২০২৪ সালের নতুন আবিষ্কার

বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা নতুন নতুন আবিষ্কার হয়েছে ২০২৪ সালজুড়ে। গত বছরের সেরা আবিষ্কারগুলো সম্পর্কে জানাচ্ছেন শিশির আহমেদ

‘পাই’-এর মান বের করার নতুন কৌশল

বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাত থেকে পাইয়ের মান বের করা হয়। তবে পাইকে কখনোই গণনা করা যায় না। প্রাচীন ব্যাবিলন সভ্যতার গণিতবিদরা প্রায় চার হাজার বছর ধরে পাই ব্যবহার করেছিলেন। তবে তখনও পাই গণিতশাস্ত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ১৯০৬ সালে ব্রিটিশ গণিতবিদ উইলিয়াম জোনস পাইকে গণিতশাস্ত্রে অন্তর্ভুক্ত করেন। তবে এই অমূলদ সংখ্যা গণনা করা কখনো সম্ভব হয়নি। তবে সম্প্রতি পদার্থবিদরা পাই গণনা করার জন্য সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতি ‘স্ট্রিং তত্ত্ব’ আবিষ্কার করেছেন, যা  অ্যানিমেটেড ডায়াগ্রামের মাধ্যমে দেখা যায়। পাইয়ের ফলাফল বের করার জন্য একটি সমবাহু ত্রিভুজ আকৃতির তারের লাইন বরাবর বৃত্ত তৈরি করা হয়, যা ত্রিভুজের বাহু বৃত্তের ব্যাসার্ধের সঙ্গে মিলে যায়। বৃত্তটি যখন লাইনটির চারপাশে তার ভ্রমণ সম্পন্ন করে, একটি রিউলক্স ত্রিভুজ গঠন করে, ঠিক তখনি পাইয়ের মান নির্ণয় করা সম্ভব হয়।

‘জিন’ সম্পাদনা নির্ভর চিকিৎসা

যারা বিজ্ঞান সম্পর্কে টুকটাক ধারণা রাখেন, তারা সকলেই জানেন পৃথিবীতে সকল জীবের মধ্যে জিন থাকে। যেকোনো জীবনের নকশায়  ‘ডিএনএ’ থাকে এবং তার একককে বলা হয় ‘জিন’। জিনের মাধ্যমে জানা যায় দেহের প্রোটিনগুলো কেমন হবে। এরই সূত্র ধরে ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বায়োকেমিস্ট জেনিফার রান এবং ফরাসি মাইক্রোবায়োলজিস্ট এমমানুয়েল চার্পেন্টিক যেকোনো রোগ দ্রুত সারিয়ে তোলার জন্য ‘ক্রিসপার’ প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন, যা মূলত একটি কাঁচি। এই প্রযুক্তিতে অসুস্থ রোগীর ক্ষতিগ্রস্ত ‘ডিএনএ’র নির্দিষ্ট জায়গায় কেটে, জিন বদলে দিয়ে আবার নতুন জিন জুড়ে দেওয়া হলেই সেরে যায় রোগ! প্রথম দিকে এই প্রযুক্তিটি অনুমোদন না দিলেও, ২০২৩ সালের শেষ দিকে এই প্রযুক্তিটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়। যার ফলে ২০২৪ সালে রোগীর উপর এই প্রযুক্তি পরীক্ষা করা হয়। সিকল নামের এক ব্যক্তির বংশগত রোগ অ্যানিমিয়া ছিল। ক্রিসপার প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার জিন পরিবর্তন করার কিছুদিন পর তার রোগটি সেরে যায়। অনেক রোগীর মতে, এটি জীবন বদলে দেওয়ার মতো প্রযুক্তি। তবে চ্যালেঞ্জ হলো, কম খরচে কিভাবে এই চিকিৎসা সবাই যেন নিতে পারে, তা নিশ্চিত করা।

