আমসত্ব পুরাণ

মাসুম আওয়াল

জানি জানি আম খেয়ে মজা পাও কত্ত,

খেতে বেশি মজা আম, নাকি আমসত্ব।

আমসত্বের মজা নিয়েছো না নাওনি,

হাত তোলো এ খাবার কে কে আজো খাওনি।

আমসত্বকে আরো বলা হয় আমতা,

মজা করে খেয়ে পড়ো একুশের নামতা।

আহ কী মজার মজা খেতে টক মিষ্টি,

বিট লবণের সাথে আমতার ইষ্টি।

শোনো বলি কিছু কথা অল্প ও সল্প,

আজ হবে সেই আমসত্বের গল্প।

বাঙালিরা চেনে এটা নেই কোনো ছাড় ওতেও,

বাংলাদেশে না শুধু জনপ্রিয় ভারতেও।

বুঝতেছো ফুলমতি বুঝতেছো গৈরি,

আমসত্ব তো হয় আম থেকে তৈরি।

জ্যৈষ্ঠ বিদায় নেয় পাকা আম হয় শেষ,

অসময়ে পাবে আম সে সুযোগ নয় শেষ।

আমতা কি খেতে চাও ফোন করে জানিও,

আমের সিজনে নিজে আমতাও বানিও।

নিয়ম কানুন সোজা সব বলে দিচ্ছি,

তোমার মনের কথা সব লিখে নিচ্ছি।

পাকা পাকা আম নিয়ে ফেলে দিও আঁটিটা,

ছড়িয়ে আমের আঁশ ভরে নিও বাটিটা।

কাজে লাগাতেই হবে সব ভালো ‘থটকে’

এসো আমগুলো নাও ভালো করে চটকে।

এই আম থেকে হবে অনন্য সৃষ্টি,

মিষ্টি আমের আমসত্বও মিষ্টি।

খেতে চাও যদি কেউ টক আমসত্ব,

জানো নাকি প্রয়োজন কাঁচা আম কত্ত!

কাঁচা আমে ভাপ দিয়ে আঁটি নিও ছড়িয়ে,

সময় থাকে না থেমে যায় শুধু গড়িয়ে।

মন থেকে দূর করো সব সংকটকে,

ভাপ দেওয়া কাঁচা আম নাও নাও চটকে।

যতখানি আম ঠিক ততখানি চিনি দাও,

সরিষার তেল প্রয়োজনমতো দিয়ে দাও।

প্রয়োজনে ব্লেন্ডারে পারো আম পিষতে,

আম আর চিনি হবে ভালো ভাবে মিশতে।

মনে রেখো একটুও পানি দেওয়া যাবে না,

পানি দিলে আমতায় সেই মজা পাবে না।

আম পেষা হয়ে গেলে চালুনিতে চালবে,

এইবার এইবার তুমি চুলা জ্বালবে।

কড়াইতে আম-চিনি দিয়ে জ্বাল করবে,

ঘন ঘন নাড়ো মন খুশিতেই ভরবে।

জেলির মতন হলে জ্বাল করা থামিয়ে,

ঝটপট চুলা থেকে আম নিয়ো নামিয়ে।

এবার বাঁশের কুলা খুব কাজে লাগবে

সরিষার তেল নিয়ে তার গায়ে মাখবে।

জ্বাল দেওয়া থকথকে আম তাতে ছড়িয়ে,

হাত দিয়ে মেলে দিও ডানে বামে সরিয়ে।

এইবার রোদে দিয়ে হবে সেটা শুকাতে,

পারবে না আর নিজ প্রতিভাকে লুকাতে।

অথবা ওভেনে রেখে পারো বেক করতে

গুন গুন করে কোনো গান পারো ধরতে।

একশতো আশি ডিগ্রিতে বেক চলবে,

শুকালে তোমার আমতায় কথা বলবে।

মন যতো চায় ততো পুরু করে বানাবে,

কয়টা লেয়ার দিলে চিঠি লিখে জানাবে।

প্রতিটা লেয়ার খুব ভালো করে শুকাবে,

একটা লেয়ার নিচে আরেকটা লুকাবে।

বলা শেষ ছড়ায় ছড়ায় সব তত্ত্ব,

আম থেকে এইভাবে হয় আমসত্ব।

ও বাড়ির কন্যারা ও বাড়ির বৌটায়,

আমতা তৈরি করে তুলে রাখে কৌটায়।

বাঙালি নারীর প্রিয় এই আমসত্ব,

পুরুষেরও প্রিয় এটা এই কথা সত্য।

বিশ^কবির লেখা কবিতায় আছে সে,

আদরে সোহাগে থাকে বাঙালির কাছে সে।

‘আমসত্ব দুধে ফেলি’ আহ কেয়া বাত,

ভালোবাসতেন খেতে রবীন্দ্রনাথ।

মধুর গন্ধে ঘেরা আমের এই দেশ।

আমসত্বের কথা আপাতত শেষ।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: নিবন্ধ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

five − four =