বিপ্লবী গান ও কবিতায় প্রাণ ফিরল ছবির হাটে

এক দশকের বেশি সময় পর খুলল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশদ্বারে চারুকলার শিক্ষার্থী ও শিল্পপ্রেমী মানুষের আড্ডাস্থল ছবির হাট। উন্মুক্ত এই মঞ্চে শনিবার বিকেলে বিপ্লবী গান ও কবিতায় মেতে ওঠেন শিল্পমনা মানুষেরা। ঢাকার শাহবাগ থানার হেফাজতে থাকা পরিত্যক্ত গাড়িগুলোই হয়ে গেল মঞ্চের ‘ব্যাকড্রপ’, ওপর থেকে ঝোলানো হয় লম্বা সাদা ব্যানার, যাতে লেখা হয় ‘আওয়াজ উডা, কথা ক—ছবির হাট’।

ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে ছবির হাটে কনসার্ট শুরু হয় হোসাইন জীবন ও শান্তর কণ্ঠের র‍্যাপ গান দিয়ে। গানে গানে শিল্পীরা বলেন ‘এটা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ/ মুই কি হনুরে চলবে না’। অনুষ্ঠানে গান শোনান ‘আওয়াজ উডা’ গানের শিল্পী র‍্যাপার হান্নান হোসাইন শিমুল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তাঁর ‘আওয়াজ উডা’ গানটি প্রকাশের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁকে।

হান্নান বলেন, ‘যখন আমাকে গ্রেপ্তার করা হলো, বুঝতে পারছিলাম না কী হবে আমার সঙ্গে। কারাগারে পাঠানোর পর বুঝতে পারলাম সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। ১৩ দিন পর বের হওয়ার পর জানতে পারলাম, আমার মুক্তির জন্য মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে, দেয়ালে গ্রাফিতি করেছে। আমার চোখ ভরে আসছিল, সবার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। এখন মুক্ত বাতাসে আছি। সবাইকে সবার হক দেওয়া হোক। লেখার, গাওয়ার, আঁকার স্বাধীনতা যেন দেওয়া হয়। আমরা নিজেদের অধিকার নিয়ে বাঁচতে চাই।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদের আন্দোলনের সময় আরেক আলোচিত ‘কথা ক’ গানের শিল্পী মুহাম্মদ সেজান। সেজান বলেন, ‘যেকোনো মানুষের দাবি থাকতেই পারে। সেই দাবির কথা বললে যদি অত্যাচার করা হয়, তাহলে আর আমাদের স্বাধীনতা কোথায়? সেই জেদ থেকেই গানটি লেখা।’

২০০৩ সালে ছবির হাটের শুরু হয়েছিল উন্মুক্ত শিল্পচর্চা। ২০১৪ সালের জুনে এটি উচ্ছেদ করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। এতে শিল্পচর্চায় বাধা তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করেন শিল্পীরা। আবারও এখানে শিল্পচর্চা শুরু হওয়ায় খুশি ছাত্র-শিল্পীরা। এখন থেকে ছবির হাটে নিয়মিত শিল্পচর্চা ও প্রদর্শনী করতে চান তাঁরা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

9 − five =