তিনদিন পর সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে

তিনদিন পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের আমরবুনিয়া এলাকার আগুন। তবে এখনও পুরোপুরি নেভেনি। পুরোপুরি নেভাতে আরও দুই-তিনদিন পর্যবেক্ষণ করা হবে আগুন। সোমবার (০৬ মে) দুপুরে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম আমরবুনিয়া এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে জেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিমান বাহিনী একযোগে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। প্রায় দুদিনের চেষ্টায় আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। এটা শুধু সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। এখন প্রশ্ন থাকে নির্বাপনের, আসলে সুন্দরবনের আগুন নির্বাপন অনেক কঠিন ব্যাপার। এর জন্য কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। আমরা তীক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আগামী দুই-তিনদিন বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এখানে পর্যবেক্ষণে থাকবেন।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এটা সাধারণ কোনো আগুন ছিল না। বনের এ আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ফায়ার ক্যানাল পদ্ধতি, বুশ ফায়ার টার্মিং পদ্ধতি, ফায়ার ব্রেক পদ্ধতিসহ নানা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে আমরা ফায়ার ক্যানাল তৈরি করেছি।

এদিকে পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণের পরও বনের মধ্যে ধোঁয়া দেখা গেছে। বনরক্ষী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা বিভিন্ন জায়গায় আগুনের কুণ্ডলি খুঁজছেন। কোথাও ধোঁয়া দেখলে বন বিভাগের কর্মীরা পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক কবির মৃধা বলেন, আসলে এখনও আগুন নেভেনি। আমরা বন বিভাগের সঙ্গে বনের মধ্যে ঘুরছি। যেখানে ধোয়া উড়ছে, সেখানে পানি দেওয়া হচ্ছে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, আমরা এখনই বন ছাড়ছি না। আরও দুই থেকে তিনদিন আমরা বনের মধ্যে পর্যবেক্ষণ করব। তারপর সম্পূর্ণভাবে আগুন নির্বাপন হয়েছে ঘোষণা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ড্রোন দিয়েও ওপর থেকে পরীক্ষা করে দেখেছি। দুপুরের দিকে দু/একবার ধোঁয়া উড়তে দেখে সঙ্গে সঙ্গে ডিটেক্ট করে পানি ছেটানো হয়েছে। দুপুরের পর থেকে কোথাও আগুন দেখছি না। আপনারা জানেন য আগুনটা গ্রাউন্ড ফায়ার, তুষের মতো নিচে থেকে যায়।

আগুনের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখানে বেশির ভাগ  বলা গাছ রয়েছে। বলা গাছ হচ্ছে এক ধরনের জ্বালানি গাছ। আর কিছু সুন্দরী গাছ এখানে আছে। আগুন যেহেতু নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে, আমরা পরে জানতে পারব, আসলে ক্ষয়ক্ষতি কী পরিমাণ হয়েছে। এখনো আমরা পুরোপুরি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে পারিনি। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিলে ক্ষতির পরিমাণ জানানো সম্ভব হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

1 × five =