৫ অগাস্ট ‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবসে’ সাধারণ ছুটি

জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের দিন ৫ অগাস্টকে সাধারণ ছুটিসহ ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থান দিবস’ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। খবর বিডিনিউজডটকম

তবে এর আগে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরুর দিন ৮ অগাস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা করা হলেও, এক পরিপত্রের মাধ্যমে বুধবার তা বাতিল করা হয়।

এছাড়া জুলাইয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যুর দিন ১৬ জুলাইকে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।

বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আলাদা পরিপত্রে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। প্রতিবছর যথাযথ মর্যাদায় দিবসগুলো পালন করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে সেখানে।

এর মধ্যে ৫ অগাস্টকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত এবং ১৬ জুলাইকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

এক পরিপত্রে বলা হয়, সম্প্রতি ঘোষিত ৮ অগাস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালন/উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

এর আগে দিনটিকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা করে পরিপত্র জারি করা হয়। পরে সমালোচনার মুখে দিবসটি পালন করা থেকে সরে আসে সরকার। বুধবার আগের পরিপত্র বাতিল করে নতুন পরিপত্র জারি করা হল।

আর এর আগে ১৬ জুলাইকে ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল সরকার, সেটিরও পরিবর্তন এল।

২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্রদের আন্দোলন শেষমেশ সরকার উৎখাতের আন্দোলনে পরিণত হয়।

৩৬ দিনের সেই আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যান হন সাড়ে ১৫ বছর ধরে দেশ চালিয়ে আসা শেখ হাসিনা।

শুরুতে এই আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরে তা দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

সরকারের তরফে জবাব ছিল- গুলি, টিয়ারশেল আর লাঠি; এককথায় কেবলই বলপ্রয়োগ। প্রথমে ফেইসবুক, পরে ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চায় সরকার। তাতে হিতে বিপরীত হয়।

১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তাকেই এ আন্দোলনের ‘প্রথম শহীদ’ হিসেবে সম্মান জানানো হয়।

আন্দোলনে রক্তপাত শুরু হওয়ার ২০ দিনের মধ্যেই লাশ আর রক্তের বোঝা মাথায় নিয়ে পতন হয় দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের। পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা আর তার অমাত্যরা।

জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের যে তালিকা সরকার গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে, সেখানে শহীদের সংখ্যা ৮৩৪।

তবে অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘ যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে ১ জুলাই থেকে ৫ অগাস্টের মধ্যে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

7 − six =