কমিকের বয়স ৯৫ টিনটিন ৯

১৯২৯ সাল থেকে কমিক জগতে বিচরণ টিনটিন চরিত্রের। ব্রাসেলস থেকে মস্কোর ট্রেনে চড়ে যাত্রা শুরু করে এই তরুণ সাংবাদিক টিনটিন। প্রথমেই পাঠকেরা পরিচিত হন ব্রাসেলস স্টেশনে কিছুটা খাটো, মোটা আর কাপড়ে মোড়া এই চরিত্রটির সঙ্গে। যার সফরসঙ্গী তার পোষা কুকুর স্নোয়ি। নানান স্থান আর বিষয় যুক্ত হতে থাকে টিনটিন সিরিজে। যুক্ত হয় নতুন চরিত্র। টিনটিনের প্রথম বইটি বস্তুনিষ্ঠতার দিক থেকে কম নির্ভরযোগ্য মনে হলেও এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে চমৎকার। এর বাস্তবসম্মত ডিটেইলের ওপর ভিত্তি করেই অ্যার্জের পরবর্তী কাজগুলো আরও পরিপক্ব হয়ে ওঠে। টিনটিনও পরিবর্তন হতে থাকে, যেখানে তার বিরুদ্ধে আরও দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিপক্ষকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়, আরও জটিল পরিস্থিতিতে তাকে পড়তে হয়।

টিনটিনের জনক

বেলজিয়ামের একটি সংবাদপত্র ল্য ভ্যানতিয়েম সিয়েক্ল। সেখানে কিশোর সাময়িকী ল্য পেতি ভ্যানতিয়েমে ১৯২৯ সালের ১০ জানুয়ারি প্রথম প্রকাশিত হতে শুরু করে ‘টিনটিন ইন দ্য ল্যান্ড অব সোভিয়েটস’। ইংরেজিতে ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অব টিনটিন’ নামে পরিচিত সিরিজটির শুরু হয় ফরাসি ভাষায়। পরে এটি বই আকারে প্রকাশিত হয়। সে হিসেবে বিখ্যাত এই কমিকস সিরিজ ও চরিত্রের বয়স এখন ৯৫। প্রথম প্রকাশের পর এখন পর্যন্ত টিনটিনের ২৪টি বই অনূদিত হয়েছে পৃথিবীর ৭০টির মতো ভাষায়। বিক্রি হয়েছে ২৭ কোটি কপির বেশি। টিনটিন চরিত্রটির স্রষ্টা ও লেখক জর্জ রেমি। তবে তিনি ছদ্মনামে লেখাটি প্রকাশ করতেন। লিখতেন ‘হার্জ’ ছদ্মনামে। ১৯৮৩ সালের ৩ মার্চ তিনি যখন লিউকোমিয়া সম্পর্কিত এক রোগে ৭৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন, তার আগে বিশ্ব পেয়ে গেছে এক অসাধারণ কমিক সিরিজ-টিনটিন! ১৯২১ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত টিনটিনের বই লিখেছিলেন হার্জ। টিনটিন সিরিজের পেছনের নানা চরিত্রে দেখা পাওয়া যায়। টিনটিনের যমজ দুই থম্পসন চরিত্রের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে ছিল আসল দুই যমজ ভাই, স্বয়ং হার্জের বাবা ও চাচা। এ ছাড়া অপেরা গায়িকা ক্যাস্টাফায়োর চরিত্রের অনুপ্রেরণাও নাকি হার্জ পেয়েছিল তার দাদিমার কাছ থেকে। রেমি হার্জে মারা গেলেও রেখে যান প্রায় ১৫০ পৃষ্ঠার স্কেচ, টিনটিনের বিভিন্ন সংলাপ ও কাহিনির বর্ণনা যা এখনো রয়ে গেছে অসমাপ্ত। হার্জ চলে গেলেও সকলের জন্য রেখে গেছেন টিনটিনের দুঃসাহসী অভিযানের এক বিস্ময়কর জগৎ।

কে এই টিনটিন?

