কান উৎসবে প্রথমবার সৌদি সিনেমা

প্রতিবছর ফ্রান্সের কান সৈকতে বসে চলচ্চিত্র উৎসব। সিনেমা নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ আয়োজনে সারা বিশ্বের নির্মাতা, প্রযোজক, অভিনয়শিল্পীরা একত্র হন। আগামী ১৪ থেকে ২৫ মে আয়োজন করা হবে উৎসবের ৭৭তম আসর। কানের ৭৭ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম সেখানে জায়গা পেয়েছে সৌদি আরবের সিনেমা। উৎসবের আঁ সার্তে রিগার্ড বিভাগে দেখানো হবে সৌদি চলচ্চিত্র নির্মাতা তৌফিক আলজায়েদির ‘নোরাহ’। এ বিভাগে স্থান পাওয়া বিভিন্ন দেশের আরও ১৪টি সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে নোরাহ। গত বছরের ডিসেম্বরে জেদ্দায় আয়োজিত রেড সি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে নোরাহর প্রিমিয়ার হয়েছিল। এবার কান উৎসবের মাধ্যমে সারা বিশ্বের দর্শকদের কাছে পৌঁছে যাবে সিনেমাটি। এ উৎসবে অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে সৌদি সিনেমা আরও অনেক ধাপ এগিয়ে গেল বলে মত সিনেমাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।

নোরাহর নেপথ্যে

নোরাহর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মারিয়া বাহরাভি। এটি তাঁর প্রথম সিনেমা। নোরাহ সিনেমায় অভিনয়ের পর থেকে সৌদি সিনেমার সম্ভাবনাময় মুখ হিসেবে আলোচিত হচ্ছেন মারিয়া। তাঁর বিপরীতে নাদির চরিত্রে অভিনয় করেছেন সৌদির জনপ্রিয় অভিনেতা ইয়াকুব আলফারহান। সৌদির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় প্রতিবছর চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সেখানে তরুণ নির্মাতারা তাঁদের চিত্রনাট্য জমা দেন। সিনেমা নির্মাণের জন্য নির্বাচিত চিত্রনাট্যকে অনুদান দেয় সৌদি সরকার। ২০১৯ সালে এ প্রতিযোগিতায় জিতেছিল নোরাহ। সৌদি সরকারের অর্থায়নে পরবর্তী সময়ে সিনেমাটি নির্মাণের সুযোগ পান তৌফিক আলজায়েদি।

কী নিয়ে নোরাহ

নব্বইয়ের দশকের সৌদি আরবের সমাজবাস্তবতার গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে নোরাহ। সংগীত, চিত্রকলাসহ সব রকমের শিল্প তখন নিষিদ্ধ ছিল সৌদিতে। সিনেমার মূল চরিত্র নোরাহ, এক নিরক্ষর গ্রামীণ কিশোরী। পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পর তার জীবনে আরও জটিলতা নেমে আসে। এ শৃঙ্খল থেকে মুক্তির চেষ্টা করতে থাকে নোরাহ।

এমন পরিস্থিতিতে নোরাহর সঙ্গে পরিচয় হয় নাদিরের। নাদির মূলত একজন চিত্রশিল্পী। সৌদিতে সব রকমের শিল্পকলা নিষিদ্ধ হওয়ার পর তাকে কাজ নিতে হয় এক স্কুলে। নাদিরের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর শিল্পের প্রতি আগ্রহ বাড়ে নোরাহর। উন্নত জীবনের আশায় গ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে সে।

কানে ভারতীয় সিনেমা

কিংবদন্তি নির্মাতা সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেনের মাধ্যমে কান উৎসবে জায়গা করে নিয়েছিল ভারতীয় সিনেমা। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে কানের তালিকায় ছিল না ভারতের কোনো সিনেমার উপস্থিতি। দীর্ঘ ৩০ বছর পর এবার কান উৎসবে জায়গা পেয়েছে দুটি ভারতীয় সিনেমা। মূল প্রতিযোগিতায় লড়বে পায়েল কাপাডিয়ার ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ এবং আঁ সার্তে রিগার্ডে প্রতিযোগিতা করবে সন্ধ্যা সুরির ‘সান্তোষ’।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

1 × 5 =