সালেক সুফী: আজ থেকে ঠিক ৫১ বছর আগে এমনি এক রোদেলা দিনে পাকিস্তান সেনাবহিনীর একটি ইউনিট ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ছুটে চলেছিল ওই সময়ে গাজীপুরে অবস্থানরত দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে নিরস্ত্র করতে। গোটা পূর্বপাকিস্তান তখন বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিরোধের প্রস্তুতিতে টগবগিয়ে জ্বলছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে গাজীপুর চৌরাস্তার মোড়ে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রথম প্রতিরোধ করলো কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র জনতা। মারাত্মক মারণাস্ত্র সজ্জিত পাকিস্তান বাহিনী পাখির মতো গুলি করে নির্মম হত্যাকাণ্ড চালালো। রক্ত নদীতে ভেসেছিল গাজীপুর চৌরাস্তার মোড়। ঠিক যেখানে একটি মনুমেন্ট করা হয়েছে। খবর পেয়ে তৎকালীন মেজর সফিউল্লাহ (পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সেনাপ্রধান ) ইউনিট নিয়ে বিদ্রোহ করলেন।শুরু হলো বাংলাদেশের সশস্ত্র প্রতিরোধ, আজ ৫১ বছর পর শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করছি সেই দিনের সেই বীর শহীদদের। মুহূর্তেই সারা দেশে খবর ছড়িয়ে পড়লো। কলকাতার আকাশবাণী বেতার কেন্দ্র, বিবিসি বাংলা’র সংবাদে ওই সময় খুলনায় অবস্থান করে যুদ্ধ প্রস্তুতি নেওয়ার সময় শুনেছিলাম গাজীপুর বীরদের প্রতিরোধের কথা।
অনেকে যারা ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের সাংকেতিক নির্দেশ নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করেন তাদের কাছে প্রশ্ন, তাহলে কি কারণে নিরীহ বাংলাদেশিরা হিংস্র সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল প্রতিরক্ষা দিতে। যতটুক সময় সেনাবাহিনীকে আটকে রাখা হয়েছিল সেই সময়েই ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সুযোগ পেয়েছিলো তড়িঘড়ি করে যুদ্ধ প্রস্তুতি নেওয়ার। এরপর থেকে আর সন্দেহ রইলো না যুদ্ধ করেই জয় করতে হবে স্বাধীনতা।
সুযোগ হয়েছিল ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ দিনটি উপলক্ষে বাংলার বাণী পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর বাণী পড়ার।বঙ্গবন্ধু শহীদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিলেন।বাংলার মানুষের যুদ্ধ নেশা জাগিয়ে দিয়েছিলো সেদিনের সেই ঘটনা।মনে আছে সেদিন খুলনা জিলা স্কুল মাঠে আমাদের সঙ্গে সেনা প্রশিক্ষণে কারোনেশন স্কুলের কিশোরী মেয়েরাও গ্রেনেড ছোড়ার প্রশিক্ষণ নিয়েছিল।হাদিস পার্ক ছাত্র গণজমায়েতে আমি বঙ্গুবন্ধুর ভাষণের একটি অংশ শুনিয়েছিলাম।আমার সাথে ছিলেন নজরুল ভাই, বালু ভাই, হাসিনা বানু, সিরি আপা।