১৯২৬ সালে ল্যু বয়-স্কাউট বেলজি’তে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কমিক স্ট্রিপ ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অফ টোটর’। তখন তার বয়স উনিশ। ১৯২৯ সালের জুলাই পর্যন্ত টোটর সদর্পে ম্যাগাজিনের পাতায় বিচরণ করে। টোটরই টিনটিনের আদিরূপ। অল্পবয়সী, খানিকটা স্থূলকায় টোটরকেই পরবর্তীতে হার্জ পরিমার্জিত করে রূপ দেন দুঃসাহসী টিনটিনে। টিনটিনের মতো টোটরের সঙ্গীও ছিল একটি কুকুর। হার্জ পরে নিজেই স্বীকার করেছেন টিনটিনকে তিনি টোটরের ছোট ভাই হিসেবে চিন্তা করেছিলেন। টিনটিনের চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে ভাই বেলজিয়ামের আর্মি অফিসার পল রেমির কথা তার মাথায় ছিল বলেও হার্জ বিভিন্ন সময় বলেছেন।

মূল চরিত্র টিনটিন কোথাও বলা না হলেও তাকে একজন বালক বা কিশোর হিসেবেই মনে হবে পাঠকদের। নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে যাওয়ার পনেরো বছর আগেই হার্জের জগতের চাঁদে প্রথম পা দেওয়া মানুষ হন টিনটিন। ১৯৫৪ সালে দুঃসাহসী টিনটিনের বিখ্যাত সব অভিযানের ১৭তম কমিক বই ‘চাঁদে টিনটিন’ এর গল্প চাঁদের মাটিতে ঘটে। টিনটিনের সঙ্গে সেবার তার কুকুর স্নোয়ি, ক্যাপ্টেন হ্যাডক ও ক্যালকুলাসও ঘুরে আসে চাঁদের দেশ থেকে। টিনটিন চরিত্রকে নানান আঙ্গিকে ফুটিয়ে তুললেও টিনটিনের এক্সপ্রেশন বা অভিব্যক্তি ছিল খুবই সীমিত। কিছু এক্সপ্রেশনই বারবার টিনটিনের চেহারায় ঘুরেফিরে আসে, অনেক সময় তাকে মনে হয় একেবারেই এক্সপ্রেশন লেস। হার্জ চেয়েছিলেন মানুষ যেন টিনটিনের অবস্থানে নিজেদের কল্পনা করে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পারে। টিনটিনের চেহারায় যে অভিব্যক্তি ফুটে উঠত তা অনুভব না করে সবাই নিজের মতো করে অনুভব করবে টিনটিনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা – এমনটাই ছিল হার্জের উদ্দেশ্য। ছোটখাটো গড়নের আর অদ্ভুত চুলের ছাঁটের এ তরুণ সাংবাদিকটি তার ছোট্ট কুকুর স্নোয়িকে নিয়ে দুনিয়ার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে বেড়ায়। আর সঙ্গে থাকে প্রায় সারাক্ষণ মাতাল হয়ে থাকা জাহাজি বন্ধু ক্যাপ্টেন হ্যাডক আর অসম্ভব প্রতিভাবান বিজ্ঞানী ক্যালকুলাস।

