গুটিকয়েক ব্যক্তি দেশের ব্যাংকগুলোকে ‘ফাঁকা করে শেষ করে দিয়েছে’। অথচ তাদেরকেই নতুন করে টাকার যোগান দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এভাবে চললে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদসহ বিশ্লেষকরা।
প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংকিংখাতে সংস্কারসহ আর্থিক খাতের রোগ সারানোর কোনো উদ্যোগ নেই বলেও জানান তারা। শনিবার দেশের সম্পাদকদের শীর্ষ সংগঠন এডিটরস গিল্ডের প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৪-২৫: অর্থনৈতিক রাজনীতির হিসাব’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলে তারা।
অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা রয়েছে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেটের ওপর কর বাড়ানোয় মধ্যবিত্ত মানুষের ওপর চাপ বাড়ানো হয়েছে বাজেট। বর্তমানে ব্যাংক ঋণের প্রায় ২৫ শতাংশ খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনাসহ অর্থনৈতিক সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই বাজেটে।
বৈঠকে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী ড.শামসুল আলম বলেন, রির্জাভ কমার অন্যতম প্রধান কারণ টাকা পাচার।
এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু বলেন, বিদেশি ও অভ্যন্তরীণ কারণে অর্থনৈতিক সংকটগুলো স্বীকার করে দেওয়া এ বাজেটে মধ্যবিত্তদের জন্য তেমন কোনো সুখবর নেই।
গোলটেবিলে বৈঠকে সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান ড.আব্দুল মজিদ বলেন, সরকার একদিকে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়াচ্ছে কিন্তু এনবিআর বর্হিভূত কর ও বিভিন্ন ফিসহ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমানো হচ্ছে রহস্যজনকভাবে। এটা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয় বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের মতো বাজেট নিয়ে এমন আলোচনা-সমালোচনা পৃথিবীর আর কোনো দেশে হয় না বলে উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদ ড মাশরুর রিয়াজ বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত কমার পরিপ্রেক্ষিতের এবারের বাজেট আলাদাভাবে বিবেচনার দাবি রাখে। নয়-ছয় সুদ হার বহাল রাখতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দেরীতে সুদ হার বাড়িয়েছে।– এফবিসিসিআই- এর সাবেক সভাপতি সংসদ সদস্য এ কে আজাদ বলেন, হাতে গোনা কয়েকজন ব্যক্তি দেশের সবগুলো ব্যাংক ফাঁকা করে দিয়েছে। এভাবে ব্যাংকগুলোকে শেষ করে দেয়া ব্যক্তিরা বিদেশে পাচার করেছেন।
অর্থনৈতিক খাতে সুশাসনের ভয়াবহ ঘাটতি আছে বলে মনে করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। তিনি বরেন, বাংলাদেশের নীতি নির্ধারণ কী সংসদ সদস্যরা করেন, না আমলারা করেন তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।