জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ক্ষতিপূরণ আদায়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান স্পিকারের

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জন্য ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন একটা বৈশ্বিক সমস্যা। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো দায় নেই।’

স্পিকার আজ জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবে জাতীয় সংসদ সচিবালয় ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ফাউন্ডেশনাল নলেজ এক্সচেঞ্জ অন সাপোর্টিং ক্লাইমেট এ্যাকশন থ্রো পার্লামেন্টারী এ্যাকশন’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সরকারী প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতি আ.স.ম. ফিরোজ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর আবাসিক প্রতিনিধি ভ্যান গুয়েন।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ।

কর্মশালায় বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ মতামত প্রদান করেন আইসিসিসিডি এর পরিচালক প্রফেসর সালিমুল হক এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ মালিহা মুজাম্মিল। অনুষ্ঠানের মুক্ত আলোচনা সঞ্চালনা করেন সিনিয়র সচিব কে এম আব্দুস সালাম এবং এ পর্বে সংসদ সদস্যরা মূল্যবান মতামত প্রদান করেন।

স্পিকার বলেন,  জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সদস্যগণের সুচিন্তিত মতামত ও উদ্ভাবনী পরামর্শ খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় সংসদ সদস্যগণকে সকলে অনুসরণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণকে সচেতন করার জন্য লিফলেট তৈরি করে বিতরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতের চেইঞ্জ মেইকার তরুণ-তরুণীদের মেধাকে কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশ সবসময় অগ্রবর্তী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের মুখপাত্র। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সোচ্চার রয়েছেন উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশ প্রথম জলবায়ু ট্রাস্ট গঠন করে। এজন্যই জাতিসংঘের পরিবেশ-বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, অত্যধিক তাপদাহের কারণ, নদী দূষণ, বৃক্ষরোপন, শিল্প কারখানার দূষিত পানি থেকে নদীকে রক্ষা করা, বৃষ্টির পানি ধরে রেখে পরবর্তী সময় ব্যবহার করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে সংসদ সদস্যগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্র ও নদী তীরবর্তী তৃণমূলের জনগণ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সংসদ সদস্যদের নিয়ে কর্মশালা করে পরিকল্পনা ঠিক করতে ইউএনডিপিকে স্পিকার পরামর্শ প্রদান করেন।

কর্মশালায় সংসদ সদস্য বেগম রওশন আরা মান্নান, আহসানুল ইসলাম (টিটু), উম্মে কুলসুম স্মৃতি, শবনম জাহান, বাসন্তী চাকমা, আরমা দত্ত, উম্মে ফাতেমা নাজমা, জাকিয়া পারভীন খানম, অপরাজিতা হক, মোছাঃ শামীমা আক্তার খানম, সৈয়দা রুবিনা আক্তার, আদিবা আনজুম মিতা, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন এবং আফরোজা হক অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

six + eight =