হাতি ও একটি পরিবারের গল্প

অভিনেতা নিলয় আলমগীরের পশুপ্রেমের কথা তাঁর কাছের মানুষ কমবেশি সবাই জানেন। মাঝেমধ্যেই তিনি পথপশুদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন। কয়েক দিন আগেও সেন্ট মার্টিনের কুকুরগুলোর জন্য খাবার সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছিলেন নিলয়। কারণ ওই সময়টায় দ্বীপটিতে পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ ছিল। এবার নাটকেও দেখা মিলবে নিলয়ের পশুপ্রেমের গল্প। একটি হাতিকে নিয়ে শুটিং করলেন নিলয়। ‘নিহারকলি’ নামের নাটকটিতে তাঁর সঙ্গে বাবা চরিত্রে ছিলেন লুৎফর রহমান জর্জ, নিলয়ের স্ত্রীর চরিত্রে জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি।

হাতি নিয়ে তৈরি অনেক সিনেমাই জনপ্রিয় হয়েছে। সেই সব সিনেমা দেখে নিলয়েরও ইচ্ছে ছিল হাতি নিয়ে কাজ করার। সেই ইচ্ছেকে আরও বাড়িয়ে দেয় কয়েক দিন আগের একটি ঘটনা। কিছুদিন আগে একটি হাতি নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। পরে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় হাতিটি উদ্ধার করে। ঘটনাটি নিলয়ের মনে দাগ কাটে। সেই ঘটনার আদলেই তৈরি হয়েছে নিহারকলি। নাটকটি রচনা করেছেন সেজান নূর, নির্দেশনা দিয়েছেন ফজলুল হক।

এর আগে ফজলুল হকের নির্দেশনায় ‘ছেলেটি সত্যি এসেছিলো’, ‘তোমাকে চাই’, ‘এক টিকেটে দুটি ছবি’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন নিলয়। এটা ফজলুল হকের সঙ্গে তাঁর চতুর্থ নাটক। ফজলুল হক নির্মিত পাঁচটি ধারাবাহিকসহ প্রায় শতাধিক নাটক প্রচারিত হয়েছে। তবে এই নাটকটি ছিল তাঁর জন্য ভীষণ চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ। শুটিং হয়েছে পুবাইলে।

নাটকটি প্রসঙ্গে নিলয় আলমগীর বলেন, ‘হাতি নিয়ে কাজ করা আমার যেমন অনেক দিনের স্বপ্ন, পরিচালকেরও তা-ই। হাতিকে মেইনটেইন করা, আমাদের আবেগের সঙ্গে তার আবেগ রিলেট করে কাজ করা বেশ কঠিন। কিছুদিন আগে একটি হাতি নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। পরে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে হতিটি উদ্ধার করা হয়। সেই ঘটনার আদলেই নাটকের গল্প। আমি মাহুতের (যিনি হস্তীচালক বা প্রশিক্ষক বা রক্ষক) চরিত্রে অভিনয় করেছি। হাতির বয়স যখন কম তখন তাকে দিয়ে নানাভাবে অর্থ আয় করে একটি পরিবার চলে, হাতিটিরও খাবারের ব্যবস্থা হয়। কিন্তু যখন সেই হাতির বয়স হয়ে যায়, তখন তাকে দিয়ে অর্থ আয়ের সুযোগ কমে যায়। পরিবারটি অর্থের সংকটে পড়ে, হাতিটিরও খাবারের জোগান কমে যায়। ফলে পরিবারটি বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। বয়স্ক হাতিটি পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। মূলত আমরা হাতির কষ্টটাকে দেখানোর চেষ্টা করেছি। এটা আমাদের ড্রিম প্রজেক্ট, তাই নানা প্রতিবন্ধকতা আর কষ্টের মাঝেও আন্তরিকতা নিয়ে কাজটি করেছি।’

নির্দেশক ফজলুল হক বলেন, ‘নিলয় ভাই, জর্জ ভাই, হিমিসহ প্রোডাকশনের সবাই খুব পরিশ্রম করেছেন। হাতির সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কয়েকটি দৃশ্যে আবেগেই কেঁদে ফেলেছেন। আমি ভীষণ আশাবাদী নাটকটি নিয়ে।’

আগামী ঈদে নাটকটি বাংলাভিশনে প্রচার হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × 3 =