নন্দিত সাকিব, নিন্দিত সাকিব

সালেক সুফী: বাংলাদেশের বিশ্বসেরা চৌকষ ক্রিকেটার তার অসাধারণ ক্রিকেটীয় অর্জনে যেমন বিশ্বজুড়ে নন্দিত, পাশাপাশি কিছু  সামাজিক এবং ব্যাক্তিগত  কাজে ক্ষণে ক্ষণে বিতর্কিত হয়ে নিন্দিত।  ক্যারিয়ারের মধ্যাহ্ন গগনে ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে বিশাল অর্জন নিয়ে সাকিব এখনো বাংলাদেশের তিন ফরম্যাটে স্বয়ংক্রিয় চয়েস।  একই সময় ক্রিকেট বিশ্ব জুড়ে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও  বিশাল চাহিদা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং, অধিনায়কত্ব একসঙ্গে সবকিছুতেই  ক্যারিবীয় কিংবদন্তি  স্যার গারফিল্ড অনবার্ন সোবার্সের সঙ্গে তুলনীয়। আমি কিন্তু শুধু ব্যাটিং বা বোলিং দেখছি না। আমি একসঙ্গে সবকিছু  মিলিয়ে বলছি।

কাল ছিল ক্রীড়া বিশ্বে বাংলাদেশকে চিনানো সাকিবের ৩৬তম জন্মদিন। কাল নিজের নাম ক্যান্সার ফাউন্ডেশন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়ে একটি মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে। আমি মনে করি সাকিবের এই উদ্যোগের সমর্থন জানাবে অগণিত ভক্ত অনুরাগী। ঠিক যেমন শওকত মেমোরিয়াল ক্যান্সার হাসপাতাল গড়ে নন্দিত হয়েছে পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। জানি সাকিব আরো কিছু জনকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গেও জড়িত আছে।

খেলার মাঠে অনন্য প্রতিভায় দেদীপ্যমান সাকিব মাঝে মাঝে জড়িয়ে পড়েন বিতর্কে বিসিবির সঙ্গে।  কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয় থাকলেও একজন চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার কোড অফ কনডাক্ট অনুযায়ী সব সময় সব কিছু করতে  পারেন না। আইন সবার জন্য সমান। কিছু আগেই আলোচনায় এসেছিলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে জনৈক খুনের মামলায় অভিযুক্ত আরাব খানের আলোচিত সোনার দোকান চালুর অনুষ্ঠানের ফিতে কেটে।

এর আগেও মাঠে এবং মাঠের বাইরের বিতর্কে জড়িয়ে ক্রিকেট থেকে সাময়িক বহিষ্কার হয়েছে। কিন্তু প্রতিবার দারুনভাবে ফিরে এসে প্রকৃত প্রদত্ত ক্রিকেট প্রতিভায় সাফল্যের প্রতীক হয়েছে। ব্যাক্তিগত জীবনে সফল ব্যাবসায়ী সাকিবের খেলোয়াড়ি জীবন অনেকটা কাঁটাযুক্ত গোলাপ ফুলের মতো। একদিকে গোলাপের সৌরভ, অন্যদিকে কাটার আঘাত।  ব্যাক্তিগত জীবনের বেপরোয়া মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে কোটি শিশুর আইডল সাকিব জাতির দিকদর্শন হতে পারবে।

সাকিব এখন টেস্ট এবং টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের অধিনায়ক। ওডিআই ফরম্যাটেও অপরিহার্য খেলোয়াড়। সম্প্রতি সমাপ্ত আয়ারল্যান্ড সিরিজে ৭০০০ রান এবং ৩০০ উইকেট অর্জন করে সনাথ জয়সুরিয়া এবং শহীদ খান আফ্রিদির কুলিন ক্লাবে যোগদান  করেছে। এখনো অন্তত ৪ বছর ক্রিকেট অবশিষ্ট আছে।  হয়তো ফিটনেস থাকলে ৮০০০ রান এবং ৪০০ উইকেট অর্জন ওর জন্য সম্ভব। ৬৫ টেস্ট খেলে সাকিবের রান ৪৩৬৭, উইকেট পেয়েছে ২৩১।  এখানেও ৬০০০ রান এবং ৩০০ উইকেট সাকিবের আয়ত্তে।

সাকিব ক্রিকেট জীবন শেষে ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকবে নিঃসন্দেহে। ইতিমধ্যেই ক্রিকেট একডেমির সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। জন কল্যাণমূলক কাজে জড়িত হয়েছে। শুধু প্রয়োজন কোটি কোটি অনুরাগীর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ উপস্থাপন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

thirteen − four =