বাংলাদেশের উড়ন্ত সূচনা

সালেক সুফী

ডাচ বাংলা ব্যাঙ্ক টি ২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে গতকাল জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অনায়াস ৮ উইকেটে জয় ছিল প্রত্যাশার প্রাপ্তি।  টস জয় করে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ।  তাসকিন এবং সাইফুদ্দিনের দুরন্ত বোলিং জুটির কল্যানে ৭.৪ ওভারে ৪১ রানে ৭ উইকেট তুলে নিয়ে কোনঠাসা করে ফেলে। ৮ম উইকেট জুটিতে ক্লাইভ মাদানদে (৪৩) এন্ড ওয়াশিংটন মাসাকাদজা (৩৪) ৭৫ রান যোগ করে অতিথি দলের ভরাডুবি রক্ষা নিশ্চিত করে। ১২৪ রানে শেষ হয় ইনিংস। ব্যাটিং করতে এসে শুরুতেই লিটন দাসের উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। তরুণ তানজিদ তামিম অভিষেক ইনিংসে শুরুতে ভাগ্যের সহায়তা পায়।  কিন্তু সাহসী জুনিয়র তামিম ঝুঁকি নিয়ে বীরের মত ব্যাটিং করতে থাকে। দুইবার বৃষ্টি বাধা হয়ে আসে। অধিনায়ক শান্তর (২১) দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫২ রান আসে। জিম্বাবুয়ে বার বার ক্যাচ মিস করতে থাকলে ম্যাচটি হাত থেকে বেরিয়ে যায়। অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে তরুণ তামিম (৪৭ বলে ৬৭*) এবং তাওহীদ হৃদয় (১৮ বলে ৩৩*) দ্রুত ৬৯ রান যোগ করে সহজ ৮ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে। ৫ ম্যাচ সিরিজে ১-০ এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

দুই দলের তুলনামূলক বিবেচনায় শক্তি সামর্থে যোজন যোজন ব্যাবধান। টি ২০ বিশ্ব কাপ সামনে রেখে সিরিজ থেকে কতটুকু অর্জন হবে বাংলাদেশের সেটি সহজেই অনুমেয়। দেখতে হবে বৈরী প্রকৃতিতে খেলে বাংলাদেশের মূল খেলোয়াড়দের ওয়ার্ক লোড যেন নিয়ন্ত্রিত থাকে। এই সিরিজ খেলার জন্য আইপিএলে ভালো খেলতে থাকা মুস্তাফিজুর রহমানকে ডেকে আনা অনেকটাই মশা মারতে কামান দাগা বললে অত্যুক্তি হবে না। আমার মনে হয় না এই সিরিজে মুস্তাফিজকে আদৌ প্রয়োজন হবে। তবে দীর্ঘ দিন খেলার বাইরে থাকা সাকিবকে ম্যাচ অনুশীলন করানো যেতে পারে।

ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন ডিপার্টমেন্টে কাল অতিথি দল ছিল বিবর্ণ। তাসকিন (৩/১৪) কাল দুরন্ত গতিতে বোলিং করেছে। বেশ কিছু দিন পরে দলে ফেরা সাইফুদ্দিন (৩/১৫) ওকে দিয়েছে যোগ্য সমর্থন।  একসময় ৪১ রানে ৭ উইকেট হারানো অতিথি দল উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান ক্লাইভ মাদানদে (৪৩) এবং ওয়াশিংটন মাসাকাদজার (৩৪) ৮ম উইকেট জুটির ৭৫ রানের কল্লানে ১২৪ রান পর্যন্ত পৌঁছায়। কিন্তু বাংলাদেশের সামনে এহেন স্কোর কোন সমস্হায়ী ছিল না।

জবাবে ব্যাটিং করতে এসে শুরুতেই অনিশ্চিত ব্যাটিং ফরমে থাকা লিটন দ্রুত ফিরে যায়। সহসাই ফিরতে পারতো অভিষিক্ত তানজিদ তামিম। ভাগ্য সহায় ছিল বীরের মেজাজে খেলতে থাকা তরুণ তামিম।  অধিনায়ক শান্তর (২১) দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫১ রান যুক্ত হয়। বৃষ্টি দুই বার হানা দিলেও ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়নি। বরং তরুণ তামিম (৬৭*) এবং তাওহীদ হৃদয় (৩৩*)  অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে রানের বন্যা সৃষ্টি করে বাংলাদেশের অনায়াস ৮ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে। কাঙ্খিত ভাবেই সিরিজে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ।

ফিরে তাকালে বাংলাদেশের প্রাপ্তি অনেক। তরুণ তামিমের সাহসী ব্যাটিং (৪৭ বলে ৮ চার এবং দুই ছয়ে সাজানো অপরাজিত ৬৭ রান), তাসকিন (৩/১৪) এবং দীর্ঘ দিন পরে পেস বোলিং অল রাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের (৩/১৫) দারুন প্রত্যাবর্তন শুভ লক্ষণ। তবে দ্রুত ফর্মে ফিরতে হবে লিটন কুমার দাসকে।  যদিও অপেক্ষাকৃত কম শক্তির জিম্বাবুয়ে দলের বিরুদ্ধে জয়ে আত্মতুষ্টির কারণ দেখি না। তবুও প্রতিটি জয় দলের আস্থা সৃষ্টি করে। অতিথি দলটি সিরিজ থেকে শিক্ষা নিবে। বাংলাদেশের সুযোগ আছে সঠিক কম্বিনেশন যাচাই করার।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

16 − eleven =