বিশ্বের অবাক করা কাণ্ড

সাগরে ফেলা চিঠি ফিরে পেলেন ৩৭ বছর পর

কয়েক দশক আগে ফেলে দেওয়া কোনো জিনিস ফিরে পাওয়ার আশা কি কেউ করেন? সচরাচর হয়তো না। করেননি মার্কিন নাগরিক ট্রয় হেলারও। তবে তার ভাগ্যটা যেন ব্যতিক্রম। না চাইতেই ফিরে পেয়েছেন ৩৭ বছর আগে সাগরে ফেলে দেওয়া একটি চিঠি। চিঠি ফেরত পাওয়ার এ ঘটনা ঘটে গত নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখে। সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের সেবাস্তিয়ান শহরের সৈকত দিয়ে হাঁটছিলেন কেটি কারম্যাক্স ও অ্যানি কারম্যাক্স। এর আগে ওই অঞ্চলে হারিকেন নিকোল আঘাত হেনেছিল। হারিকেনের কারণে সৈকতে জমে থাকা আবর্জনা সেদিন পরিষ্কার করছিলেন কয়েকজন শিক্ষক। তারা কেটি ও অ্যানির হাতে একটি বোতল তুলে দেন। ওই বোতলের মধ্যে ছিল একটি চিঠি। সেটিতে লেখা ছিল ট্রয় হেলারের নাম আর একটি ঠিকানা ও ফোন নম্বর। এসব তথ্য ব্যবহার করে অনলাইনে ট্রয়ের খোঁজ শুরু করেন কেটি ও অ্যানি। পরে দেখতে পান, কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের মাউন্ট ওয়াশিংটনে একই নামে একজন থাকেন। এরপর ওই ঠিকানায় ফোন দেন দুজন। ট্রয় প্রথমে অপরিচিত নম্বর দেখে ফোন ধরেননি। পরে একটি খুদে বার্তা দেখে চমকে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখনই বার্তাটি দেখলাম, ওই বোতলে চিঠি ভরে ফেলে দেওয়ার ঘটনাটি আমার মনে পড়ল।’ এদিকে ট্রয়ের সন্ধান পাওয়ার পর চিঠিটি তার কাছে পাঠিয়ে দেন কেটি ও অ্যানি। বর্তমানে ট্রয় সেটি তার ছবির সঙ্গে ফ্রেমে বাঁধিয়ে রেখেছেন। তিনি যখন চিঠিসহ বোতলটি পানিতে ফেলছিলেন, তখন ওই ছবি তোলা হয়েছিল। ট্রয় বলেন, ‘এটা এমন একটা ঘটনা, যা আপনি কখনো ভাবতে পারবেন না। আমি ভেবেছিলাম, বোতলটা পানিতে ছুঁড়ে আর সেটি কত দূর যায় দেখব। তবে শেষ পর্যন্ত বোতলটা আমার কাছে ফিরে আসাটা অসাধারণ।’ ইউপিআই

চার বছরের বেতনের সমপরিমাণ বোনাস

স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তাইওয়ানের একটি শিপিং কোম্পানি তাদের বার্ষিক সাফল্য উদ্যাপনের অংশ হিসেবে কিছু কর্মীকে বিপুল পরিমাণ বোনাস দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এসব কর্মীকে বেতনের ৫০ গুণ কিংবা ৪ বছরের বেতনের বেশি অর্থ দেওয়া হয়েছে। তাইপেভিত্তিক কোম্পানিটির নাম এভারগ্রিন মেরিন করপোরেশন। ২০২১ সালের শুরুর দিকে কোম্পানিটি পরিচালিত একটি জাহাজ সুয়েজ খালে আটকে পড়ার পর এ নিয়ে সংবাদ শিরোনাম হয়েছিল। এবার কর্মীদের বিপুল বোনাস দেওয়ার মধ্য দিয়ে কোম্পানিটি আবার আলোচনায় এসেছে। এ বোনাসের ব্যাপারে জানেন এমন এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কর্মীদের চাকরির গ্রেড এবং কর্মদক্ষতার ওপর নির্ভর করে বোনাসের পরিমাণ কমবেশি হয়েছে। তা ছাড়া শুধু তাইওয়ানভিত্তিক চুক্তির আওতায় যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারাই শুধু এ বোনাস পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তাইপেভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক ডেইলি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো কোনো কর্মী ৬৫ হাজার ডলারের বেশি (প্রায় ৬৮ লাখ টাকা) বোনাস পেয়েছেন। তবে সংবাদমাধ্যমটি কোথা থেকে এ তথ্য পেয়েছে, তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। ২০২০ সালে কোম্পানিটির যত মুনাফা হয়েছে, ২০২২ সালে তার তিন গুণের বেশি মুনাফা অর্জিত হয়েছে। শুক্রবার এভারগ্রিন মেরিনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এক বছরে কোম্পানির অর্জন এবং কর্মীদের ব্যক্তিগত অর্জনের ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক বোনাস নির্ধারণ করা হয়। এ নিয়ে বিবৃতিতে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি। অবশ্য, এভারগ্রিন মেরিনের সব কর্মীই যে একই রকম ভাগ্যবান, তা নয়। কোম্পানিটির সাংহাইভিত্তিক কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়। তারা শুধু তাদের মাসিক বেতনের ৫ থেকে ৮ গুণ বোনাস পেয়ে থাকেন। স্থানীয় কর্মীদের বরাতে চীনা সংবাদমাধ্যম সাইক্সিন এমন তথ্য জানিয়েছে। এনডিটিভি

