ত্বক দেখেই বোঝা যায় কেমন আছেন!

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ত্বক দেখেই মনের কথা বোঝা যায়। চোখের চারপাশে কালচে এবং ফোলাভাব সৃষ্টি হয়, চোখ মলিন দেখায়। রাগ বা ক্রোধ ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে। মুখের অভিব্যাক্তি দেখে মনের কথা বুঝে ফেলার ক্ষমতা অনেকেরই আছে। মনে কষ্ট হলে ত্বকের চেহারা একরকম হয় আর আনন্দিত হলে ত্বকের হাল হয় বেহাল। মানে অনুভূতিতে আঘাত পেলে ত্বকের উপরেও তার প্রভাব পড়ে।

মুখের অভিব্যাক্তি দেখে মনের কথা বুঝে ফেলার ক্ষমতা অনেকেরই আছে। কিন্তু ত্বক দেখে মনের কথা বোঝার ক্ষমতা কতজনের আছে? দীর্ঘদিন ধরে মনে কষ্ট, মাথায় দুশ্চিন্তা থাকলে, ত্বকে তাড়াতাড়ি বার্ধক্যের ছাপ পড়ে, ত্বকের জেল্লা কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের কথায়, মনের প্রভাব পড়ে মুখে আর মানসিক চাপের বিভিন্ন উপসর্গ ফুটে ওঠে ত্বকে।

মানসিক চাপ

মানসিক চাপ এবং ত্বকের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে বহু বছর ধরেই গবেষণা চলছে। এবং মনের অবস্থার সঙ্গে ত্বকের যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে তা বার বার প্রমাণিত হয়েছে। মুখের ত্বকে তাড়াতাড়ি বলিরেখা পড়তে, ত্বক কুচকে গেলে বা ত্বক কালো দাগ হলে অনেকেই পার্লারে যান বা কসমেটিক চিকিৎসার সাহায্য নেন। কিন্তু পরিচর্যার পরেও ত্বকের সাময়িক লাভ হলে বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয় না। তখন দেখা যায় যে মানসিক সমস্যার কারণেই ত্বকের মলিনতা দেখা দিচ্ছে। ত্বকের বলিরেখা, কোচকানো ভাব, কালচে রং এসবই মানসিক সমস্যার কারণ।

কর্টিসল হরমোন শরীরের অঙ্গ, ধমনী এব কোষের পুনর্গঠনকে বাধা দেয়। আর মানসিক চাপের ফলে এই কর্টিসল হরমোনের মাত্রা অত্যাধিক বেড়ে যায়। ফলে ত্বক নষ্ট হতে থাকে।

মানসিক চাপের কারণে অনেকেই অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে থাকেন। অস্বাস্থ্যকর খাবার, মাদক, অ্যালকোহল ইত্যাদি খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। জল পান কম করেন। এবং এর ফলে ত্বকের স্বাভাবিক জেল্লা কমতে থাকে। শরীরে জলের পরিমাণ কমতে থাকলেই ত্বক শুষ্ক হতে থাকে। ফলে বলিরেখা বা কোচকানো বৃদ্ধি পায়। ত্বকে ব্রণ, ফুসকুড়ি, কালচে দাগ ইত্যাদি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও মানসিক চাপের কারণে ত্বকের রক্তনালীতে হাইড্রোজেন এবং পুষ্টি সরবারহে বাধা সৃষ্টি হয়, ত্বকের কোষের জীবনচক্রে ব্যাঘাত ঘটায়। ফলে ত্বক নির্জীব হয়ে পড়ে।

অবসাদ

অবসাদ, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা মুখের ত্বকে দ্রুত বার্ধক্যের ছাপ পড়ে। ত্বকে মলিনভাব আসে। বহুদিন ধরে অবসাদ বা বিষণ্ণতার ভুগলে ত্বকে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। শরীরের রাসায়নিক যৌগের পরিবর্তনের ফলে দেহের কোষের ইনফ্লেমেশন মেরামতে বাধা পায়। হরমোনের তারতম্যের ফলে ঘুম কমে যায়। চোখের চারপাশে কালচে এবং ফোলাভাবের সৃষ্টি হয় এবং চোখ মলিন দেখায়।

রাগ

অত্যাধিক রাগ বা ক্রোধ ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে। রাগ হলে মুখের পেশি দৃঢ় হয়ে ওঠে এবং মুখে ফুটে ওঠে সূক্ষ্ম রেখা। এরফলে ত্বকের আরোগ্য লাভের ক্ষমতা এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়া কমে যায়। গবেষকদের দাবি, ক্রোধান্ধ মানুষদের কোষের নিরাময় এবং পুনর্গঠনের মাত্রা ঠান্ডা মাথার মানুষদের থেকে কয়েক গুণ বেশি হয়। যারা বেশি রাগ করেন তাদের কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেশি থাকে এবং কোলাজেন উৎপাদন বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ দ্রুত পড়ে।

ভয়

ভয়ের কারণেও ত্বকের হাল বেহাল হয়। সাধারণত ভয় বা বিপদে পড়লে মস্তিষ্কের প্রথমে অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিতে এপিনেফ্রিন হরমোনকে সংকেত দেয়। এতে হৃদগতি বৃদ্ধি পায়। পেশিতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং শক্তি বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় অ্যাড্রেনালিন ত্বক এবং মুখ থেকে রক্তের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তাই ভয় পেলে দেখতে ফ্যাকাশে এবং নির্জীব লাগে।

এই সময়

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 × three =