স্মার্ট কানের দুল জানাবে সুস্থ্যতার তথ্য!

আশফাক আহমেদ

নারীদের পছন্দের গহনার তালিকায় কানের দুল অন্যতম। শুধুমাত্র গহনা হিসেবে নয়, খুব শিঘ্রই হয়তো নারীদের পছন্দের স্মার্ট ফ্যাশনপণ্যের তালিকাতেও উঠে আসবে কানের দুল। স্মার্ট ঘড়ি ও আংটির পর স্মার্ট ফ্যাশনপণ্যের তালিকায় এবার নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে স্মার্ট কানের দুলও। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক থার্মাল প্রযুক্তি সংবলিত স্মার্ট দুল তৈরি করছেন। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই দুলের মাধ্যমে মানসিক চাপ, তাপমাত্রা, জ্বর, ব্যায়াম, খাদ্যাভ্যাস ও নারী-স্বাস্থ্যের নানা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। দুলটিতে থাকা স্কিন টেম্পারেচার সেন্সর ত্বকের তাপমাত্রা ও ড্যাংলিং সেন্সর আশপাশের তাপমাত্রা পরিমাপে সাহায্য করে। এটি কানের লতির মাধ্যমে ত্বকের তাপমাত্রা নির্ধারণ করে বলে অনেক বেশি নির্ভুল তথ্য পাওয়া সম্ভব। তাই স্মার্ট দুলটি কবজিতে পরা ঘড়ির চেয়ে বেশি কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ছয়জন মানুষের ওপর এই দুলের কার্যক্ষমতা যাচাই করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, সঠিকভাবে ত্বকের তাপমাত্রা নির্ণয়ে কানের দুলটি স্মার্টওয়াচকে ছাড়িয়ে গেছে।

একবার চার্জ দিয়ে স্মার্ট এই কানের দুল ২৮ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে। এতে ডেটা আদান-প্রদানের জন্য কম শক্তি খরচ করে এমন ব্লুটুথ ব্যবহার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে দুলটি সৌরশক্তি ও কাইনেটিক বা গতিশক্তি দিয়ে চার্জ দেওয়া যাবে। তখন চার্জ দিতে কান থেকে দুল খুলতে হবে না। স্মার্ট দুল নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা শেষ হলেও এই দুল হাতে পেতে আগ্রহীদের অপেক্ষা করতে হবে। কারণ আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এর কার্যকারিতার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে দীর্ঘ সময় স্মার্ট ইয়ার রিংটি ব্যবহার করলে অ্যালার্জিজনিত কোনো সমস্যা হবে কি না, তা এখনো জানা যায়নি।

শাওমির ১৪ সিরিজের ফোনে বিশেষ ক্যামেরা

এআই ফিচার ও বিশেষ ক্যামেরাযুক্ত নতুন ১৪ সিরিজের স্মার্টফোন বাজারে এনেছে চীনের মোবাইল নির্মাতা কোম্পানি শাওমি। নতুন ‘শাওমি ১৪ আল্ট্রা’ ফোনটিতে রয়েছে একটি কোয়াড ক্যামেরা বা চারটি ক্যামেরার কনফিগারেশন। একই ফোনের কম্প্যাক্ট সংস্করণ ‘শাওমি ১৪’ ফোনটিতে ট্রিপল ক্যামেরা বা তিনটি ক্যামেরার কনফিগারেশন রয়েছে। এ ছাড়া, ‘১৪ আল্ট্রা’ ফোনটিতে শাওমি ও লাইকার যৌথভাবে তৈরি ‘লাইকা সুমিলাক্স’ অপটিকাল লেন্স রয়েছে। আরো থাকছে লাইকার ৭৫ মিলিমিটার ফ্লোটিং টেলিফটো লেন্স ও এফ ১.৬ মাপের বড় অ্যাপারচার।

ফোনগুলোতে লার্জ এআই মডেলের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। যেমন, একটি টুল রয়েছে যা রিয়েল-টাইম ট্রান্সক্রিপশন করতে পারে বা সরাসরি কথাকে নোট আকারে লিখতে পারে। আরেকটি টুল রয়েছে যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী একটি ছবির বর্ণনা দিলে গ্যালারি থেকে সেটি খুঁজে বের করতে পারবে এআই। এ ছাড়াও, শাওমি ‘স্মার্ট ব্যান্ড ৮ প্রো’, ‘শাওমি ওয়াচ এস ৩’ এবং ‘শাওমি ওয়াচ ২’-এর মতো নতুন গ্যাজেট উন্মোচন করেছে কোম্পানিটি। আইডিসির তথ্য মতে, শাওমি গত বছর স্মার্টফোন বাজারের শেয়ারে বিশ্বব্যাপী তৃতীয় স্থানে ছিল। যা ওই সময়ে বিশ্বব্যাপী  বিক্রির ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। তালিকায় ২০ দশমিক ১ শতাংশ নিয়ে শীর্ষে অ্যাপল ও ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে স্যামসাং।

