বাংলাদেশের ব্যান্ড প্ল্যাটফরমকে যে ক’জন গীতিকার শক্ত করেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। ব্যান্ডের অসংখ্য জনপ্রিয় গান লিখেছেন এই গীতিকার। ‘একদিন ঘুম ভাঙ্গা শহরে’, ‘সময় যেন কাটে না’, ‘ভালোবাসি ঐ সবুজের মেলা’, ‘হৃদয় কাঁদামাটির কোনো মূর্তি নয়’, ‘চায়ের কাপে পরিচয়’, ‘দখিনা হাওয়ায় ঐ তোমার চুলে’ ‘যতিন স্যারের ক্লাসে’ প্রভৃতি গানগুলো অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু অনেকেই এইসব গানের গীতিকারের নাম জানেন না।
রেঁনেসা ব্যান্ডের অন্যতম জনপ্রিয় গান ‘হৃদয় কাঁদামাটির কোনো মূর্তি নয়’ গানটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্থানান্তরিত হচ্ছে। ‘হে বাংলাদেশ তোমার বয়স’ ‘ভালোবাসি ঐ সবুজের মেলা’ ‘এক চোখে শুধু স্বপ্ন ‘ ‘কোলাহল থেমে গেলো’ ‘তুমি তো বলেছিলে ঝিরিঝিরি বাতাসে’ ‘সেই কবে ছোট্ট দুটি কথা দিয়ে’র মতো জনপ্রিয় গানগুলোর গীতিকার শহীদ মাহমুদ জঙ্গীর আজ জন্মদিন।
৮০র দশকের শুরুতে ব্যান্ডে তার লেখায় উঠে আসে বক্তব্য ও জীবনমুখী গান। এছাড়াও আণবিক শক্তির বিরুদ্ধে, যুদ্ধের বিরুদ্ধেও তার লেখা গান ব্যান্ড সংগীতকে অন্যমাত্রায় উন্নীত করে। সমালোচকদের বিবেচনায় তার লেখা ‘আজ যে শিশু পৃথিবীর আলোয় এসেছে’ স্বাধীন বাংলাদেশে লেখা বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে লেখা শ্রেষ্ঠ গান। সংগীত মহলের অনেকের মতে গীতিকবিতার দিকবদল করা গীতিকবি তিনি।
তাঁর অনেক জনপ্রিয় গানের মধ্যে কয়েকটি গান-
১) হৃদয় কাদামাটির কোন মূর্তি নয়। সুর: নকীব খান। রেনেঁসা।
২) একদিন ঘুম ভাঙা শহরে। (বাংলাদেশের প্রথম সফল রক সংগীত হিসাবে এই গানটিকে বিবেচনা করা হয়। সুর: আইয়ুব বাচ্চু। এল আর বি’র প্রথম গান।)
৩) আজ যে শিশু পৃথিবীর আলোয় এসেছে। সুর: পিলু খান। রেনেঁসা
৪) সময় যেনো কাটে না। সুর: পিলু খান। গায়িকা: সামিনা চৌধুরী।
৫) আমি ভুলে যাই তুমি আমার নও। সুর ও গায়ক: পার্থ বড়ুয়া)
৬) চায়ের কাপে পরিচয়। সুর: পার্থ বড়ুয়া। সোলস।
৭) কি জানি কি এক দিন ছিল। সুর: আইয়ুব বাচ্চু। এল আর বি।
৮)যতীন স্যারের ক্লাসে। সুর: নাসিম আলি খান।
৯) আরো দেশত যাইয়ু তুই। ব্যান্ডে সংগীতের প্রথম মৌলিক আঞ্চলিক গান। সুর: নকীব খান। রেনেঁসা।
১০) আইয়ুনা আইয়ুনা। সুর: পার্থ। সোলস।
