ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার তালিকায় আজিজ খান

ফোর্বস প্রকাশিত ২০২৪ সালের বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান। এই তালিকায় আছেন ৭৮ দেশের ২ হাজার ৭৮১ শতকোটিপতি। তালিকায় আজিজ খান আছেন ২ হাজার ৫৪৫ নম্বরে। তার মোট সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার এবং আয়ের খাত হিসেবে রয়েছে জ্বালানি।

ফোর্বসের তথ্য অনুসারে, আজিজ খান বর্তমানে সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা। এর আগে তিনি দেশটির ৪১তম ধনী হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিলেন। বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপের বিদ্যুৎ, বন্দর, ফাইবার অপটিকস, রিয়েল এস্টেট, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসসহ নানা ব্যবসা আছে।

ধনীদের তালিকায় এখন সবচেয়ে এগিয়ে ফরাসি ধনকুবের বার্নার্ড আর্নল্ট ও তার পরিবার। ফোর্বস ম্যাগাজিনের রিচেস্ট ইন ২০২৪ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই পরিবার নিজেদের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বার্নার্ড আর্নল্ট ইলন মাস্ককে পেছনে ফেলে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর আসন দখল করেন। বিলাসবহুল পণ্য এলভিএমএইচ মোয়েত হেনেসি লুই ভিতনের এই চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহীর সম্পদমূল্য ২২ হাজার ২৪০ কোটি ডলার। শীর্ষ শতকোটিপতির তালিকা তৈরিতে ফোর্বস গত ৮ মার্চ থেকে স্টকমূল্য ও মুদ্রার বিনিময় মূল্য ব্যবহার করেছে। আর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ধনীর তালিকায় শীর্ষ ২০-এর ১১ জনই প্রযুক্তি খাতের।

২০২৪ সালের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থান টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের। তার সম্পদমূল্য ১৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। আমাজনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ১৯ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের সম্পদ নিয়ে আছেন তৃতীয় অবস্থানে। ১৭ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছেন সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। ১৫ হাজার ৩৪০ কোটি ডলার মূল্যের সম্পদ নিয়ে পঞ্চম ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন।

বিশ্বে আগে শতকোটিপতির সংখ্যা কখনোই এত বেশি ছিল না। এখন সব মিলিয়ে শতকোটিপতি আছেন ২ হাজার ৭৮১ জন। এই সংখ্যাটা গত বছরের চেয়ে ১৪১ জন বেশি। ২০২১ সালে শতকোটিপতিদের সংখ্যাগত সর্বশেষ রেকর্ডের চেয়ে ২৬ জন বেশি।

শতকোটিপতির সংখ্যার সঙ্গে তাদের মোট সম্পদমূল্য বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে এখন তাদের সম্পদমূল্য ১৪ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার; এই পরিসংখ্যান ২০২৩ সালের চেয়ে ২ লাখ কোটি ডলার বেশি এবং ২০২১ সালের সর্বশেষ রেকর্ডের চেয়ে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলার বেশি।

ফোর্বসের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে আছেন দানবীর ওরাকল অব ওমাহা ওয়ারেন বাফেট। এখন তিনি ১৩ হাজার ৭৭০ কোটি ডলারের সম্পদের মালিক। সপ্তম অবস্থান মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস; তার সম্পদমূল্য ১২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। ১২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের সম্পদ নিয়ে অষ্টম স্থানে আছেন লস অ্যাঞ্জেলেস ক্লিপার্সের স্বত্বাধিকারী স্টিভ বালমার। দশমে থাকা অ্যালফাবেটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের সম্পদমূল্য ১১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। ১১তম অবস্থান অ্যালফাবেটের আরেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন। তার আছে ১১ হাজার কোটি ডলারের সম্পদ। টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান আমেরিকা মোভিলের মালিক কার্লোস স্লিম হেলুর অবস্থান ১৪তম। মেক্সিকোর এই শীর্ষ ধনীর মোট সম্পদের পরিমাণ ১০ হাজার ২০০ কোটি ডলার। ১৬তম স্থানে আছেন ডেল টেকনোলজিসের মালিক মাইকেল ডেল। তার রয়েছে ৯ হাজার ১০০ কোটি ডলারের সম্পদ। তালিকার ২০তম স্থানে আছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা জেনসেন হুয়াং। গ্রাফিকস চিপ নির্মাতা এনভিডিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা হুয়াংয়ের সম্পদের পরিমাণ ৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলার।

ধনীদের তালিকায় মার্কিনিদের পরই রয়েছেন চীনারা। হংকংয়ের নাগরিকসহ চীনের মূল ভূখণ্ডের ধনীদের মধ্যে শতকোটিপতির সংখ্যা ৪৭৩। ২০০ বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতি নিয়ে তালিকায় তৃতীয় অবস্থান ভারতের, দেশটির ধনীদের জন্য এটি নতুন রেকর্ড।

ধনকুবেরদের তালিকায় ১১তম অবস্থান ভারত ও এশিয়ার শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি। তার সম্পদমূল্য ১১ হাজার ৬২০ কোটি ডলার। আর ৮ হাজার ৪৭০ কোটি ডলারের সম্পদ নিয়ে গৌতম আদানি আছেন ১৭তম অবস্থানে।

শতকোটিপতিদের তালিকায় স্থান পাওয়া দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের সম্পদমূল্য গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। কমেছে এক-চতুর্থাংশ ধনীর সম্পদমূল্য। শীর্ষ ২০ ধনীর সম্পদমূল্য সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। তাদের সম্পদমূল্য বেড়েছে সামগ্রিকভাবে ৭০ হাজার কোটি ডলার। জাতীয়তার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি সম্পদ বেড়েছে মার্কিন ধনীদের। তালিকায় এখন মার্কিন ধনীদের সংখ্যা রেকর্ড ৮১৩ জনে উঠেছে; তাদের সম্মিলিত সম্পদমূল্য ৫ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

2 + 10 =