সংগীতশিল্পী অলকা ইয়াগনিকের জন্মদিন আজ

প্রায় তিন দশক ধরে ভারতীয় সঙ্গীতে অবদান রেখে চলেছেন অলকা ইয়াগনিক। ১৯৬৬ সালে কলকাতার একটি গুজরাতি পরিবারে আলকা ইয়াগনিকের জন্ম হয়। তার মা শোভা ইয়াগনিক ছিলেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী। তিনি মডার্ন বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৭২ সালে মাত্র ৬ বছর বয়সে তিনি আকাশবানী (অল ইন্ডিয়া রেডিও) কলকাতাতে গান  করেন। ১০ বছর বয়সে তার মা তাকে শিশু শিল্পী হিসেবে মুম্বই নিয়ে আসেন। তার কেরিয়ার আজ যে জায়গায় পৌঁছেছে, তার পুরো কৃতিত্বই অলকা মা-কে দেন। ১৯৮০ সালে প্রথম প্লেব্যাক করেন ‘পায়েল কি ঝঙ্কার’ ছবিতে। তার কণ্ঠ এতটাই দর্শকেরা এতটাই পছন্দ করে যে, এর পর আর পিছনে ফিরতে হয়নি তাকে।

সেরা নারী প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে অনেক বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন আলকা। তাকে বলা হত ‘কুইন অফ প্লে ব্যাক সিঙ্গিং।” মাত্র ১৪ বছর বয়সে বলি ইন্ডাস্ট্রিতে গানে ডেবিউ তার। দু’হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন তিনি। অন্তত ১৬টি ভাষায় গান গেয়েছেন। বলতে গেলে লতা মঙ্গেশকর এবং আশা ভোঁসলের পর তার নামই উচ্চারিত হত সুরের দুনিয়ায়। মুখে সবসময়ই লেগে আছে তার মিষ্টি হাসি। কণ্ঠের মধুরতা যেন মাধুরী ছাড়িয়েছে তার হাসিতেও। উদিত নারায়ণ হোক বা কুমার শানু, জুটি বেঁধে একের পর এক হিট গান উপহার দিয়েছিলেন অলকা। প্রায় ১০০০ ভারতীয় চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন।

তবে কেরিয়ারের চাপ কখনও তার ব্যক্তিগত জীবনে পড়তে দেননি তিনি। তাই স্বামীর কাছ থেকে অনেক দূরে থেকেও কখনও তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়নি। ১৯৮৯-এ শিলংয়ের এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন অলকা। কর্মসূত্রে বছরের বেশির ভাগ দিন অলকাকে মুম্বইয়েই থাকতে হয়। আর ব্যবসার প্রয়োজনে তার স্বামী নীরজ কুমার রয়ে গিয়েছেন শিলংয়ে। তাদের পরিচয় অনেকটা ফিল্মের মতোই। মায়ের সঙ্গে অলকা দিল্লি গিয়েছিলেন এক বার। স্টেশনে তাদের নিতে আসেন নীরজ। তারা কেউই একে অপরকে চিনতেন না। নীরজ ছিলেন অলকার মায়ের বন্ধুর আত্মীয়।

প্রথম দেখাতেই ভাল লেগে গিয়েছিল একে অপরকে। তার পরেই বিয়ে হয় তাদের। তবে একসঙ্গে থেকে সংসার করা হয় নি, অলকা তার ক্যারিয়ারের জন্যে মুম্বই ছেড়ে যেতে পারেনি, তেমনি তার স্বামী নীরজও ব্যবসার খাতিরে শিলং থেকে মুম্বই আসতে পারেননি। তবুও তাদের সম্পর্ক অটুট। তাদের সংসারে এক কন্যা যার নাম সায়েশা। কিন্তু বর্তমানে মেয়েকে নিয়ে একসঙ্গে থাকেন অলকা ও নীরজ। ‘ভয়েস অফ ইন্ডিয়া’, ‘সা রে গা মা পা লিটল চ্যাম্প’-এর মত বিখ্যাত শো-এর বিচারকের দায়িত্বে দীর্ঘ সময় ধরে দেখতে পাওয়া গেছে এই সঙ্গীত শিল্পীকে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 × five =