ফ্লাইটে নিষিদ্ধ তিনি, কারণ…

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক থেকে ভারতের দিল্লির পথে উড়ছিল একটি উড়োজাহাজ। হঠাৎ সহযাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করে বসেন এক যাত্রী। ওই সময় এ নিয়ে তাকে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। তবে এক মাসের বেশি সময় পর এসে অভিযুক্ত ওই যাত্রীকে নিজেদের উড়োজাহাজে নিষিদ্ধ করেছে বিমান সংস্থাটি। তিনি এক মাস এ বিমান সংস্থার কোনো উড়োজাহাজে ভ্রমণ করতে পারবেন না। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি সহযাত্রীর সঙ্গে কী করেছিলেন, সেটা শুনলে চোখ কপালে উঠবে। ঘটনাটি গত ২৬ নভেম্বরের। নিউ ইয়র্ক থেকে দিল্লির পথে উড়োজাহাজটিতে ওই ব্যক্তির পাশে বসেছিলেন এক নারী যাত্রী। দুজনই বিজনেস ক্লাসে ভ্রমণ করছিলেন। খাবার খাওয়ার পর উড়োজাহাজটিতে আলো কমিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি পাশে বসা নারীর শরীরে মূত্র ত্যাগ করেন। ওই নারীর বয়স ৭০ বছর। জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি মদ পান করেছিলেন। মাতাল অবস্থায় উড়োজাহাজের ভেতর তিনি এমন কাণ্ড ঘটান। ভুক্তভোগী ওই নারী এ নিয়ে ক্রুর কাছে অভিযোগ করেন। বলেন, তার পোশাক, জুতা ও ব্যাগ প্রস্রাবে ভিজে গেছে। ক্রু ওই নারী যাত্রীকে এক সেট জামা ও সিøপার দিন। সেগুলো পরে ওই নারীকে অভিযুক্ত ব্যক্তির পাশেই বসতে হয়। তখন উড়োজাহাজটিতে অন্য আসন ফাঁকা ছিল না। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী নারী এয়ার ইন্ডিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। তিনি লেখেন, ‘এটি আমার জীবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক ফ্লাইট ছিল।’ এরপরই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। ওই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর একটি মামলা করে এয়ার ইন্ডিয়া। একই সঙ্গে উচ্ছৃঙ্খল ওই যাত্রীকে উড্ডয়ন নিষিদ্ধ (নো-ফ্লাই) তালিকায় রাখার সুপারিশ করা হয়। এর জেরে ওই যাত্রীকে এক মাসের জন্য নিজেদের ফ্লাইটে নিষিদ্ধ করে এয়ার ইন্ডিয়া।

লটারির শেষ টিকিট কিনে বাজিমাত

কার ভাগ্যে কী আছে, সেটা কেউ বলতে পারে না। এ জন্যই মাঝেমধ্যে এমন কিছু ঘটে, যেসব দেখে আমাদের চমকাতে হয়। যেমন করে চমকালেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। একটি লটারির শেষ দুটি টিকিট তিনি কিনেছিলেন মুদিদোকান থেকে, অনেকটা অনিচ্ছায়। কিন্তু এতেই তার ভাগ্য খুলে গেছে। বাজিমাত করেছেন তিনি। কারণ, এর মধ্যে একটি লটারিতে ৪০ লাখ ডলার পুরস্কার জিতেছেন ওই ব্যক্তি। ডায়মন্ডস ৭ নামের এ লটারির আয়োজক মিশিগান লটারি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, লটারি-জয়ী ওই ব্যক্তি নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। তিনি জানিয়েছেন, বাড়ির কাছে একটি সড়কের পাশে গিয়েছিলেন সদাইপাতি কিনতে। দোকানে গিয়ে দেখেন, কাউন্টারে আর মাত্র দুটি টিকিট অবশিষ্ট আছে। টিকিটগুলোর দাম ৩০ ডলার। দুটিই কিনে নেন। দোকানেই লটারি স্ক্যান করে দেখেন তিনি। মিশিগান লটারিকে ওই ব্যক্তি বলেন, একটি টিকিট স্ক্যান করে তিনি দেখতে পান, তাতে পুরস্কার পাওয়ার দাবি জানানোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে তাকে। এরপর তিনি কাউন্টারেই ওই টিকিট ঘষে বারকোড বের করেন। বারকোড বের করার পরই তিনি জানতে পারেন তিনি পুরস্কার জিতেছেন। ভালো করে পরীক্ষা করে দেখেন শুধু পুরস্কার নয়; ৪০ লাখ ডলার জিতেছেন তিনি। ডায়মন্ডস ৭ নামের ওই লটারির নিয়ম হচ্ছে পুরস্কারের অর্থ একবারে ২৫ লাখ ডলার দেওয়া হবে। আর যদি লটারির অর্থ ৩০ বছর ধরে প্রতিবছর সমানভাবে নিতে চান, সে ক্ষেত্রে লটারির পুরো অর্থ অর্থাৎ ৪০ লাখ ডলার পাবেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি একবারেই লটারির অর্থ অর্থাৎ ২৫ লাখ ডলার তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

