সুইডেনের পার্লামেন্ট বুধবার সাবেক অর্থমন্ত্রী ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসনকে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে। ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন সম্প্রতি ক্ষমতাসীন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নতুন নেতা হয়েছেন। এর আগে তিনি দেশটির অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন।
চলতি বছরের শুরুতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফান লোফভেন এর জায়গায় ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসনকে পার্টির নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাছাই করা হয়।
এই ঘটনা সুইডেনের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গত কয়েক দশক ধরেই সুইডেনকে লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে ইউরোপের সবচেয়ে প্রগতিশীল দেশগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে আসছে। কিন্তু দেশটির শীর্ষ রাজনৈতিক পদে এখনো কোনো নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। লফভেনের সরকার নিজেকে ‘নারীবাদী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কাজের কেন্দ্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতাকে মূলনীতি হিসেবে স্থাপন করেছে।
অ্যান্ডারসনকে সমর্থনকারী আমিনেহ কাকাবাভেহ নামের একজন স্বাধীন আইন প্রণেতা সংসদে এক বক্তৃতায় উল্লেখ করেন যে, সার্বজনীন এবং সমান ভোটাধিকার প্রবর্তনের সিদ্ধান্তের ১০০ তম বার্ষিকী উদযাপন করছে সুইডেন।
ইরানি কুর্দি বংশোদ্ভূত কাকাবাভেহ বলেন, ‘যদি নারীদের শুধুমাত্র ভোট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, কিন্তু তারা কখনোই সর্বোচ্চ পদে নির্বাচিত না হয়, তাহলে গণতন্ত্র সম্পূর্ণ হবে না। এই সিদ্ধান্তে প্রতীকী কিছু আছে’।
সুইডেনের ৩৪৯ আসনের সংসদে ১১৭ জন আইনপ্রণেতা অ্যান্ডারসনকে হ্যাঁ ভোট দিয়েছেন। ১৭৪ জন তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর ৫৭ জন ভোটদানে বিরত ছিলেন এবং একজন আইনপ্রণেতা অনুপস্থিত ছিলেন।
১৭৪ জন আইন প্রণেতা অ্যান্ডারসনের বিরুদ্ধে ভোট দিলেও তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। কারণ, সুইডেনের সংবিধান অনুযায়ী ন্যূনতম ১৭৫ জন আইন প্রণেতা কারো বিরোধিতা না করলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন।
নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত লোফভেন সুইডিশ সরকারের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেবেন। আগামী শুক্রবার নতুন সরকার গঠন করা হতে পারে। অ্যান্ডারসন সম্ভবত তার সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট এবং গ্রিন পার্টির সঙ্গে একটি দ্বিদলীয়, সংখ্যালঘু সরকার গঠন করবেন। সুইডেনের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আগামী ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
দেশ রূপান্তর