টিনটিনের চরিত্ররা

টিনটিনের কথা বলতে গেলে সবার আগে চলে আসবে কুকুর স্নোয়ি (কুট্টুস) এবং ক্যাপ্টেন হ্যাডক্ ও প্রোফেসর ক্যালকুলাসের কথা। ক্র্যাব উইথ দ্য গোল্ডেন ক্লজ বইয়ের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে ক্যাপ্টেন হ্যাডক্। পুরো নাম ক্যাপ্টেন আর্কিবল্ড হ্যাডক্ হলেও কমিকে তাকে ক্যাপ্টেন নামেই অধিকাংশ সময় সম্বোধন করা হয়। ক্যাপ্টেন হ্যাডক্ ও টিনটিনের সর্বপ্রথম দেখা হয় কাঁকড়া রহস্য বইটিতে। সেসময় ক্যাপ্টেন হ্যাডক্ একটি বাণিজ্যিক জাহাজের ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করছিলেন। জাহাজের ক্যাপ্টেন হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া চরিত্রটি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে সময় লাগেনি। খিটখিটে মেজাজ ও অফুরন্ত গালির ভান্ডার সেই ক্যাপ্টেন হ্যাডক। ক্যাপ্টেন হ্যাডক টিনটিনের প্রিয় বন্ধু যিনি বহু অভিযানে তার সঙ্গী হয়েছেন। হ্যাডক মূলত কমিক ও আগ্রহোদ্দীপক চরিত্র। দ্রুত উত্তেজিত হন, মদ খেতে পছন্দ করেন যা প্রায়শই বিপদে ফেলে দিয়েছে টিনটিনকে। বিখ্যাত নাবিক স্যার ফ্রান্সিস হ্যাডকের উত্তরপুরুষ ক্যাপ্টেন আর্চিবল্ড হ্যাডক বাস করেন তাদের পারিবারিক বাড়ি মার্লিনস্পাইক হলে।

প্রফেসর ক্যালকুলাস দুঃসাহসী টিনটিন কমিক সিরিজের একজন নিয়মিত চরিত্র। ক্যালকুলাস টিনটিনের বন্ধু ক্যাপ্টেন হ্যাডকের বাসভবন মার্লিনস্পাইক হল নামের জমিদার বাড়িতে সাধারণত অবস্থান করেন। প্রফেসর ক্যালকুলাসকে সব সময় দেখা যায় কালো টুপি, চশমা এবং জলপাই-সবুজ রঙের কোট পরিহিত অবস্থায়। ভুলোমনা প্রফেসরের শ্রবণশক্তি কিছুটা কম, যা প্রায়শই গল্পে হাস্যরসের জোগান দেয়। এই চরিত্রের অনুপ্রেরণা ড. পিচার্ড। সে কানে খাটো, ভুলো মনের প্রতিভাবান এক পদার্থবিদ। তার আত্মপ্রকাশ ‘রেড রেকহামস ট্রেজার’ বা ‘লাল বোম্বেটের গুপ্তধন’ বইয়ের মাধ্যমে।

হার্জ আরও নিয়ে আসেন দুই পুলিশ অফিসার, ডুপন্দ আর ডুপন্টকে, ইংরেজি অনুবাদে যারা হয়ে গেল থমসন আর থম্পসন (বাংলাতে রনসন আর জনসন)। অবিকল এক চেহারার দুই অফিসারের ছিল শুধু এক জায়গাতে-ডুপন্দ বা থমসনের মোচ ছিল সামান্য বাঁকানো। ১৯৩৪ সালে ফারাওয়ের চুরুটে হার্জ টিনটিনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিয়ে আসেন রবার্টো রাস্তাপোপোলাসকে। এরপর বারে বারেই তাকে বিভিন্ন গল্পে দেখা গেছে। হোমসের প্রবল প্রতিপক্ষ যেমন মরিয়ার্টি, তেমনি টিনটিনের প্রধান শত্রু এই রাস্তাপোপোলাস।

