২০৩০ সালের জন্য কাব‍র্ন দুষণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা ৭ গুণ বাড়াতে হবে: জলবায়ু মন্ত্রী

আফরোজা আখতার পারভীন, দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোকে তাদের ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছে।

তিনি বলেন, প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি লক্ষ্যমাত্রা বজায় রাখতে ২০৩০ সালের জন্য নির্গমন হ্রাসের প্রতিশ্রুতির উচ্চাকাঙক্ষা সাত গুণ বেশি হওয়া দরকার।

মন্ত্রী আরো বলেন, সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ), স্বল্পোন্নত দেশের তহবিল (এলডিসিএফ), অভিযোজন তহবিল (এএফ) এবং জিইএফ ট্রাস্ট তহবিলকে পর্যাপ্ত সংস্থান দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে এবং সেই তহবিলের প্রবেশাধিকার দ্রুত এবং সহজ করতে হবে।

শাহাব উদ্দিন আজ রোববার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে কপ ২৮ -এ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অংশ গ্রহনের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।

অন্যদিকে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে প্রধানমন্ত্রী জলবঅয়ু বিয়ষক বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ধরে রাখা সম্ভব না হলে এখনকার তুলনায় বাংলাদেশের অভিযোজন ব্যয়ের পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যাবে। বর্তমানে এই খাতে বাংলাদেশের বার্ষিক দরকার ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি বলেন জলবায়ু দরকষাকাষিতে সবেচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে ঐক্য ও বিশ্বাসের অভাব। সময় দ্রুত পেরিয়ে যাচ্ছে। ফসিল ফুয়েল ব্যবহার বন্ধ করতে না পারলে বিশ্ব আরো বড় ধরনের সংকটে পড়বে।

পরিবেশমন্ত্রী আরো বলেন, প্যারিস চুক্তির সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অভিযোজন ও প্রশমন এবং অনুদান-ভিত্তিক অর্থায়নের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ ৫০: ৫০ বরাদ্দের পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ়। আমরা নতুন এবং অতিরিক্ত সরকারী অর্থায়নে গুরুত্ব দেব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে ন্যাপ বাস্তবায়নের জন্য দ্বিগুণ অভিযোজন তহবিল এবং সমর্থনের উপর জোর দেয়, যা ৪৯টি দেশের অগ্রাধিকার যারা ইতিমধ্যে তাদের এনএপি প্রস্তুত করে জমা দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, তারা জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা অর্জনের জন্য সময়সীমাবদ্ধ বাস্তবায়নযোগ্য লক্ষ্যগুলির ওপর জোর দিয়ে অভিযোজন সংক্রান্ত গ্লোবাল গোলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য উন্মুখ।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূরদর্শী নেতৃত্বে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকা-ে অটল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন, যার উদাহরণ “ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড” এবং “জিসিএ লোকাল অ্যাডাপ্টেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড” প্রাপ্তি।

শাহাব উদ্দিন সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে গৃহীত ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি ক্ষয়ক্ষতির তহবিলের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের জন্য কপ ২৮   প্রেসিডেন্সি এবং কিছু সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন,  উভয় প্রশমন কর্মসূচির অগ্রগতি, গ্লোবাল স্টক টেক (জিএসটি)’র অধীনে প্রশমন এবং ন্যায্য রূপান্তর কাজের প্রোগ্রাম উল্লেখযোগ্যভাবে অপর্যাপ্ত।

তিনি জরুরী ভিত্তিতে জলবায়ু অর্থের একটি সাধারণ সংজ্ঞা ঠিক করতে অর্থ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির (এসসিএফ) প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন,  জলবায়ু অর্থায়নের নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফাইড গোল (এনসিকিউজি)  আলোচনার জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ।

এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক এবং আবুধাবিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

17 + five =