কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী জন্মদিন আজ

বাংলা গানের প্রবাদপুরুষ তথা জীবন্ত কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। যেও না সাথী, চলেছো একেলা কোথায়, ‘চক্ষের নজর এমনি কইরা একদিন খইয়া যাবে, একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, ‘চলে যায় যদি কেউ বাঁধন ছিঁড়ে কাঁদিস কেন মন, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো আর কতদিন বলো সইবো, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার, ‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে’ ‘চোখ বুঝিলে দুনিয়া আন্ধার’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় ও কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন জীবন্ত কিংবদন্তি এ কণ্ঠশিল্পী।

সৈয়দ আব্দুল হাদী বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে পাঁচবার শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া ২০০০ সালে তিনি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হন। বর্ষীয়ান এই গায়ক আজ পা রাখছেন জীবনের পঁচাশিতম বছরে। ১৯৪০ সালের এই দিনে (১ জুলাই) তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার শৈশব কৈশোর কেটেছে আগরতলা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কলকাতায়। বিশেষ এই দিন এবং চলমান সময় নিয়ে কথা হয় বরেণ্য এই শিল্পীর সঙ্গে। জানালেন, এখন আগের মতো শরীরও আর সায় দেয় না। বেশির ভাগ সময়ই বাসায় কাটে। এমনিতেই প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে থাকি না। শরীর খারাপ থাকলে তো একদমই না। একেবারেই ঘর থেকে বের হচ্ছি না।’ জন্মদিন প্রসঙ্গে সৈয়দ আব্দুল হাদী বলেন, ‘জীবনের আরেকটি নতুন বসন্ত

শুরু হলো। অনেকগুলো বসন্ত পেরিয়ে আজ ৮৫ তে আমি। দেখতে দেখতে জীবনের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। জীবনকে যখন যেভাবে পেয়েছি সেভাবেই মুল্যায়ন করার চেষ্টা করেছি। এখনো তাই। সবার কাছে দোয়া ও ভালোবাসা চাই। দিনটি নিয়ে বিশেষ কোনো আয়োজন আছে কি? জবাবে এই প্রথিতযশা গায়ক বলেন, ‘আমি কখনো বড় আয়োজনে নিজের জন্মদিন পালন করিনি। এটা আমার পছন্দও নয়। যা হয় তা ছোট পরিসরে, ঘরোয়া আয়োজন। এবারও তাই হচ্ছে। নিজের জন্মদিনে একটাই প্রত্যাশা এই দেশটা আমার, তোমার, সবার।

সৈয়দ আব্দুল হাদীর পিতা সৈয়দ আব্দুল হাই ছিলেন তৎকালীন সরকারি কর্মকর্ত। তিনি গান গাইতে এবং শুনতে পছন্দ করতেন। বাবার গ্রামোফোনে গান শুনেই সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ জন্মায় হাদীর। নিজে নিজে গুনগুন করে গাইতেন। আর এভাবেই তার সঙ্গীতচর্চা শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর সৈয়দ আব্দুল হাদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রযোজক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। সর্বশেষে তিনি লন্ডনে ওয়েল্স ইউনিভার্সিটিতে প্রিন্সিপাল লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করেছেন। ছাত্রজীবন থেকেই সিনেমায় গান গাওয়া শুরু করেন আব্দুল হাদী। সেই হিসেবে তার সঙ্গীতজীবন পাঁচ দশকেরও বছরের বেশি। একক সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তিনি প্রথম সিনেমায় গান করেন ১৯৬৪ সালের ‘ডাকবাবু’ সিনেমায়। এরপর থেকে নিয়মিত গান করে গেছেন রূপালি দুনিয়ায়। আর নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

two × five =