নামকরা অপেরা গায়িকা, বিয়াংকা কাস্তাফিওর। তার সুতীক্ষ্ণ কণ্ঠের তোড়ে বয়ে যেত ঝোড়ো বাতাস, ভেঙে পড়ত কাচ। ক্যাপ্টেন হ্যাডকের নাম তিনি কখনোই মনে রাখতে পারতেন না এবং বিভিন্ন মজার নামে ক্যাপ্টেনকে ডাকতেন। ফলে ক্যাপ্টেন তাকে একদমই দেখতে পারতেন না। ‘দ্য কাস্তাফিওর এমারেল্ড’ (পান্না কোথায়) গল্পে ক্যাপ্টেনের সঙ্গে তার বাগদানের খবর পাপারাজ্জিরা ছাপিয়ে দিলে সৃষ্টি হয় মজার মজার কাণ্ডের। হার্জ প্রথম তাকে নিয়ে আসেন ‘কিং ওটোকারস সেপ্টার’ (ওটোকারের রাজদণ্ড) গল্পে, যা প্রকাশিত হয়েছিল তিরিশের দশকে। হার্জ বলেছেন, অপেরা তার কাছে হাস্যকর লাগত বলে তিনি বিয়াংকা কাস্তাফিওরকে এভাবে চিত্রিত করেছেন, তাকে আঁকতে গিয়ে ব্যবহার করেছেন নিজের দাদির অবয়ব।

টিনটিনের অ্যাডভেঞ্চার

টিনটিন কমিকস সিরিজের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, গল্পের ঘটনার চমকপ্রদ, অদ্ভুত রসবোধ, অসম্ভব ডিটেইলস ড্রয়িং, সমসাময়িক ঘটনার নিখুঁত বর্ণনা, সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটের গল্প ইত্যাদি। বিংশ শতকের অনেক সমসাময়িক ঘটনাই উঠে এসেছে টিনিটিনের বিভিন্ন সিরিজে। যেমন ১৯৩৪ সালে সংঘটিত চীন-জাপান যুদ্ধকে উপজীব্য করে তৈরি করা হয়েছিল ‘নীল কমল’ বইটির ঘটনাপ্রবাহ। আবার ‘ওটোকারের রাজদণ্ড’ গল্পটির প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে রোমানিয়ার রাজা ক্যারল২ এর সঙ্গে তৎকালীন সমাজতন্ত্র-বিরোধী রাজনৈতিক দলের সংঘাতের প্রতিচ্ছবি দিয়ে। নিশ্চিতভাবেই বলা যায় ‘ক্যালকুলাসের কাণ্ড’ কমিকসটির পটভূমি এসেছে তৎকালীন স্নায়ুযুদ্ধকে কেন্দ্র করে।

কাহিনিতে বর্ণবাদ ও জাতিবিদ্বেষের অভিযোগে বর্তমানে জন্মভূমি বেলজিয়ামেই বিপাকে পড়েছে কমিক চরিত্র টিনটিন। অভিযোগটি বেলজিয়ামের এক আদালতে করেন কঙ্গোর নাগরিক বিয়েঁভেনু মবুতু মোনডোনডো। তার অভিযোগ ‘কঙ্গোয় টিনটিন’ বইটিতে আফ্রিকান কালোদের নিচু শ্রেণির মানুষ এবং শ্বেতাঙ্গদের শ্রেষ্ঠ হিসেবে দেখানো হয়েছে। অবশ্য টিনটিনের স্রষ্টা রেমি এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন অনেক আগেই এবং ঘটনাটিকে তার তরুণ বয়সের অসাবধানতা হিসাবে অভিহিত করেন। তিনি এ কথাও স্বীকার করে নেন যে, বইটিতে তিনি কেবল তৎকালীন প্রচলিত ধারণারই প্রতিফলন করেছেন। তৎকালীন (১৯০৮-১৯৬০) সময়ে বেলজিয়ামের উপনিবেশ ছিল কঙ্গো এবং উক্ত সময়ে প্রায় ৮০ লাখ মানুষের হত্যার জন্য ওই ঔপনিবেশিক শক্তিকে দায়ী করা হয়ে থাকে। জর্জ রেমি নাৎসিদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন, এমন অভিযোগও শোনা যায়। টিনটিন সিরিজের অনেকগুলো লেখা তৎকালীন নাৎসিদের নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা লো সোয়াখ-এ প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লরেন্স গ্রোভ বলেন, ‘রেমি একজন সুবিধাবাদী মানুষ। তার জনপ্রিয়তার একটি কারণ হলো তিনি সময়ের ধারাকে সঠিকভাবে অনুসরণ করেছেন। যখন নাৎসি হওয়া সুবিধাজনক ছিল, তখন তিনি নাৎসি ছিলেন, যখন ঔপনিবেশিক হওয়া দরকার ছিল তখন তিনি তাই ছিলেন’।

