হাসির জাদুকর রাজু শ্রীবাস্তবের জীবনাবসান

হাসির জাদুকর তিনি। স্টেজে এসে দাঁড়ালেই দর্শকদের মুখে হাসি ফুটে উঠত। কিন্তু বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) অনুরাগীদের কাঁদিয়ে চলে গেলেন রাজু শ্রীবাস্তব । ৫৮ বছর বয়সে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পী। গত আগস্ট মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন রাজু। দীর্ঘদিন ধরে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। তবে শেষমেশ প্রাণ রক্ষা হল না হাসির জাদুকরের।

১৯৬৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর কানপুরে জন্ম হয় রাজু শ্রীবাস্তবের। বাবা রমেশচন্দ্র শ্রীবাস্তব ছিলেন কানপুরের প্রখ্যাত কবি। ছেলের নাম তিনি রেখেছিলেন সত্যপ্রকাশ শ্রীবাস্তব। কিন্তু রাজু নামেই সকলে ডাকতেন। ছোটবেলা থেকেই চেনা মানুষজনের নকল করতে পারতেন। যে কোনও উপায়ে কাউকে হাসিয়ে দিতে পারতেন। কমেডিয়ান হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন রাজু। তার কৌতুক শিল্পের বেশ কদর ছিল কানপুরে। অনেকেই কারণে-অকারণে ডেকে নিতেন। কানপুরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন রাজু। কিন্তু তার লক্ষ্য ছিল বলিউড।

বলিউডের টানেই মুম্বইয়ে পাড়ি দেন রাজু। আটের দশকের শুরুতে আরব সাগরের তীরে পৌঁছান রাজু। সঙ্গে সঙ্গেই সিনেমায় সুযোগ পাননি। ১৯৮৮ সালে ‘তেজাব’ সিনেমায় ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ সিনেমাতেও ছিলেন। তারপর থেকে একাধিক সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন রাজু। তবে তার কেরামতি ছিল স্টেজে। ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ’ শোয়ের রানার-আপ ছিলেন রাজু। কিন্তু তার হাস্যরসের খ্যাতি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ-চ্যাম্পিয়নস’ শোয়ে ‘দ্য কিং অফ কমেডি’র খেতাব পেয়েছিল। তার ‘গজোদর ভাইয়া’ চরিত্র অত্যন্ত জনপ্রিয়।

সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজু। প্রথমে সমাজবাদী পার্টি তাকে ভোটে লড়ার টিকিট দিয়েছিল। কিন্তু তা ফেরত দিয়ে দেন রাজু। স্থানীয় নেতারা সাহায্য করছেন না বলে অভিযোগ ছিল কমেডিয়ানের। পরবর্তীকালে বিজেপিতে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানের সঙ্গে ছিলেন তিনি।

একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের বিশিষ্ট নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লিতে গিয়েছিলেন রাজু। সকালে ঘুম থেকে উঠে হোটেলেরই জিমে যান। এক্সারসাইজ করছিলেন। হঠাৎই বুকে ব্যথা শুরু হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রাজু শ্রীবাস্তব। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। চিকিৎসকদের কথায়, জিম করার সময়ই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন রাজু। অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পী।

সংবাদ প্রতিদিন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

two × 3 =