২০৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণের দেশগুলোতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি তিনগুণ বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান

একশনএইড বাংলাদেশ; বাকু, আজারবাইজান, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪: সীমিত আর্থিক সম্পদ, প্রযুক্তিগত বাধা এবং দুর্বল নীতিগত কাঠামো সহ বিভিন্ন কারণে বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরে বৈশ্বিক উত্তরের দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে। এই অসমতা দূর করার জন্য, বৈশ্বিক উত্তরের দেশগুলো থেকে বিনিয়োগ সহায়তা, প্রযুক্তি হস্তান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নীতিগত সমর্থন প্রয়োজন। ২০৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণের দেশগুলোতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি তিনগুণ বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ন্যায্য, সবুজ এবং টেকসই পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে ধনী দেশগুলোকে এগিয়ে আসার কোনও বিকল্প নাই।

আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আজারবাইজানের বাকুতে চলমান জাতিসংঘের বার্ষিক জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে আয়োজিত ‘জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন ইন গ্লোবাল সাউথ: চ্যালেঞ্জেস ফর ট্রিপলিং রিনিয়েবল এনার্জি বাই ২০৩০’ শীর্ষক অধিবেশন থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। যৌথবাবে এই অধিবেশন আয়োজন করে একশনএইড বাংলাদেশ, জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (জেটনেট-বিডি), ক্লিন এবং সাউথ এশিয়া জাস্ট ট্রানজিশন অ্যালায়েন্স (এসএজেটিএ)।

অধিবেশনটি সঞ্চালন করেন একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন টিমের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ। তিনি দক্ষিণের দেশগুলোতে জ্বালানি খাতের অসমতার দৃশ্য তুলে ধরাসহ ন্যায্য, সবুজ ও টেকসই জ্বালানি রূপান্তরে পরামর্শ, সমাধান ও করণীয়গুলো তুলে ধরেন।

এই অধিবেশনে বৈশ্বিক দক্ষিণে জ্বালানি রূপান্তরের পথে বিদ্যমান সীমিত অর্থায়ন এবং প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতাগুলোসহ নানান প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বক্তারা ন্যায্য, সবুজ ও টেকসই জ্বালানি রূপান্তরের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং সবাইকে সমতার ভিত্তিতে সবুজ জ্বালানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আহ্বান জানানো হয়।

বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো কার্বন অফসেট। ক্যান রিপোর্ট অনুযায়ী, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বৃদ্ধি সার্বিক বৈষম্য কমাতে সহায়তা করে। বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলোতে টেকসই জ্বালানি রূপান্তরে বাধা এবং চ্যালেঞ্জসমূহ কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে জলবায়ু অর্থায়ন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তি বিনিময় সহ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

এসময় সাউথ এশিয়া জাস্ট ট্রানজিশন অ্যালায়েন্সের (এসএজেটিএ) সহ-সঞ্চালক এবং ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান হেমন্ত উইথানাজি শ্রীলঙ্কার চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বলেন, টেকসই জ্বালানি রূপান্তরে আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধির বিকল্প নাই। বৈশ্বিক দক্ষিণ ও উত্তরের ভারসাম্য নিশ্চিত করতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

গ্রোথওয়াচ ইন্ডিয়ার সমন্বয়ক এবং এনজিও ফোরাম অন এডিবির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য বিদ্যা দিঙ্কর ভারতের জ্বালানি রূপান্তরে জটিল দিকগুলোর ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ভারতের নীতিগুলো বিতর্কিত। আঞ্চলিক নেতৃত্বে থাকা সত্ত্বেও ভারত প্রায়ই জীবাশ্ম জ্বালানিকে সমর্থন করে।

জ্বালানি রূপান্তরে মানবাধিকার এবং ন্যায্যতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে নেপালের প্রকৃতি রিসোর্স সেন্টার (পিআরসি) এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর প্রবীণ মান সিং বলেন, “নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরে বৈশ্বিক উত্তরের দেশগুলি বৈশ্বিক দক্ষিণে পর্যাপ্ত অর্থায়নের মাধ্যমে ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে পারে।”

এসময় অধিবেশনে ক্লিন বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক হাসান মেহেদীসহ জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

one × two =