১১) হৃদয়ের নীল যদি। সুর: পিলু খান। ডুয়েট। গেয়েছেন সামিনা চৌধুরী ও পিলু খান।
১২) ভালোবাসি ঐ সবুজ মেলা। সুর: নাসিম আলী খান। সোলস।
১৩) এক চোখে শুধু স্বপ্ন অন্য চোখে আগুন। সুর: পার্থ। সোলস।
১৪) ননাইয়া ননাইয়া কথা কই। সুর: নকীব খান। (প্রথম আঞ্চলিক ব্লুজ) রেনেঁসা।
১৫) সেই কবে তোমায় ভেবে। সুরকার ও শিল্পী: পার্থ বড়ুয়া।
১৬) প্রতিদিন প্রতিটি মুহূর্ত কেনো। সুর: আইয়ুব বাচ্চু। গেয়েছেন তপন চৌধুরী। সোলস।
১৭) মুক্তো মানিক পাবার আশায়- ব্যান্ড সংগীতে প্রথম জীবনমুখী গান (সাল ১৯৮১)। সুর: তপন চৌধুরী। তপন/সোলস।
১৮)তৃতীয় বিশ্ব এমনি এক বিশ্বয়। সুর: পিলুখান। রেনেঁসা (ব্যান্ড সংগীতে প্রথম আন্তর্জাতিক এবং যুদ্ধ বিরোধী গান)।
১৯) আনবিক আঘাতে হিরোশিমা কাঁদে। সুর: নাসিম আলি খান। সোলস। বাংলাদেশে প্রথম আনবিক বোমা বিরোধী গান।
২০) হে বাংলাদেশ তোমার বয়স হলো কতো? (মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমৃদ্ধ গান)। সুর: পিলু খান। রেনেঁসা।
২১) এ যেনো তোমার আমার … ( বর্ণবাদ বিরোধী গান)। সুর: পিলু খান। রেনেঁসা।
২২) দিকে দিকে আহাজারি… । সুর: তপন চৌধুরী। (৮০’র দশকের প্রথম দিকে গ্রাম বাংলার করুন অবস্হা নিয়ে জীবনমুখী গান) সোলস।
২৩) এই বুঝি তুমি এলে। সুর: তপন চৌধুরী। গেয়েছেন সামিনা চৌধুরী।
২৪) তুমি আমি নয় আজ চলো গাই গান। (প্রতিবাদের গান) সোলস।
২৫) তুমি নেই প্রজাপতি নেই। সুর: পিয়ারু খান। গেয়েছেন চিত্র নায়ক জাফর ইকবাল।
২৬) এইতো এইখানে বৃষ্টি ভেজা। সুর: আইয়ুব বাচ্চু। গেয়েছেন তপন/সোলস।
২৭) প্রেম প্রেমের মতো। সুরকার ও শিল্পী: আইয়ুব বাচ্চু।
২৮) হাজার বছর পর। সুর: পিলু খান। গেয়েছেন শাকিল খান।
২৯) খোলা চিঠি। সুরকার এবং শিল্পী: সামস্ সুমন।
৩০) এইতো বেশ আছি। সুর: আলাউদ্দীন মাহমুদ সমীর। গেয়েছেন তপন চৌধুরী /স্বরলিপি।
৩১) আমি জানতাম। সুর: সুমন কল্যান। গেয়েছেন শাকিল খান।
৩২) এক পা এগুলেই ভালোবাসা। সুরকার ও শিল্পী: নকীব খান।
৩৩) এরি মাঝে রাত নেমেছে। সুর: নাসিম আলি খান। সোলস।
৩৪) কোলাহল থেমে গেলো। সুরকার ও শিল্পী: নাসিম আলি খান।
৩৫) তুমি তো পটে আঁকা ছবি নও। সুরকার ও শিল্পী: নকীব খান।
৩৬) ভুলে গেছো তুমি কোন সে ভুলে। সুর: আলাউদ্দীন মাহমুদ সমীর। গেয়েছেন শাকিল খান।