নতুন মাইলফলকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অর্জন

সালেক সুফী: বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওডিআই স্কোর (৩৩৮/৮), সর্বোচ্চ ব্যাবধানে ( ১৮৩ রান) ম্যাচ জয়, অভিষেকে তাওহীদ হৃদয়ের সর্বোচ্চ (৯২) রান, সাকিবের আপন ছন্দে ৯৩ রানের সঙ্গে একদিনের ক্রিকেটে ৭০০০ রানের মাইলফলক, মুশফিকের ঝড়ো ব্যাটিং (৩ চার, ৩ ছয়ে ২৬ বলে ৪৪), এবাদতের (৪/৪২) কোনটি রেখে কোনটির কথা লিখবো। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের সমকক্ষ এখনো হয়ে উঠেনি। উপরন্তু যখন ঘরের মাঠে খেলা, তখন হেসে খেলে জয় পাবে বাংলাদেশ সেটি অনুমিত ছিল। তবে শুরু থেকে শেষ অবধি যেভাবে দাপুটে ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ তা দেখে আয়ারল্যান্ডের হকচকিয়ে যাবার কথা। সূচনায় এমন বিপর্যয় কিভাবে সামাল দেয় অতিথি দল এখন দেখতে হবে সেটাই।

টস জয় করেও আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশকে ব্যাট করতে দিয়েছিলো। শুরুতে উইকেটে মুভমেন্ট ছিল, বাউন্স ছিল। যদিও তামিম ইনিংস শুরু করতে বার্থ হয়েছে তবুও বলবো না আয়ারল্যান্ড সুযোগটা কাজে লাগাতে পেরেছে। লিটন (২৬), শান্ত (২৫)  ভালো শুরু করেও ইনিংস দুটো কাজে লাগাতে পারেনি। ১৭ম ওভারে ৮১/৩ ম্যাচে ছিল আয়ারল্যান্ড।

মাঠের বাইরের বিতর্ককে হুক করে উইকেটে এসেই নিজের মূর্তিতে সাবলীল সাকিব, সঙ্গী অপরপ্রান্তে এই ম্যাচে অভিষিক্ত প্রতিভাবান নবীন তাওহীদ হৃদয়। ওদের রসায়নে দুরন্ত দুর্বার বাংলাদেশ। ওদের যোগাযোগে ২১.১ ওভারে যুক্ত হলো ১৩৫ রানের উজ্জ্বল পার্টনারশিপ। ৯টি দর্শনীয় চারে দৃষ্টিনন্দন ৯৩ রান করা সাকিব মুহূর্তের অসতর্কতার জন্য হারালো ১০ম শত রানের সুযোগ। এই ইনিংস দিয়ে ওডিআই ক্রিকেটে সাকিব ৭০০০ রান আর ৩০০ উইকেট অর্জনের ঈর্ষণীয় মাইলফলকের অধিকারী হলো।

বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় খুদে প্রতিভা অভিষিক্ত তাওহিদ হৃদয়ের।  বিন্দুমাত্র স্নায়ুর চাপ নেই। খেলছে যেন অনেক অভিজ্ঞ একজন মারকুটে ব্যাটসম্যান। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৯২ রান অর্জনের পরেও আফসোস থাকবে অভিষেকে শত রান না করার। আগামীতে হৃদয়ের নাম অনেক বার শুনা যাবে সন্দেহ নেই।

এর পর আসুন মুশফিককে নিয়ে। কিছুদিন যাবৎ কিছুটা ছন্দহীন মনে হচ্ছিলো।  কিন্তু কাল উপযোগী পরিস্থিতি পেয়ে নিজের জাত চিনিয়েছে। নির্দয়ভাবে প্রহার করেছে অসহায় আইরিশদের। ২৬ বলে ৪৪ রানের সংক্ষিপ্ত ইনিংসে ছিল ৩টি বাউন্ডারি আর ৩টি প্রচন্ড ছয়ের মার। এতো কিছুর পর (৩৩৮/৮) বাংলাদেশ দলীয় রানের নতুন মাইল ফলক অর্জন করেছে স্বচ্ছন্দে।

ব্যাটিং তান্ডব চালনার পর বোলিংয়েও দুরন্ত ছিল বাংলাদেশ। আইরিশরা যা কিছু করেছে প্রথম উইকেটে ৬০ রান তুলে। এর পর যেইনা সাকিব এসে ভালো খেলতে থাকা দোহেনিকে ফেরালো, মড়ক লাগলো আইরিশ ইনিংসে।  তাসকিন, এবাদত এবং নাসুম। উইকেটের পেছনে বাজপাখি হয়ে উঠলো মুশফিক। একাই ধরলো ৫টি ক্যাচ। ১৫৫ রানেই গুটিয়ে গেলো আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের ১৮৩ রানের বিশাল জয়ে নতুন মাইলফলক। ১-০ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ।

আইরিশ দলের দুর্ভাগ্য এই মুহূর্তে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে ছন্দে থাকা বাংলাদেশের সামনে ওরা।  সিরিজে ফিরে আসতে হলে অনেক অনেক পরিশীলিত হতে হবে ওদের। বৃহস্পতি বসত করছে বাংলাদেশের ঘরে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

2 × 5 =