১৯৯০ সালের পর আবারও সিরি ‘আ’ শিরোপা জিতেছে নাপোলি। শেষবার একক প্রচেষ্টায় তাদের চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। এবার তারা সেই দীর্ঘ খরা কাটিয়েছে কোচ লুসিয়ানো স্পালেত্তির অধীনে এবং দুই তারকা ভিক্টর ওসিমেন ও উইঙ্গার খিচা কাভারাস্কেইয়ার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে।
মাঠের নায়ক যদি হন ওসিমেন ও কাভারাস্কেইয়া, তাহলে মাঠের বাইরে নায়ক নিশ্চিতভাবেই স্পালেত্তি। ইতালিয়ান কোচই দলের পরিকল্পনার মূল কারিগর। তাঁর আগে অনেক বড় বড় কোচই নাপোলির দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু কেউই দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারেননি।ডাগআউটে ছিলেন রাফায়েল বেনিতেজ, মারিও সারির সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা বিচারে তর্কাতীতভাবেই সেরা কার্লো আনচেলত্তিও। ৩৩ বছরের অপেক্ষার অবসানের মধ্য দিয়ে নিজেও প্রথমবারের মতো কোচিং ক্যারিয়ারে কোনো লিগ শিরোপা জিতলেন।দলকে চ্যাম্পিয়ন করাতে পেরে উচ্ছ্বসিত স্পালেত্তি বলেছেন, ‘নেপোলিটানদের হাসতে ও আনন্দিত দেখা আমার জন্য সবচেয়ে বড় আবেগের। হাসতে তারাই পারে যারা সুখকে অতিক্রম করতে পারে।’
নাপোলির শেষবারের জয়ের নায়ক ম্যারাডোনার তুলনায় তেমন কিছু না হলেও নেপলসবাসীর মধ্যমণি এখন ওসিমেন। নাইজেরিয়ায় খবরের কাগজ ফেরি করা ছেলেটির কল্যাণেই দীর্ঘ ৩৩ বছরের অপেক্ষার অবসান হয়েছে ক্লাবটির। ২৪ বছর বয়সী স্ট্রাইকার আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছেন। অথচ মৌসুম শুরুর আগেও তেমন পরিচিত ছিলেন না তিনি। নাপোলিকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে ২২ গোল করে লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনি। অ্যাসিস্ট করেছেন পাঁচটি। গত পরশুও উদিনেসের বিপক্ষে সমতাসূচক গোল করেন তিনি। দলকে চ্যাম্পিয়ন করানোর পর বলেছেন, ‘পুরো নেপোলিটানদের জন্য উচ্ছ্বসিত। এখন আমাদের ভক্তদের সামনে শিরোপা উদ্যাপন করার অপেক্ষায় আছি। জীবনের দুর্দান্ত মুহূর্তটি উপভোগ করতে যাচ্ছি।’
নাপোলিকে চ্যাম্পিয়ন করার নায়ক যদি হন ওসিমেন, তাহলে পার্শ্বনায়ক নিশ্চিতভাবেই কাভারাস্কেইয়া। জর্জিয়ার এই উদীয়মান উইঙ্গারকে বলা হয় নতুন ম্যারাডোনা। অনেকে ছিয়াশির মহানায়কের সঙ্গে নাম মিলিয়ে তাঁকে ডাকেন ‘কাভারডোনা’। এ মৌসুমে ক্লাবে যোগ দিয়ে দুর্দান্ত জুটি গড়েছেন ওসিমেনের সঙ্গে। কিন্তু খেলা দেখে বিন্দুমাত্র বোঝার উপায় নেই, নেপলসের নতুন বাসিন্দা তিনি। লিগে ১২ গোলের সঙ্গে সমান ১২ অ্যাসিস্টও করেছেন। ওসিমেন যেমন লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা, তেমনি অ্যাসিস্টের শীর্ষে কাভারাস্কেইয়া। তাঁর এমন পারফরম্যান্স ছাড়া নায়ক হতে পারতেন না ওসিমেন। অধিকাংশ গোলের উৎসদাতাই যে তাঁর এই সতীর্থ। কাভারাস্কেইয়া ছাড়া হয়তো কখনোই নাপোলিরও চ্যাম্পিয়ন হওয়া হতো না।