অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ভারত

অধিনায়ক রোহিত শর্মা বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত। গতরাতে সুপার এইটে গ্রুপ-১এ নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ভারত ২৪ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে।

এই জয়ে সুপার এইটে ৩ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মত সেমিফাইনালে নাম লেখায় ভারত। ৩ ম্যাচে ১ জয় ও ২ হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে থেকে আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচের দিকে তাকিয়ে ছিলো অস্ট্রেলিয়া। ঐ ম্যাচে বাংলাদেশ জিতলেই সেমিতে খেলার সুযোগ পেত অসিরা। কিন্তু বাংলাদেশের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে আফগানিস্তানের ৮ রানের জয়ে সুপার এইটের পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয়স্থানে নেমে যাওয়ায় বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘণ্টা বাজে ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার।

সেন্ট লুসিয়ায় টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে শূন্য হাতে সাজঘরে ফিরেন ভারতের ওপেনার বিরাট কোহলি। এরপর ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন ভারত অধিনায়ক রোহিত। মিচেল স্টার্কের করা  তৃতীয় ওভারে চার ছক্কা ও ১টি চারে ২৯ রান তুলেন রোহিত। এতে ১৯ বলে টি-টোয়েন্টিতে ৩১তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। এবারের বিশ^কাপে এটিই দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির রেকর্ড।

হাফ-সেঞ্চুরির পরও অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের উপর চড়াও ছিলেন রোহিত। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা তৈরি করে নব্বইয়ের ঘরে পা রাখেন তিনি। কিন্তু ১২তম ওভারে নার্ভাস নাইন্টিতে স্টার্কের বলে বোল্ড হন ৭টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৪১ বলে ২২৪ স্ট্রাইক রেটে ৯২ রান করে আউট হন রোহিত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসেবে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান। বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডে যুবরাজ সিংকে টপকে গেছেন রোহিত। ২০০৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংসে ৭টি ছক্কা মেরেছিলেন যুবরাজ।

বিধ্বংসী ইনিংস খেলে রোহিত ফেরার ভারতকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। সূর্যকুমার যাদবের ১৬ বলে ৩১, শিবম দুবের ২২ বলে ২৮ এবং হার্ডিক পান্ডিয়ার ১৭ বলে ২৭ রানে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৫ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটি যৌথভাবে  সর্বোচ্চ দলীয় রান। বিশ্বকাপে এই নিয়ে তৃতীয়বার ২শ রান পেল ভারত। যা বিশ^কাপের ইতিহাসে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২শ রান।

২০৬ রানের বড় টার্গেটে খেলতে নেমে প্রথম ওভারে ব্যক্তিগত ৬ রানে সাজঘরে ফিরেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। শুরুতে উইকেট হারালেও, অস্ট্রেলিয়াকে চাপে পড়তে দেননি আরেক ওপেনার ট্রাভিস হেড ও অধিনায়ক মিচেল মার্শ। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৮ বলে ৮৭ রান তুলে অস্ট্রেলিয়াকে লড়াইয়ে রাখেন হেড-মার্শ জুটি। নবম ওভারে স্পিনার কুলদীপ যাদবের বলে অক্ষর প্যাটেলের অসাধারন ক্যাচে মার্শ আউট হলে ব্রেক-থ্রু পায় ভারত। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৮ বলে ৩৭ রান করেন মার্শ।

মার্শ ফেরার পর হেডের সাথে অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি ধরে রাখেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। জুটিতে ২৫ বলে ৪১ রান আসার পর কুলদীপের বলে বোল্ড হন ম্যাক্সওয়েল। তার আউটের পর পথ হারায় অস্ট্রেলিয়া। শক্তহাতে দলের হাল ধরতে পারেনি কোন ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮১ রানে থামে অস্ট্রেলিয়া ইনিংস।   ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪৩ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন হেড। ভারতের পেসার আর্শদীপ সিং ৩টি ও কুলদীপ ২টি উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন রোহিত।

আগামী ২৭ জুন গায়ানায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে খেলতে নামবে ভারত।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

four × 4 =