চ্যাটজিপিটি ৪.০

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় যেসব প্রযুক্তি রয়েছে তার মধ্যে চ্যাটজিপিটি অন্যতম। ২০২২ সালের নভেম্বরে বাজারে আসে চ্যাটজিপিটি। তারপরের ইতিহাস সবার জানা। তবে ক্রমাগত এআই প্রযুক্তি উন্নতির লক্ষ্যে ওপেন-এআই চ্যাটজিপিটি ৪.০ সংস্করণ আনে। আগের সংস্করণ কেবল টেক্সট বা লেখার মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলেও নতুন সংস্করণে টেক্সটের পাশাপাশি ছবি তৈরি এবং সরাসরি করা বলা বলার ফিচার যুক্ত করা হয়। তবে এসব সুবিধা পেতে অর্থ খরচ করতে হবে।

অজানা সংখ্যার মান নির্ণয়

পৃথিবীতে অনেক কিছুই গণনা করা যায়। তবে কিছু জিনিস থাকে যা যতই চেষ্টা করা হোক গণনা করা সম্ভব হয় না। এমন অগণনাযোগ্য বস্তুগুলোকে গণিতবিদরা ‘বিজি বিভার ফাংশন’ বলে থাকেন। ‘বিভার’ এক ধরনের ধারালো দাঁতওয়ালা লোমশ কাল্পনিক উভচর প্রাণীর নাম। যেসব বস্তুগুলো গণিতবিদরা গণনা করতে পারেন না তাদের কাল্পনিক ভাবে গণনা করে থাকেন। ফলে এ নামকরণ করা হয়। ১৯৬২ সালে হাঙ্গেরিয়ান গণিতবিদ তাইবর রাদো বিজি বিভার ফাংশন প্রতিষ্ঠা করেন। সম্প্রতি বিজি বিভার ফাংশন ২০২৪-এ ‘বিবি (৫)’ নামের এক অজানা সংখ্যার মান নির্ণয় করা হয়। যার মান দাঁড়ায় ৪৭,১৭৬,৮৭০। গণিতবিদরা মনে করেন, এই আবিষ্কারের ফলে গণিতশাস্ত্রে অজানা সংখ্যাগুলোর সমাধান সহজ হবে।

নতুন প্রযুক্তি ‘হিট পাম্প’

বর্তমানে পৃথিবীর অবস্থা বেশ নাজুক। ক্রমাগত বাড়তে থাকা জনসংখ্যার ব্যাপক চাহিদা মেটানোর জন্য তৈরি করতে হচ্ছে কলকারখানা এবং পোড়াতে হচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদ, যা পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি করছে। ইউরোপ শীতপ্রধান অঞ্চল, যার কারণে ঘরবাড়ি গরম রাখা ও রান্নার জন্য তাদের প্রচুর পরিমাণের জীবাশ্ম জ্বালানির প্রয়োজন হয়। যা পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। ফলে বিজ্ঞানীরা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ঘরবাড়ি গরম করার জন্য নতুন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছেন যার নাম ‘হিট পাম্প’। এই প্রযুক্তিটি এয়ারকন্ডিশনারের মতোই। তবে ঠান্ডা বাতাসের জায়গায় গরম বাতাস দিবে। সম্প্রতি এক জরিপ থেকে জানা যায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপে ২০২৩ সালে এই হিট পাম্পের ব্যবহার বেড়েছে ৪০%। গোটা বিশ্বে এর ব্যবহার বেড়েছে ১১%। বিজ্ঞানীরা জানান, ২০৩০ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তাহলে প্রায় ৫০ কোটি টন গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমবে।

শক্তির নতুন উৎস ‘ভূতাপ শক্তি’