ছবি আঁকতে ব্যাংক নোট

আঁকাআঁকি নেশা তাঁর। তাই তো কখনো ছবি আঁকছেন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির, কখনো হলিউডের ছবির কোনো পোস্টার, কখনোবা যিশুর। ছবিগুলো কিন্তু তিনি কাগজে আঁকছেন না। এর বদলে বেছে নিয়েছেন নিজ দেশের বিভিন্ন ব্যাংক নোট। বলছি সের্হিও গুইলেরমো দিয়াজের কথা। বাড়ি লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনায়। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কেন ছবি আঁকার মাধ্যম হিসেবে ব্যাংক নোট ব্যবহার করছেন তিনি। জবাবটা হলো, আর্জেন্টিনার অর্থনৈতিক সংকট। ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির জেরে পড়ে গেছে দেশটির মুদ্রা পেসোর মান, আকাশ ছুঁয়েছে মূল্যস্ফীতি। বলা যায়, নিজ দেশের টালমাটাল অর্থনীতির বিরুদ্ধে এটা দিয়াজের নীরব প্রতিবাদ। দিয়াজ বলেন, ‘আমার আঁকা ছবিগুলোতে আর্জেন্টিনায় মূল্যস্ফীতির বর্তমান অবস্থা ও কীভাবে তা দিন দিন বাড়ছে, সেটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই সংকট আমাদের সবার জীবন ও ক্রয়ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলেছে। ছবিতে আমি বোঝানোর চেষ্টা করেছি, সংকটের মধ্য দিয়ে কিভাবে আমাদের দিন কাটছে।’

যে ধূমকেতু দেখা যাবে ৫০ হাজার বছর পর

কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পৃথিবীকে অতিক্রম করবে একটি ধূমকেতু। এটি খালি চোখেও দেখা যাবে। ৫০ হাজার বছর পর ধূমকেতুটি দৃশ্যমান হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ১২ জানুয়ারি এটি সূর্যকে অতিক্রম করবে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ধূমকেতুটি পৃথিবীর কাছ দিয়ে যেতে পারে। এ সময় দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে সহজেই এটি দেখা যাবে। তবে আকাশ পরিষ্কার থাকলে খালি চোখেও ধূমকেতুটি দেখা যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জুইকি ট্রানসিয়েন্ট ফ্যাসিলিটি গত বছরের মার্চ মাসে এই ধূমকেতুর সন্ধান পায়। এ সময় এটি বৃহস্পতি গ্রহকে অতিক্রম করছিল। গবেষকেরা এ ধূমকেতুর নাম দেন সি/২০২২ ই৩ (জেডটিএফ)। ধূমকেতুটি বরফ ও ধূলিকণায় গঠিত। এটি পেছনে সবুজ আভা ছেড়ে যায়। ধূমকেতুটির ব্যাস প্রায় এক কিলোমিটার হতে পারে। এর আগে ২০২০ সালে খালি চোখে দেখা যাওয়া নিউওয়াইজ নামের ধূমকেতুটির চেয়ে এটি অনেক ছোট। এ ছাড়া ১৯৯৭ সালে হেলি-বপ নামের যে ধূমকেতুটি পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান হয়েছিল, সেটির ব্যাস ছিল ৬০ কিলোমিটার। বিভার বলেন, তবে এবারের ধূমকেতুটির বিশেষত্ব হচ্ছে, এটি পৃথিবীর অনেক কাছ দিয়ে যাবে। এটি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি উজ্জ্বল হয়ে দেখা দিতে পারে। ১ ফেব্রুয়ারির পর ১০ ফেব্রুয়ারি ধূমকেতুটি যখন মঙ্গল গ্রহ অতিক্রম করবে, তখনো এটি দেখার সুযোগ পাওয়া যাবে।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: বিচিত্র

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

20 − 13 =