বিশ্বের অবাক করা কাণ্ড

ফোনের মায়া ছাড়লে পাওয়া যাবে চাকরি
জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (বিএনডি) নিয়োগ দিতে যাচ্ছে গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তবে গোয়েন্দা হিসেবে কাউকে বেছে নেওয়ার আগে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। কাজে যোগ দিতে হলে বাড়িতে রেখে আসতে হবে নিজের ফোন। অন্যতম আরেকটি শর্ত, বাড়িতে বসে কাজের কোনো সুযোগ থাকবে না। করোনা মহামারির সময় অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করার সুযোগ দিয়েছিল। তাই কর্মীদের অনেকে এখনো এ সুবিধা চান। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজের সুযোগ দিতে নারাজ। জার্মানির মতো দেশে এ সমস্যা আরও বেশি। তাই দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রয়োজনীয় কর্মী খুঁজে বের করতে বেগ পেতে হচ্ছে। গত সোমবার বিএনডির প্রধান ব্রুনো কাহল বলেন, বাড়ি থেকে কাজ করার সুবিধা ও ব্যক্তিগত ফোন ব্যবহারের সুবিধা না থাকায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কর্মী পাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘এখনকার চাকরিপ্রার্থী তরুণদের চাওয়া অনুযায়ী আমরা কোনো নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে পারব না।’ অনেকে এখন অবসরে যাচ্ছেন বলে সঠিক কর্মী নির্বাচন করা কঠিন হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি। ব্রুনো কাহল আরও বলেন, নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনা করে বিএনডির জন্য ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ দেওয়া এখন সম্ভব নয়। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেওয়াও সম্ভব নয়। এখনকার অনেক তরুণ কাজের সময় ফোনের মায়া ছাড়তে পারেন না। বিএনডির তথ্য অনুযায়ী, গোয়েন্দা সংস্থাটিতে কাজ করছেন সাড়ে ছয় হাজারের বেশি কর্মী।

১০০ ঘণ্টা টানা রান্না
গিনেস বুকে রেকর্ড গড়তে বিশ্বের নানা প্রান্তে মানুষ কত কিছুই না করে! তেমনই এক রেকর্ড গড়তে নাইজেরিয়ার পাচক হিলদা বাচি রান্না করলেন টানা ১০০ ঘণ্টা। এখন পর্যন্ত এই রেকর্ডের অধিকারী ভারতের পাচক লতা টন্ডন। তিনি ২০১৯ সালে ৮৭ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট রান্না করে ‘একা একটানা দীর্ঘ সময় রান্নার’ রেকর্ড গড়েন। নতুন রেকর্ড গড়ার উদ্দেশ্যে হিলদা বাচি বৃহস্পতিবার শুরু করেন রান্না। ১০০ ঘণ্টা শেষে তিনি চুলা নেভান। এ সময় হাজার হাজার স্থানীয় মানুষ তাকে উৎসাহ জুগিয়ে যান। তার পাশে অনেক তারকাও ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে অনলাইন মাধ্যমে এই কর্মযজ্ঞ পর্যবেক্ষণ করা হয়। বাচি রান্না করেন নাইজেরিয়ার বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার। তার তৈরি খাবারের মধ্যে ছিল স্যুপ, ঝোল তরকারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের আমিষের পদ। এসবের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ ছিল পশ্চিম আফ্রিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার ‘জলফ ভাত’। সাধারণত লম্বা গড়নের চালের সঙ্গে টমেটো, পেঁয়াজ, মরিচ, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও মাংসের মিশেলে এই খাবার তৈরি করতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী, এই রেকর্ড গড়ার জন্য রান্নার ফাঁকে প্রতি ঘণ্টা শেষে পাঁচ মিনিটের বিরতি পেয়েছেন বাচি। তবে পৃথকভাবে পাঁচ মিনিট করে সময় না নিয়ে ১২ ঘণ্টা শেষে একবারে এক ঘণ্টা বিরতি ভোগ করতে পারতেন তিনি। বিশ্রাম বা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গিনেস কর্তৃপক্ষ এই বিরতি দিয়ে থাকে। বাচি বলেন, তিনি এই কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে নাইজেরিয়ার তরুণেরা কতটা কঠোর পরিশ্রমী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তা বোঝাতে চেয়েছেন। পাশাপাশি তার এই প্রচেষ্টা আফ্রিকার সমাজে পিছিয়ে রাখা নারীদের জন্য প্রচারাভিযানের অংশও। বাচির বিশ্বাস, এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসী নাইজেরিয়ানদের সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে পারবে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ এক টুইট বার্তায় জানায়, তারা বাচির রেকর্ড গড়ার চেষ্টার বিষয়ে অবগত ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাসে এসে কুকুর নিল সনদ
প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে নানা ধরনের কাজ করানো হয়ে থাকে। অপরাধী শনাক্ত করা, মাদক শনাক্ত করাসহ নানা কাজে এই প্রাণী ব্যবহার করা হয়। এমনকি হাল আমলে করোনা শনাক্তেও কুকুর ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির সেটন হল ইউনিভার্সিটিতে যা ঘটনা, তা রীতিমতো অবিশ্বাস্যই বলা চলে। সেখানে একটি কুকুর নিয়মিত ক্লাস করেছে। এ জন্য কুকুরটিকে সাম্মানিক ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে। সমাবর্তনে মেধাবী শিক্ষার্থীরা থাকেন আলোচনার কেন্দ্রে। কিন্তু সেটন হল ইউনিভার্সিটিতে এবার ভিন্ন চিত্র দেখা গেল। গ্রেস মারিয়ানির এই কুকুরটি ঘিরে এবার আলোচনা। কুকুরটির সনদ নেওয়ার ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। আলোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কুকুরটির নাম জাস্টিন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সেটন হল ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ ই নিয়ার কাছ থেকে সনদ নিচ্ছে জাস্টিন। গ্রেস মারিয়ানি আসলে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারেন না। হুইলচেয়ারেই তার চলাফেরা। এ জন্য কুকুরটি তার সঙ্গে সব সময় থাকে। ফলে গ্রেসের সঙ্গে নিয়মিত ক্লাসে আসত কুকুর জাস্টিন। সেটন হল ইউনিভার্সিটি থেকে এ বছর স্নাতক সম্পন্ন করেছেন গ্রেস মারিয়ানি। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রেসের সঙ্গেই মঞ্চে ওঠে জাস্টিন। যখন ডিপ্লোমা ডিগ্রির সনদটি সামনে ধরা হয়, তখন জাস্টিন এটি বেশ কয়েকবার শুঁকে দেখে। এরপর মুখে নেয় সেটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট জোসেফ, গ্রেস এবং বাকিরাও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন। গ্রেস বলেন, তিনি পরিকল্পনা করছেন জাস্টিনকে বিশেষ যত্ন নেবেন এবং পড়াশোনা শেখাবেন। এ ছাড়া জাস্টিনকে সব সময় পাশে রাখার পরিকল্পনাও করছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় নানা মন্তব্য আসছে। একজন বিশ্ববিদ্যালয়কেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাস্টিনকে ডিগ্রি দেওয়ায়। আরেকজন লিখেছেন, কী অসাধারণ মুহূর্ত!

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: বিচিত্র

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

five × two =