‘হঠাৎ বৃষ্টি’র ২৫ বছর: প্রকাশ হচ্ছে বই, মুক্তি পাবে সিনেমা

১৯৯৮ সালের কোরবানির ঈদের দিন ওয়ার্ল্ড টেলিভিশন প্রিমিয়ার হয় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র। এরপর সিনেমা হলে মুক্তি পেয়ে রেকর্ড ব্যবসা করে। সে সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস, যা দিয়ে তিনি উঠে এসেছিলেন খবরের শিরোনামে। তাঁর বিপরীতে অভিষেক হয়েছিল ওপার বাংলার দুই নায়িকা প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী ও শ্রীলেখা মিত্রের। শুধু তা-ই নয়, হঠাৎ বৃষ্টি দিয়েই প্রথমবার কোনো সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেন নচিকেতা চক্রবর্তী। হঠাৎ বৃষ্টি বাংলা সিনেমায় পরিবর্তনের হাওয়া নিয়ে এসেছিল। রেকর্ড ব্যবসার পাশাপাশি সমালোচকদের প্রশংসাও কুড়িয়েছিল সিনেমাটি। ১৯৯৮ সালে মাত্র দুটি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। দুটি পুরস্কারই উঠেছিল হঠাৎ বৃষ্টির ঝুলিতে। সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন ফেরদৌস আহমেদ ও চিত্রগ্রাহকের পুরস্কার জিতেছিলেন আখতার হোসেন।

দেখতে দেখতে ২৫ বছর হয়ে গেছে সিনেমাটির। ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি বই প্রকাশ করতে যাচ্ছেন সিনেমাটির প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান। এখনো বইটির শিরোনাম ঠিক হয়নি। আসন্ন কোরবানির ঈদের পরেই এটি প্রকাশ করার পরিকল্পনা হচ্ছে। বইটির গ্রন্থনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন ছটকু আহমেদ। ফেরদৌস আহমেদ, প্রিয়াঙ্কা, শ্রীলেখা মিত্র, নচিকেতাসহ সিনেমার প্রায় সব কলাকুশলীর স্মৃতিকথা উঠে আসবে বইটিতে। নির্মাতা বাসুদেব চ্যাটার্জির পরিবারের পক্ষ থেকে লিখেছেন তাঁর মেয়ে রুপালী গুহ। রিলিজের সময় সিনেমাটি নিয়ে যাঁরা লেখালেখি করেছেন, তাঁরাও স্মৃতিচারণা করবেন। দুই বাংলার বেশ কয়েকজন তারকাও লিখেছেন হঠাৎ বৃষ্টি নিয়ে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ঋতুপর্ণা, পূর্ণিমা, শামীম আরা নিপা, শিবলী মোহাম্মদ প্রমুখ।

হঠাৎ বৃষ্টি সিনেমায় অজিত চরিত্রে অভিনয় করা ফেরদৌস জানিয়েছেন, বই প্রকাশের পাশাপাশি সিনেমার কলাকুশলীদের নিয়ে একটি পুনর্মিলনীর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা হচ্ছে নতুন করে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার।

সিনেমার কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ বৃষ্টি আমার জীবনের অনবদ্য একটি কাজ। এ সিনেমাটি না হলে হয়তো আমিই হতাম না। হঠাৎ বৃষ্টি আমার জন্য আশীর্বাদ।’

শুটিংয়ের স্মৃতি জানিয়ে এ অভিনেতা বলেন, ‘প্রথম দিন আমার শট ছিল ট্যাক্সিতে করে নায়িকাকে নিয়ে রেলস্টেশনে যাব। বৃষ্টির মধ্যে ট্যাক্সিতে শুটিং হবে রাস্তায়। আমরা প্রস্তুত হয়ে বসে রইলাম। জুন-জুলাইয়ে শুটিং হয়েছিল। বিকেলে প্রচণ্ড বৃষ্টি হলো। আমরা সবাই প্রস্তুত। কিন্তু বাসুদা জানালেন, বৃষ্টি শেষ হলে শুটিং করবেন। আমরা তো অবাক। সকাল থেকে সবাইকে বৃষ্টির জন্য বসিয়ে রেখে এখন বলছেন বৃষ্টি শেষ হলে শুটিং! বৃষ্টি শেষে রেইন মেশিন দিয়ে বৃষ্টির ব্যবস্থা করে শুটিং করলাম আমরা। বাসুদাকে জিজ্ঞেস করলাম, এমনটা কেন করা হলো? তিনি বললেন, বৃষ্টির মধ্যে ঠিকমতো শুটিং করা সম্ভব না। বৃষ্টি হওয়ায় আশপাশের সব রাস্তা, বাড়িঘর ভিজে গেছে। এখন রেইন মেশিন দিয়ে শুটিং করলেও মনে হবে প্রাকৃতিক বৃষ্টিতে শুট হয়েছে। বাসুদার কাছ থেকেই শিখেছি কীভাবে এক্সপ্রেশন দিতে হয়, সংলাপ বলতে হয়। তিনি হাতে ধরে আমাকে অভিনয় শিখিয়েছেন।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

six + 10 =