ফি ছাড়াই এক্সে মিলবে অডিও-ভিডিও কলিং সুবিধা

প্রিমিয়াম সেবার বাইরে থাকা ব্যবহারকারীদের জন্যও অডিও ও ভিডিও কলিংয়ের সুবিধা আনছে সামাজিকমাধ্যম এক্স। গত বছর প্রাথমিকভাবে আইওএস ব্যবহারকারীদের জন্য এই ফিচারটি চালু করে এক্স। যেখানে অ্যাপ থেকে অন্যকে কল করার সুবিধা পান আর্থিক ফি দেওয়া বা প্রিমিয়াম ব্যবহারকারীরা। প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেটের মতে, এক্সকে ইলন মাস্ক এভ্রিথিং অ্যাপ বানানোর যে লক্ষ্য তারই একটি ধাপ। ইলন মাস্ক জানান, ফিচারটি যে টেকসই কোম্পানি সে আত্মবিশ্বাস পেলেই অডিও-ভিডিও কলিংয়ের সুবিধাটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেবে এক্স। তবে, অ্যাপের ‘ডিএম (ডাইরেক্ট মেসেজ)’ অপশনে থাকা ফোন আইকনে চাপ দিলে এখনও এক্সের প্রিমিয়াম সেবায় যোগ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এক্স এর অফিসিয়াল সাপোর্ট পেইজ বলছে, ফিচারটি এখন সকল অ্যাকাউন্টেই ব্যবহার করা যাবে, যেখানে ব্যবহারকারীরা কল করার ও রিসিভ করার সুযোগ পাবেন। আর এ ক্ষেত্রে দুই পক্ষকেই অন্তত একবার ডাইরেক্ট মেসেজিং থেকে যোগাযোগ করতে হবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে অ্যাপে থাকা সকলের কাছ থেকেই কল রিসিভের সুবিধা পেতে পারেন। এ সুবিধা ব্যবহারের অ্যাপের ডিএম সেটিংয়ের মেনুতে গিয়ে স্বয়ংক্রিয় অডিও ও ভিডিও কলের সুইচে চাপতে হবে।

যেসব কারণে স্মার্টফোন পরিবর্তন প্রয়োজন

বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার ও ফাইল সংরক্ষণের কারণে স্মার্টফোনের স্টোরেজ প্রায় পূর্ণ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ব্যবহারের কারণে ডিভাইসের পক্ষে যথাযথভাবে স্টোরেজ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। এটি সেলফোন বা স্মার্টফোনের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া ও পুরানো হয়ে যাওয়ার লক্ষণ। এ সময় প্রতিনিয়ত ক্যাশ ফাইল মুছে ফেলা, অ্যাপ আনইনস্টলসহ বিভিন্নভাবে স্টোরেজ বাড়াতে চাইলেও সম্ভব হয় না।

স্বাভাবিকভাবে দীর্ঘদিন কোনো স্মার্টফোন বা মোবাইল ব্যবহার করলে ব্যাটারি পারফরম্যান্স কমতে শুরু করে। চার্জ হতে দেরি হওয়া, ব্যাটারি ফুলে যাওয়াসহ দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যাওয়া অন্যতম কারণ। ফলে পুরো দিনের ব্যাকআপের জন্য পাওয়ার ব্যাংকের ওপর নির্ভর করতে হয়। ব্যাটারি পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাধান পাওয়া গেলেও ব্র্যান্ডভেদে এ কাজ সম্পাদনে ব্যয় ও সময়ের বিষয়ও গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটারি পরিবর্তনের খরচ যদি বেশি হয়ে যায় সেক্ষেত্রে নতুন স্মার্টফোন কেনাই ভালো।

দীর্ঘদিন একটি সেলফোন ব্যবহারের পর বিভিন্ন কারণে এর সক্ষমতা কমতে থাকে। এগুলো সমাধানে আলাদা উপায় থাকলেও পরিপূর্ণ মুক্তি নেই। ক্যাশ ফাইল মুছে ফেলা, অ্যাপ আনইনস্টলসহ অনেক সময় সেলফোন রিসেট দিলেও সমস্যার সমাধান হয় না। যে কারণে পুরনো ডিভাইস মেরামত করার চেয়ে নতুন সেলফোন কেনা ভালো।

সেলফোনের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। নির্ধারিত সক্ষমতার বাইরে কাজ করলে যেকোনো সেলফোনের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। দীর্ঘ সময় তাপমাত্রা বেশি থাকলে তা ব্যবহারকারী ও ব্যাটারির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দুটি কারণে সেলফোনের তাপমাত্রা বেড়ে থাকে। প্রথমত, সক্ষমতার বাইরে  গিয়ে মোবাইলের ওপর চাপ তৈরি এবং অ্যাপ অনুযায়ী কাজ না করতে পারা।