দানাবাঁধা সমালোচনা

টিনটিন নিছক একটি কার্টুন কমিক নয়। এর রাজনৈতিক অবস্থান এবং বক্তব্য আছে। এর কাহিনি যেভাবে উপস্থাপিত হয়েছে সেটা নির্জলা বা অবলা কোনো ব্যাপার নয়। নিছক অ্যাডভেঞ্চার নয় হার্জের এই কমিকস। এর একটা ভাবাদর্শ আছে। টিনটিনকে নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। হার্জের লেখায় স্পষ্টভাবেই ঔপনিবেশিক চিন্তা-চেতনার ভাব ছিল। অনেক সমালোচক তাকে সাম্প্রদায়িকতা আর অ্যান্টি সেমিটিসমের দোষে দুষ্ট বলে দাবি করেন। হার্জের লেখায় ইউরোপিয়ানদের মহান দেখিয়ে অন্যান্য সভ্যতা সংস্কৃতিকে খাট করে দেখানোর একটা প্রচেষ্টা ছিল। তবে মূলত প্রথমদিকের টিনটিন কমিকসে এই বিষয়গুলো বেশি। পরের দিকে হার্জ এই সমস্যা সংশোধনের চেষ্টা করেছেন। সময়ের পট পরিবর্তনের সঙ্গে তার লেখনিতেও টিনটিনের পরিবর্তন হয়।

যেখানে থেমেছে টিনটিনের অ্যাডভেঞ্চার

১৯৬০ থেকে শুরু করে জীবনের শেষ ২৫ বছর হার্জ লিখেছিলেন মাত্র ৫টি টিনটিন। ১৯৫০ সালে স্ত্রী কিকেন্সের কাছ থেকে তিনি আলাদা বসবাস শুরু করার পর হার্জ ঝুঁকে পড়েন তার স্টুডিয়োর এক শিল্পী ফ্যানি ভøামিংকের দিকে। এই সময় মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ায় চিকিৎসক তাকে টিনটিন লেখা স্থগিত রাখার পরামর্শ দেন। তখন তিনি প্রকাশ করেন ‘টিনটিন ইন টিবেট’ (তিব্বতে টিনটিন)। হার্জের মৃত্যুর পর ১৯৮৭ সালে তার স্ত্রী ফ্যানি হার্জ স্টুডিও বন্ধ করে গড়ে তোলেন হার্জ ফাউন্ডেশন। টিনটিনের কপিরাইট তাদের হাতে চলে যায়। হার্জের ইচ্ছা ছিল তার সঙ্গে সঙ্গেই টিনটিনের মৃত্যু হবে। ফাউন্ডেশন সেই ইচ্ছাকে সম্মান দেখিয়ে নতুন করে টিনটিন লেখার অনুমতি দেয়নি। ১৯৮৮ সালে টিনটিন ম্যাগাজিনও বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে হার্জ ও কিকেন্সের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটলে তিনি এঁকে ফেলেন ‘টিনটিন অ্যান্ড দ্য পিকারোস’ (বিদ্রোহীদের দঙ্গলে)। টিনটিন অন্যান্য মাধ্যমেও জায়গা করে নিতে থাকে। ১৯৬১ সালে ‘টিনটিন অ্যান্ড দ্য গোল্ডেন ফ্লিস’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। ফরাসি অভিনেতা জ্যা পিয়েরে ট্যালবট নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। ১৯৬৯ সাল থেকে বেশ কিছু টিনটিন কার্টুন বানানো হয়, একটি ছিল ‘প্রিজনার্স অফ দ্য সান’ (সূর্যদেবের বন্দি)।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: দিবস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 × 5 =