। অন্তত দুইবার রিভিউ নিতে ভুল করে শ্রীলংকা সুযোগ হারায়।

ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এখন অস্ট্রেলিয়ার হাতে। এখান থেকে পরাজয় এড়াতে হলে শ্রীলংকাকে অলৌকিক কিছু করতে হবে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

18 − sixteen =