নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপন, ওয়েব কনটেন্ট—সব ক্ষেত্রেই সরব উপস্থিতি রুনা খানের। সম্প্রতি শুরু করেছেন ‘বক: দ্য সোল অব ন্যাচার’ নামের নতুন সিনেমার শুটিং। জীবনানন্দ দাশের ‘আট বছর আগের একদিন’ অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মাণ করছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী নির্মাতা মাসুদ পথিক। কবিতা অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণকে যেন নিজের জনরা বানিয়ে ফেলেছেন মাসুদ পথিক। এর আগে কবি নির্মলেন্দু গুণ ও শিল্পী শাহাবুদ্দিনের চিত্রকর্ম ও কবি কামাল চৌধুরীর কবিতা অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করেছেন তিনি। গত ২৫ জুলাই থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওর অঞ্চলে চলছে সিনেমাটির শুটিং।
নতুন এ সিনেমাটি নিয়ে রুনা খান বলেন, ‘একটি পরিবারের মধ্য দিয়ে জীবন ও প্রকৃতির কথা বর্ণনা করা হয়েছে সিনেমাটিতে। এর মধ্যে নির্মাতা খুব সুন্দরভাবে তাঁর দর্শনের কথা সাজিয়েছেন। একেবারে ভিন্ন একটি গল্প দেখতে পারবেন দর্শক। আমার চরিত্রের নাম সবিতা। সে এক বক শিকারির স্ত্রী। যার দুটি সন্তান আছে। এর বেশি কিছু এখন চরিত্র নিয়ে বলতে চাচ্ছি না। শুধু এটুকু বলতে পারি, নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চরিত্রটি ধারণ করার চেষ্টা করছি।’
শুটিং অভিজ্ঞতা নিয়ে রুনা খান বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের লালপুরে শুটিং হচ্ছে। এবারই প্রথম এই এলাকায় আসা হলো। প্রচণ্ড রোদ, বৃষ্টির মধ্যে শুটিং চলছে। সবাই অনেক কষ্ট করছে। আমি গ্রামে বেড়ে ওঠা মেয়ে, তাই এই পরিবেশের সঙ্গে আমার জানাশোনা আছে। আমি উপভোগ করছি সময়টা। তাছাড়া, অভিনয়শিল্পী হিসেবে সব পরিবেশেই আমাদের শুটিং করতে হয়। এটাই আমাদের কাজ।’
সিনেমায় রুনা খানের বিপরীতে অভিনয় করছেন রতন দেব। তিনি উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর একজন নির্দেশক। আরও অভিনয় করছেন আব্রাহাম তামিম, এলিনা শাম্মী, সাফওয়ান মাহমুদ প্রমুখ।
সিনেমাটি নিয়ে নির্মাতা মাসুদ পথিক বলেন, ‘বক: দ্য সোল অব ন্যাচার সিনেমার মাধ্যমে পরিবেশ ও জীবনের বিবর্তনটা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। জীবনানন্দ দাশের কবিতাটিতে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের জীবন নিবিড়ভাবে জড়িত। এ ছাড়া অনেক দার্শনিক বিষয় আছে। এখানে বক একটি উপজীব্য মাত্র। মূলত আমাদের আত্মপীড়ন, আত্মঘাতী মনোভাব, প্রকৃতির ভেতরও একে অন্যকে খেয়ে ফেলার যে মনোবৃত্তি, সে বিষয়গুলো বর্ণনা করা হয়েছে।’
গতকাল ছিল শুটিংয়ের ৩১তম দিন। হাওর অঞ্চলে কষ্ট করে শুটিং করছেন সবাই। এ নিয়ে নির্মাতা বলেন, ‘কখনো প্রচণ্ড রোদ, আবার কখনো প্রচণ্ড বৃষ্টি। বলা যায়, একবার ভেজা কাক হয়ে যাচ্ছি, আবার রোদে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া এখানে সবকিছুই দুষ্প্রাপ্য। কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে ছুটতে হয় আশুগঞ্জ শহরে। তবে কেউই থেমে নেই। আমরা একটানা শুটিং শেষ করেই এখান থেকে ফিরব।’
২৮ আগস্ট দৃশ্যধারণের কাজ শেষ করে ঢাকায় ফিরবে সিনেমার ইউনিট। নির্মাতা জানিয়েছেন, আগামী নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠানো হবে সিনেমাটি। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির ইচ্ছার কথা জানান মাসুদ পথিক।