সেলফোন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এর বাহ্যিক ক্ষতির বিষয়টি প্রচলিত। এর মধ্যে বাটন বা টাচ কাজ না করা, চার্জিং পোর্টের সমস্যা, ডিসপ্লে ফেটে যাওয়ার মতো বিষয় রয়েছে। মেরামতের সুযোগ থাকলেও এসবের পেছনে সাধারণত বেশি ব্যয় করতে হয়।

অ্যান্ড্রয়েড কিংবা আইওএস দুই অপারেটিং সিস্টেমেই প্রতিনিয়ত আপডেট আসছে। সেদিক থেকে নির্দিষ্ট সময় পর অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনের আপডেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে আগের কোনো অ্যাপ পুরানো ডিভাইসে ব্যবহার করা যায় না। এর মাধ্যমে একটি বিষয় স্পষ্ট, পুরানো সেলফোনে আপডেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করা যাবে না।

বাজারে নতুন মডেলের কোনো স্মার্টফোন এলে সেটির জন্য আলাদা অ্যাকসেসরিজ থাকে। এর মধ্যে গ্লাস প্রটেক্টর, কেসিংসহ বিভিন্ন জিনিস রয়েছে। সময়ের সঙ্গে সরবরাহকারীরা বাজার থেকে পুরানো সব অ্যাকসেসরিজ সরিয়ে নেয়। এমন নানা সমস্যা দেখা দিলে স্মার্টফোন পরিবর্তন করাই একটা সময় যৌক্তিক কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৬ এর ছবি ফাঁস

স্যামসাংয়ের ফ্লোডিং ফোন সিরিজের গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৬ এর ছবি ফাঁস হয়েছে। এসব প্রতীকি ছবিতে দেখা যায়, পুরুত্ব বৃদ্ধি ছাড়া ফোল্ডিং ফোনটির নকশায় তেমন কোনো পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, শক্তিশালী ব্যাটারি যুক্ত করার জন্য মডেলটির পুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে।

আগের গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৫ মডেলের ক্ল্যামশেল-স্টাইলটি (ঝিনুকের মতো নকশা) এই ফোনেও অপরিবর্তিত থাকবে। গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৬ মডেলের পেছনে আনুভূমিকভাবে ডুয়েল ক্যামেরা থাকবে। আগের মতোই সাদামাটা নকশা দেখা গেছে।

প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট স্মার্টপ্রিক্সের এক প্রতিবেদনে মডেলগুলোর ছবি প্রকাশ করেন স্টিভ হেমারস্টোফার। এসব ছবি থেকে বোঝা যায়, স্মার্টফোনটি মিন্ট (হালকা সবুজ) রঙের হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে এই মডেল উন্মোচন করবে স্যামসাং।

আগের বছরের মডেলের মতো গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৬ ফোনের বাইরের ডিসপ্লের আকার হবে ৩ দশমিক ৪ ইঞ্চি। আর ভেতরের প্রধান ডিসপ্লের আয়তন হবে ৬ দশমিক ৭ ইঞ্চি। প্রধান ডিসপ্লের ভাঁজের জায়গায় হালকা দাগ চোখে পড়বে। প্রতিটি ডিসপ্লেতে ১২০ হার্টজ রিফ্রেস রেট থাকবে। মডেলটির ডান দিকেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ও ভলিউম বাটন থাকবে। তবে দাম সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রতিবেদনটিতে প্রকাশ করা হয়নি।

মডেলটির সম্ভাব্য স্পেসিফিকেশন

আয়তন: ১৬৫.০ বাই ৯১.৯ বাই ৭.৮ এমএম, অপারেটিং সিস্টেম: অ্যান্ড্রয়েড ১৪ ভিত্তিক ৬.১, চিপসেট: স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ৩, মেমোরি: ১২ জিবি, ইন্ট্যারন্যাল স্টোরেজ: ৫১২ জিবি, ব্যাটারি: ৪০০০ এমএএইচ, রঙ: মিন্ট (হালকা সবুজ)

গ্যালাক্সি এস২৪ এর এআইভিত্তিক ফিচারগুলো সামসাংয়ের ফোল্ডিং ফোনগুলোতেও নিয়ে আসা হবে বলে প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন। ২০২৩ সালের মোট স্মার্টফোন বিক্রির ১ দশমিক ৬ শতাংশই হলো ফোল্ডেবল স্মার্টফোন এবং এসব ফোনের ১৮৩ লাখ ইউনিট বিক্রি হয়েছে। আর ২০২৪ সালে এটি বেড়ে ২ দশমিক ২ শতাংশ ও ২৫২ লাখ ইউনিট হতে পারে। আর ২০২৭ সালে ৫ শতাংশ ও ৭০০ কোটি ইউনিটে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: টেক টেন্ড

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

thirteen − 1 =