বায়ার্নের ১১ বছরের আধিপত্য খর্ব করে বুন্দেসলিগার শিরোপা জিতলো লেভারকুসেন

১২০ বছরের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মত জার্মান বুন্দেসলিগার শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখিয়েছে বায়ার লেভারকুসেন। রোববার ওয়ার্ডার ব্রেমেনকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বায়ার্ন মিউনিখের ১১ বছরের শিরোপার আধিপত্য ভাঙতে সক্ষম হয়েছে লেভারকুসেন।

জাভি আলোসনোর দল পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখে লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে। পুরো মৌসুমে দারুন ফর্মে থাকা লেভারকুসেন এখনো পর্যন্ত লিগে অপরাজিত রয়েছে। ফ্লোরিয়ান রিটজের হ্যাটট্রিক ও ভিক্টর বোনিফেস এবং গ্রানিত জাকার গোলে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় লেভারনকুসেনের ৪৩ ম্যাচে অপরাজিত থাকার ধারা অব্যাহত থাকলো।

এ পর্যন্ত পাঁচবার দ্বিতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করলেও শিরোপার স্বাদ পাওয়া হয়নি। এই শিরোপার মাধ্যমে লেভারকুসেনর তাদের কুখ্যাত ‘নেভারকুসেন’ তকমা থেকেও সড়ে আসতে সমর্থ হয়েছে। শিরোপা জয়ের আনন্দে কাল ম্যাচ শেষের ১০ মিনিট আগেই উচ্ছসিত সমর্থকরা উদযাপন শুরু করে দেয়। একে একে তারা সাইডলাইনে জড়ো হতে শুরু করে।

যদিও ম্যাচ তখনো চলছিল। লেভারকুসেনের খেলোয়াড়রা এক পর্যায়ে তাদের অনুরোধ জানায় গ্যালারিতে ফিরে যেতে। ৯০ মিনিটে পর পুরো স্ট্যান্ডই খালি হয়ে যায়, তখন সবাই ছিল মাঠের ভিতর। আবেগ আপ্লুত সমর্থকরা এ সময় খেলোয়াড়দের সাথে তাদের এই বিজয় উৎসব উপভোগ করতে থাকে।

এই জয়ে লেভারকুসেনের পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯। জার্মান লিগ ইতিহাসে ২৯ ম্যাচ পর এটাই সর্বোচ্চ পয়েন্ট। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা বায়ার্ন ও স্টুটগার্টের থেকে লেভারকুসেন ১৬ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে।

ম্যাচের হ্যাটট্রিকম্যান রিটজ বলেন, ‘এটা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। আমি বলতে পারবো না আমরা কি করেছি। আমার এখন ড্রেসিং রুমে ফিরে গিয়ে শান্ত হয়ে বসতে হবে। ইতোমধ্যেই আমরা সমর্থকদের সাথে পার্টি শুরু করে দিয়েছি।’

ম্যাচ শুরুর ৯০ মিনিট আগে স্টেডিয়ামে এসে উপস্থিত হয় লেভারকুসেনের বাস। ৩০ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ঘরের মাঠ বে এরেনাতে কাল পুরোটা জুড়েই ছিল কালো-লাল জার্সিধারীদের আধিপত্য। ক্লাব কোচ জাভি আলোনসোর সম্মানে শহরের বিমসার্ক স্ট্রিটটি সমর্থকরা সাময়িক ভাবে ‘জাভি আলোনসো স্ট্রিট’ নামে আখ্যায়িত করেছে।

শিরোপা জয় নিশ্চিত হবার পর আলোনসোর এখন মূল লক্ষ্য বৃহস্পতিবার ইউরোপা লিগে লন্ডনে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে ম্যাচটি। ঐ ম্যাচকে সামনে রেখে গতকাল মূল একাদশে সাতটি পরিবর্তন এনেছিলেন আলোনসো। এ কারনে বদলী বেঞ্চে ছিলেন রিটজ, জেরেমি ফ্রিমপং ও এ্যালেক্স গ্রিমালডো। এদের মধ্যে মৌসুমে এই প্রথম শুরুতে খেলার সুযোগ পাননি গ্রিমালডো। তার পরিবর্তে মাঠে নামা পিয়েরো হিনকেপি শুরুতেই গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।

ব্রেমেনের জুলিয়ান মালাতিনির বিপক্ষে জোনাস হফম্যানের আদায় করা পেনাল্টি থেকে বোনিফেস লেভারকুসেনকে এগিয়ে দেন। রেফারি সরাসরি পেনাল্টির নির্দেশ দিলেও পরবর্তীতে ভিএআর পরীক্ষা করে তা নিশ্চিত হতে হয়েছে। বিরতির ঠিক আগে হফম্যান আবারো গোলের সুযোগ তৈরী করেছিলেন। কিন্তু তার পাস থেকে আমিনে আদলির শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা আগ্রাসী হয়ে খেলা শুরু করে ব্রেমেন। কিন্তু ৬০ মিনিটে বোনিফেসের পাস থেকে জাকার শক্তিশালী শটে লেভারকুসেনের ব্যবধান দ্বিগুন হলে ব্রেমেনর সব স্বপ্ন ভেঙে যায়।

আদিলের পরিবর্তে মাঠে নামা রিটজ আট মিনিট পর জাকার মত প্রায় একইভাবে বল জালে জড়ান। ম্যাচ শেষের সাত মিনিট আগে রিটজ তার দ্বিতীয় গোল করেন। এরপর ৯০ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন রিটজ।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

four × 5 =