কোপার বিশৃঙ্খলা ২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজকদের শঙ্কায় ফেলেছে

কোপা আমেরিকার ফাইনালের আগে বিশৃঙ্খল পরিবেশ আগামী ২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজকদের বেশ শঙ্কায় ফেলেছে। উত্তর আমেরিকার পরবর্তী এই ফিফা বিশ্বকাপ আদৌ সফলভাবে আয়োজন সম্ভব কিনা তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

রোববার মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে কলম্বিয়া বনাম আর্জেন্টিনার মধ্যকার কোপার ফাইনাল ম্যাচটি সমর্থকদের উচ্ছৃঙ্খলতার কারনে ৮২ মিনিটে দেরীতে শুরু হয়। এতে করে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করা সমর্থকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছ।

আয়োজকদের দাবী টিকেটবিহীন সর্মথকরা এক পর্যায়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশের জন্য জোড়াজুড়ি শুরু করলে প্রায় তিন ঘন্টা সকল গেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু যখন দেখা গেল এমন অনেকেই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছে যাদের কাছে কোন টিকেট নেই তখন আয়োজকদের আর কিছুই করার ছিলনা। আর এতেই স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। প্রচন্ড গরমে এ সময় অনেককেই অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা গেছে। ৬৫ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মিয়ামির স্টেডিয়ামটির সবগুলো গেটে তখন হাজার হাজার সমর্থকদের ভিড় চোখে পড়েছে।

হার্ড রক স্টেডিয়ামে ২০২৬ বিশ্বকাপের সাতটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও এবারের আয়োজক অন্য দুই দেশ হলো মেক্সিকো ও কানাডা।

কোপা আমেরিকার আয়োজক দক্ষিণ আমেরিকান কনফেডারেশন কনমেবল। অন্যদিকে স্থানীয় আয়োজকদের সহায়তায় বিশ্বকাপ আয়োজন করে থাকে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রন সংস্থা ফিফা।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় দলের খেলোয়াড় ও বর্তমানে ফক্স স্পোর্টস চ্যানেলের ফুটবল বিশেষজ্ঞ এ্যালেক্সি লালাস বলেছেন, ‘এটা মোটেই ভাল কোন লক্ষণ নয়। কনমেবলের জন্য বিষয়টি মোটেই ভাল হয়নি। কারন ঘটনাটি আমাদের দেশে ঘটেছে। এখানেই আগামী দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বিশ^কাপ আয়োজিত হতে যাচ্ছে।’

কোপা আয়োজনের ব্যপারে ফিফার কোন ভূমিকা নেই। ফাইনালের এই ঘটনার পর ফিফার পক্ষ থেকে তাৎক্ষনিক কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রমতে জানা গেছে ইতোমধ্যেই ফিফা যুক্তরাষ্ট্রের স্টেডিয়ামগুলোর নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।

হার্ড রক স্টেডিয়ামের সাবেক এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, এই ধরনের ঘটনা কখনই কাম্য নয়, সেটা যে ধরনের ম্যাচই হোক না কেন। প্রতিটি দর্শককে টিকেট পরীক্ষা করে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করানো উচিৎ ছিল। এই ম্যাচ দেখতে অনেক নারী ও শিশু এসেছিল। এমনও হয়েছে দুই হাজার ডলার ব্যয় করে টিকেট ক্রয় করেও তারা মাঠে প্রবেশ করতে পারেনি, যা খুবই দুঃখজনক। ঘটনাটি কনমেবলের জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর, একইসাথে হার্ড রক স্টেডিয়ামের জন্যও।’

এর আগে কলম্বিয়া ও উরুগুয়ের মধ্যকার শার্লটে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনাল ম্যাচেও বিক্ষুব্ধ সমর্থকরা মাঠে নেমে পড়েছিল। উরুগুইয়ান খেলোয়াড়রা স্ট্যান্ডে গিয়ে কলম্বিয়ান সমর্থকদের সাথে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। তাদের দাবী স্ট্যান্ডে থাকা তাদের পরিবারের সদস্যদের কলম্বিয়ান সমর্থকরা হুমকি দিয়েছে।

এর আগে ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সফলভাবে বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়েছিল। কিন্তু তখনকার থেকে এবারের স্টেডিয়ামগুলোতে আসনসংখ্যা আনুপতিক হারে বেড়েছে। যে কারনে দর্শক সমাগমও এবার বেশী হবে।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 × 4 =