পৃথিবীতে অফুরন্ত জীবাশ্ম জ্বালানি নেই, যা আছে তা বেশ সীমিত। একবার ব্যবহারের পর তা আমরা পুনরায় ব্যবহার করতে পারি না। তবে এই সমস্যার সমাধান করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ‘ফার্ভো এনার্জি’। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি ‘ভূতাপ শক্তি’ নিয়ে গবেষণা করে আসছে। অবশেষে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে তারা এই গবেষণায় সফল হয়। তবে প্রশ্ন আসতে পারে ভূতাপ শক্তি কী? ভূতাপ শক্তি বলতে মাটির নিচে থাকা শক্তিকে বোঝায়। এই পদ্ধতিতে ভূগর্ভের উত্তপ্ত শিলার মুখ দিয়ে একটি বড় এবং একটি ছোট ব্যাসের সমকেন্দ্রিক নলকে মাটির ৩ হাজার মিটার গভীরে পাঠানো হয়। এরপর বড় নলের মুখ দিয়ে পানি সেই শিলায় ফেলা হয়। ফলে ভূগর্ভের প্রচণ্ড উত্তাপে সেই পানি উচ্চচাপে বাষ্পে পরিণত হয়ে ছোট নলের মাধ্যমে দ্রুত বেগে বাইরে বেরিয়ে আসে। এই বাষ্প চাপকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। অনেকেই মনে করেন এই প্রযুক্তির ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা কমবে। অন্যদিকে অনেকে মনে করেন, এ পদ্ধতিতে ভূকম্পনের ঝুঁকি আছে। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলবেই। তবে কিভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিবেশের ক্ষতি না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারি আমাদের সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।

ওষুধ কমাবে ওজন

ওজন বৃদ্ধি বর্তমানে একটি বড় সমস্যা। ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত নানা রোগ। যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ইত্যাদি। কিন্তু যদি এমন হয় ইচ্ছেমতো খাবার খাবো তবে মোটা হবো না। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমন একটি ঔষধ তৈরি করেছে ডেনিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি নভো নরডিস্ক, ঔষধটির নাম ‘উইগোভি’। ২০২১ সালে  ডেনমার্কের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এক্সিলেন্স ঔষধটিকে অনুমোদন দিয়েছে। সম্প্রতি ঔষধটি সাধারণ মানুষদের ওপর ব্যবহার করা হলে ব্যাপক সফলতা পায়। কোম্পানিটি জানায় ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বির অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে যাওয়া, ঘুমের সময় শ্বাসকষ্ট যাকে বলা হয় ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বা হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক কিংবা রক্তনালীর মতো অসুখের রোগীরাও ঔষধটি ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া এটি হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি এক পঞ্চমাংশ কমাতে সক্ষম। ঔষধটি পাকস্থলীতে যেসব হরমোন নিঃসরণ করে, সেরকম হরমোন নিঃসরণ করে। ফলে যিনি ঔষধটি খান তার পেট ভরা থাকে। তবে এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। যেমন বমি ভাব, ডায়েরিয়া, দুর্বল লাগা ইত্যাদি। তাই দীর্ঘদিন এই ঔষধ ব্যবহারের জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।

অ্যাপল ভিশন প্রো

দীর্ঘদিন ধরে ভার্চুয়াল রিয়েটিলি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। বেশ কয়েকবার ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জন্য হেডসেট-কম্পিউটার কাম গ্লাস বা চশমা বানানোর চেষ্টা করা হয়। ‘গুগল গ্লাস’, মাইক্রোসফট ‘হলোলেন্স’ থেকে শুরু করে মেটার ‘কোয়েস্ট’; কোনোটিই আশানুরূপ সফলতা পায়নি। তবে চমক দেখায় ‘অ্যাপল ভিজন প্রো’। ২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ‘ভিজন প্রো’ বাজারে আসলে তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। কোম্পানিটির পরিচালক জানান, বাজারজাতকরণের আগে ‘অ্যাপল ভিশন প্রো’র প্রায় ২ লাখ ইউনিট প্রি-অর্ডার করা হয়। ‘ভিশন প্রো’ ব্যবহারকারীদের থ্রি-ডি ডিজিটাল দুনিয়ায় নিয়ে যাবে  যেটি স্মার্টফোনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। এছাড়াও অ্যাপল জানায় ‘ভিশন প্রো’তে ছয়শ নতুন অ্যাপ এবং গেম রয়েছে। এছাড়াও অগমেন্টেড রিয়েলিটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাদের চোখ, হাত এবং কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে ডিভাইসের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারবে। অ্যাপল ভিশন প্রোর ডিসপ্লে ৪ কে রেজোলিউশন দিতে সক্ষম। যার ফলে ব্যবহারকারীরা ১০০ ফুটের সমান দূরত্ব থেকে কন্টেন্ট দেখতে পারেন। প্রযুক্তিবিদরা মনে করেন এই প্রযুক্তি ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি করবে।

