২৫ বছর পর আজ মঞ্চে খায়রুল আলম সবুজ

কৈশোরে তাঁর অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছিল মঞ্চে। দীর্ঘদিন মঞ্চনাটকে দাপিয়ে অভিনয় করেছেন খায়রুল আলম সবুজ। নির্দেশনাও দিয়েছেন। তবে গত দুই যুগ মঞ্চনাটকে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। ২৫ বছরের বিরতি কাটিয়ে আবার মঞ্চে উঠছেন খায়রুল আলম সবুজ।

আজ রাজধানীর শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘আনন্দ’ নাটকে চার্লস ব্যাবেজ চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। আনজীর লিটনের রচনায় নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন মনামী ইসলাম কনক।

অভিনেতা সবুজ বলেন, ‘২৫ বছর পর মঞ্চে উঠছি নাটক করতে। মঞ্চে অভিনয় ছাড়ার পর প্রথম দিকে ফিরতে মন না চাইলেও সাম্প্রতিক সময়ে ইচ্ছা করছিল এখানে ফিরতে। এর মধ্যেই নাটকটিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন আনজীর লিটন ও কনক। ওদের মনে হয়েছে, বৃদ্ধ বয়সের মানুষের চরিত্রটি আমার সঙ্গে মানানসই। আমারও মন টানছিল।’

নাটকের গল্প নিয়ে সবুজ বলেন, ‘এটি শিশুদের নাটক। নাটকের ব্যাপ্তিকাল কম হলেও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা আছে। কম্পিউটার আবিষ্কারক চার্লস ব্যাবেজকে নিয়ে তৈরি হয়েছে নাটকটি। তিনি কম্পিউটারের একটি অংশের নাম দেন মাউস অর্থাৎ ইঁদুর। তখন শিয়ালদের মন খারাপ হয়। তারা বলে, আমাদের জন্য কিছু করলেন না। সে সময় চার্লস ব্যাবেজ বলেন, তোমাদের জন্যও আছে ফক্স প্রো। নাটকটি দেখে বাচ্চারা খুব আনন্দিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।’

নিজের শহর বরিশালে মাত্র সাড়ে ১২ বছর বয়সে মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ। করাচি চলে যাওয়ার কারণে ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত আর মঞ্চে ওঠা হয়নি তাঁর। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু করেন নাট্যচর্চা।

টিএসসিতে প্রথম অভিনয় করেন নূরুল করিম নাসিম রচিত ‘সোনার হরিণ’ নাটকে। নাটকটির নির্দেশনাও দেন তিনি। ছিলেন ডাকসুর নাট্যচক্রের প্রথম সাধারণ সম্পাদক। সেখান থেকে বেরিয়ে যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে। পরে যোগ দেন নাট্যদল থিয়েটারে।

মঞ্চকে মিস করেছেন কি না, জানতে চাইলে খায়রুল আলম সবুজ বলেন, ‘মন খারাপ তো অবশ্যই হতো। তবে মঞ্চে না থাকলেও আমি তো অভিনয়ের সঙ্গেই ছিলাম। টেলিভিশন, রেডিও, সিনেমায় অভিনয় করছি নিয়মিত। নাটক অনুবাদ করছি। সব মিলিয়ে নাটক নিয়েই কিন্তু আছি। আমি আছি একেবারে নিজের মতো করে। এখন থেকে চেষ্টা করব মঞ্চে নিয়মিত হওয়ার। মঞ্চের জন্য কিছু নতুন নাটক লেখার কথা ভাবছি।’

এদিকে ১৩ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’। এতে বঙ্গবন্ধুর বাবার বৃদ্ধ বয়সের চরিত্রে অভিনয় করেছেন খায়রুল আলম সবুজ। সিনেমাটি নিয়ে তিনি বলেন, ‘খুব গোছানো একটি কাজ হয়েছে।

আমার অংশের শুটিং হয়েছে ভারতে। সেখানে শুটিং করতে গিয়ে মনে হয়েছে, তারা শিল্পকে খুব মূল্য দেয় ও শ্রদ্ধা করে। শ্যাম বেনেগালকে অনেক ভালো লেগেছে। অত্যন্ত নরম ও ক্রিয়েটিভ মানুষ। চুপচাপ থাকলেও তিনি জানেন, কাজটি কীভাবে আদায় করে নিতে হয়। এই বয়সেও নিজে উপস্থিত থেকে প্রতিটি শট নিয়েছেন। এই বিষয়টি খুব ভালো লেগেছে।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

9 − 4 =