সালেক সুফী
সেয়ানে সেয়ানে লড়াই দেখলো ফুটবল বিশ্ব। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দিদিয়ের দেশম অনুশাসনের দুরন্ত ফ্রান্স দলের চোখে চোখ রেখে লড়াই করেও পারলো না মরক্কো। কট্টর পেশাদার ফ্রান্স ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছির মতো উড়ে আশা মরোক্কানদের আঘাত সয়ে মোক্ষম সময়ে ২ গোল করলো। সবার মন জয় করে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলো আফ্রিকা তথা আরব বিশ্বের প্রতিনিধি মরক্কো। ব্রাজিল আর ইতালির পর এখন সুযোগ ফ্রান্সের পর পর দুইবার বিশ্বকাপ জয়ের। রবিবার কাতারের আইকনিক লুসিয়ান স্টেডিয়াম মুখোমুখি হবে বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা দুই দল খুদে জাদুগর লিওনেল মেসি (এলএম ১০ ) আর্জেন্টিনা ও কিলিযান এমবাপের ফ্রান্স।
২০২২ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকেই অনেক ওলোট পালট হয়েছে। ঝরে গেছে জার্মানি, বেলজিয়াম, স্পেন, পর্তুগাল, ইংল্যান্ড ব্রাজিলের মতো দলগুলো। এমনকি প্রথম খেলায় সৌদি আরবের কাছে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। দুরন্ত ফ্রান্স গ্রুপ পর্যায়ের শেষ খেলায় হেরেছিল আফ্রিকার তিউনিসিয়ার কাছে। ফিফা বিশ্বকাপ শুরুর আগে পূর্বাভাস ছিল চার সেমি ফাইনালিস্ট হয়তো হবে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড।
নানা ঘটনা অঘটনের পথে ফ্রান্স আর্জেন্টিনা উৎরে গেলেও ব্রাজিল, ইংল্যান্ড ছিটকে পড়ে। ভালো খেলেই ক্রোয়েশিয়া, মরক্কো পৌঁছালো শেষ চারে। মেসি জাদুতে আর্জেন্টিনা ৩-০ ব্যবধানে ক্রোয়েশিয়াকে বিপর্যস্ত করে ফাইনালে পৌঁছে কোটি কোটি ভক্ত অনুরাগীদের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো।
আজ কিন্তু ফ্রান্স দুরন্ত মরোক্কো থেকে জয় পেতে অনেক ঘাম ঝরাতে হয়েছে। মরক্কোর রক্ষণভাগের শিথিলতার কারণে শুরুতেই পিছিয়ে পড়েছিল আফ্রিকান সিংহ বাহিনী। এর পর সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। দুরন্ত গতিতে মধ্য মাঠ থেকে সমন্বিতভাবে ফ্রান্স গোলের হ্যান্ড সাকিং দুরত্বে পৌঁছেও সুযোগ সন্ধানী গোলদাতার অভাবে গোল পায়নি। বেশ কিছু ফলপ্রসু আক্রমণ শুধু মরক্কো খেলোয়াড়দের শেষ স্ট্রাইক নেওয়ার দোদুল্যমনতার কারণে গোল হয়নি।
দুই একটি গোল সৌভাগ্যে রক্ষা হয়েছে ফ্রান্স দলের। এমন একটা অবস্থা ছিল যে কোনো মুহূর্তে সমতা আনতে পারে মরক্কো। যদি ওদের একজন মেসি, নেইমার বা এমবাপে থাকতো তাহলে হয়তো ম্যাচের ফলাফল ভিন্ন হতেও পারতো। এমনি যখন অবস্থা প্রতি আক্রমণে ফ্রান্সের বিকল্প খেলোয়াড় মাঠে নেমেই গোল করে দলকে ২-০ ব্যবধানে পৌঁছে দিলো আরো একবার শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে।
দেখুন যতই উলোট পালট হোক না কেন বিশ্ব ফুটবলের এই মুহূর্তের দুটি সেরা দল ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা ফাইনালে মুখোমুখি হলো। হতে পারতো ব্রাজিল ইংল্যান্ড। ল্যাটিন আমেরিকা ইউরোপের ফুটবল বিশ্বযুদ্ধে সেরা দলটি বিষয়ে আগাম মন্তব্য করবো না। তবে অন্য অনেকের মতোই খুদে জাদুগরের শেষ আবির্ভাবে ওর হাতে ট্রফি দেখলে আমার ভালো লাগবে।
স্বপ্ন ছোঁয়ার সম্ভাবনা থাকলেও মরীচিকা হয়ে যাওয়ার বেদনা বিধুর মরোক্কোর জন্য টুপি খোলা অভিনন্দন।