নতুন সুপার কম্পিউটার

বর্তমানে মানুষ সুপার কম্পিউটারের গণ্ডি পেরিয়ে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের দিকে মনোনিবেশ করছে। তবে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের পুরো প্রযুক্তি আমাদের নাগালে না আসার কারণে সুপার কম্পিউটারই ভরসা। তবে উন্নত মহাকাশ  গবেষণা ও জটিল রহস্য ভেদ করার জন্য বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত নতুন সুপার কম্পিউটার তৈরিতে কাজ করছেন। এর মধ্যে একটি হলো ‘এল ক্যাপিটান’। যুক্তরাষ্ট্রের ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানি ‘এইচপি’ এই কম্পিউটারটি তৈরি করেছে। এই কম্পিউটার দিয়ে মিল্কিওয়েতে গ্যাসের প্রবাহের মতো জটিল বিষয়গুলোর মডেল বানানো হচ্ছে।

মহাকাশে আবিষ্কার করা নতুন গ্রহ

সম্প্রতি নাসার বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর কাছাকাছি নতুন বাসযোগ্য গ্রহ আবিষ্কার করেছেন, যা পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ দূরে একটি তারাকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করছে। ২০২৪ সালের ২৩ মে দ্য অ্যাস্ট্রোফিলিক্যাল জার্নাল লেটারস এবং র?য়েল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি জানায়, গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে ছোট তবে শুক্রের চেয়ে বড়। গ্রহটির নাম দেওয়া হয় ‘গ্লিস১২বি’। বিজ্ঞানীরা জানান, আবিষ্কার করা গ্রহটি মীন রাশিতে অবস্থিত। এটি একটি শীতল লাল বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। এটি সূর্যের আকারের প্রায় ২৭ শতাংশ এবং তাপমাত্রার ৬০ শতাংশ। তারা আরও জানান নক্ষত্রটি সূর্যের চেয়ে আকারে অনেক ছোট হাওয়ায় ‘গ্লিস১২বি’ তাত্ত্বিকভাবে বাসযোগ্য অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। বিজ্ঞানী ল্যারিসা প্যালেথর্প বলেন, আমরা যেসব এক্সপ্ল্যানেট খুঁজে পেয়েছি। সেগুলোর মধ্যে ‘গ্লিস১২বি’ হলো নিকটতম। তাই এটি নিঃসন্দেহে বড় আবিষ্কার।

গুগলের নতুন চিপ

কোয়ান্টাম কম্পিউন্টিয়ের জন্য নতুন চিপ তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান গুগল যার নাম ‘উইলো’। গুগল জানায়, এই চিপের মাধ্যমে সুপার কম্পিউটারের যে কাজ করতে ১০ সেপ্টিলিয়ন বছরের প্রয়োজন হয় সেই কাজ এই চিপ ৫ মিনিটে করতে পারবে। ১০ সেপ্টিলিয়ন বছর বলতে ১০-এর পর ২৫টি শূন্য দিলে যত বছর হয় তাকে বোঝায়। তবে গুগল এখনও এই চিপ বা চিপ তৈরির প্রযুক্তি সম্পর্কে কিছুই খোলাসা করে জানায়নি।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: আবিষ্কার

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

2 × one =