কাজী নওশাবা আহমেদ ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কাটে শ্যামলীর আদাবরে। তার বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সেলিম উদ্দিন এবং মা নাহিদ সেলিম। নওশাবা শহীদ আনোয়ার স্কুলে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে হলিক্রস স্কুল ও কলেজে ভর্তি হন, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে ড্রইং ও পেইন্টিং বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন।
নওশাবার প্রথম নাটকের নাম ছোটবেলা বড়বেলা। অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক জুয়েল মাহমুদ পরিচালিত ললিতা। তিনি দীর্ঘ ছয় বছর সিসিমপুরের ইকরি মিকরি চরিত্রে কণ্ঠদান ও পাপেটটি পরিচালনার সাথে যুক্ত ছিলেন। সিসিমপুরের ভূতো পাপেট চরিত্রেও তিনি অভিনয় করেন। অভিনয়ের মানুষ নওশাবা গানের ভুবনেও আসতে চান। প্রথম মঞ্চনাটক সোনাটা-তে (২০১১) অভিনয় করেন তিনি। এই নাটকের পরিচালক ছিলেন মুকুল আহমেদ। বাংলালিংকের লেডিস ফার্স্টের বিজ্ঞাপন ছিল তার প্রথম বিজ্ঞাপন। এছাড়াও তিনি গ্রামীণফোন, বিবিসি সংলাপ, নেসক্যাফে, ম্যারিডিয়ান চিপস ও টেলিটকের বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেন।
নওশাবা অমিত আশরাফের পরিচালনায় ‘উধাও’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়াও ছুঁয়ে দিলে মন চলচ্চিত্রে এ অতিথি শিল্পী হিসাবে তাকে দেখা যায়। তার অভিনীত প্রতিরুদ্ধ চলচ্চিত্রটি ২০১৬ সালে মুক্তি পাবার কথা থাকলেও এখনও তার কাজ শেষ হয়নি। ২০১৭ সালে তার অভিনীত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভুবন মাঝি এবং পুলিশ অ্যাকশন-থ্রিলারধর্মী ঢাকা অ্যাটাক মুক্তি পায়।
২০১৮ সালে তিনি ভৌতিক ধাঁচের স্বপ্নের ঘর চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এতে তাকে মিসেস ডি সুজা নামে কালো জাদু করে এমন এক নারী চরিত্রে দেখা যায়। এছাড়া আরও দুটি চলচ্চিত্র বর্তমানে নির্মাণ-উত্তর পর্যায়ে রয়েছে। ছবি দুটি হল ঢাকা ড্রিমস এবং চন্দ্রবতীর কথা।
২০২০ সালের ৩ নভেম্বর তিনি ছায়াবৃক্ষ চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হন এবং ৫ নভেম্বর এই চলচ্চিত্রের শুটিঙয়ের জন্য চট্টগ্রাম যান। এতে তাকে নৃত্যশিল্পী হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণকারী একজন চা শ্রমিক চরিত্রে দেখা যায়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি কসাই চলচ্চিত্রের শুটিঙে অংশ নেন। এতে তাকে মানুষ খুন করা এক কসাইয়ের স্ত্রী চরিত্রে দেখা যায়। এটি ২০২১ সালের ১৪ই মে ঈদুল ফিতরে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আই থিয়েটারে, এবং ১৬ই জুলাই স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি দেওয়া হয়।
এর আগে ২০২১ সালের ৮ এপ্রিল বিঞ্জ অ্যাপে মুক্তি পায় র্যাগিং ও বুলিং বিরোধী গল্প নিয়ে নির্মিত ব্যাচ ২০০৩। ২০০৩ সালের এসএসসি ব্যাচের পুনর্মিলন নিয়ে গল্পটি রচিত। এই চলচ্চিত্রে বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গবেষণাগারের একটি বিস্ফোরণের দৃশ্যে নওশাবা ও সজল নূর ছোট একটি দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন এবং এতে সজলের চোখের ভ্রু পুড়ে যায়।
২০০৩ সালে এহসানুর রহমান জিয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন নওশাবা। ২০১২ সালে তাদের সংসারে একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। তার নাম রাখা হয় প্রকৃতি নাজারিনা আহমেদ বেলা।