বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১০৯তম জন্মদিন আজ। ১৯১৬ সালের আজকের এই দিনে শাহ আব্দুল করিম সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
দারিদ্র্য ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া আব্দুল করিমের সংগীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। শৈশব থেকেই একতারা ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। জীবন কেটেছে সাদাসিধে ভাবে। তাঁর বাবা ইব্রাহিম আলী ও মা নাইওরজান বিবি।
‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’, ‘কেন পিরিতি বাড়াইলা রে বন্ধু ছেড়ে যাইবা যদি’–এমন অসংখ্য জনপ্রিয় গানের রচয়িতা শাহ আবদুল করিম। শাহ আব্দুল করিম বাংলার লোকজ সংগীতের ধারাকে আত্মস্থ করেছেন অনায়াসে। ভাটি অঞ্চলের সুখ-দুঃখ তুলে এনেছেন গানে। ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ-প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তাঁর গান কথা বলে সব অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে।
বাউল শাহ আব্দুল করিম অত্যন্ত সহজ-সরল জীবনযাপন করতেন। গানে-গানে অর্ধ শতাব্দীরও বেশি লড়াই করেছেন ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে। এজন্য নানা লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিলেন তিনি। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, কাগমারী সম্মেলন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে মানুষকে প্রেরণা জোগায় শাহ আবদুল করিমের গান।
২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন ভাটির এই গুণী মানুষ। তাঁর মৃত্যুর কয়েক বছর আগে বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এতে তিনি বাংলাদেশ নয় বাংলা ভাষাভাষী পৃথিবীর মানুষের কাছে পরিচিতি লাভ করেন। পেয়েছেন একুশে পদক।
শাহ আবদুল করিমের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার ও আগামীকাল শুক্রবার দুদিনব্যাপী দিরাই উপজেলার কালনী নদীর তীরে উজানধল গ্রামে অনুষ্ঠিত হবে ‘শাহ আবদুল করিম লোক উৎসব ২০২৪’।