বেনজীর কি দুর্নীতির বরপুত্র নাকি প্রতীকী চরিত্র?

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা

জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপি’র দুর্নীতি বিষয়ক একটি প্রাইমার আছে। এটি অনলাইনে পাওয়া যায়। এতে দুর্নীতির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে একটি তালিকাও করা হয়েছে। ‘ঘুষ’ মানে কাউকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য তাকে টাকা, সেবা বা অন্য কোনও সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। ‘জালিয়াতি’ মানে কোনও অন্যায্য সুবিধা পাওয়ার জন্য ভ্রান্ত বা মিথ্যা তথ্য পেশ করা। ‘মানি লন্ডারিং’ মানে কালো টাকা সাদা করা, অন্যায় পথে অর্জিত অর্থকে এক খাত থেকে অন্য খাতে পাঠিয়ে তাকে আইনি করে তোলা। ‘এক্সটর্শন’ মানে তোলাবাজি – ভয় দেখিয়ে বা জুলুম করে অন্যায্যভাবে টাকা, সম্পত্তি বা কোনও গোপন তথ্য আদায় করা। ‘কিকব্যাক’ হলো বখরা, অন্যায়ভাবে কিছু টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য সেই টাকার একটা হিস্যা পাওয়া। ‘প্রভাব খাটানো’ মানে নিজের অবস্থানগত প্রতিপত্তির সুযোগ নিয়ে কাউকে কোনও অন্যায় সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। ‘ক্রোনিজম’ বলতে বোঝায় নিজের বন্ধুবান্ধবদের, তাদের যোগ্যতার কথা বিবেচনা না করেই বিভিন্ন সম্পদ বা কাজ বণ্টনের সময় বাড়তি সুবিধা করে দেওয়া। ‘নেপোটিজম’-ও অন্যায্য সুবিধা পাইয়ে দেওয়া, কিন্তু পরিবারের লোককে। ‘প্যাট্রোনেজ’ বা পৃষ্ঠপোষকতা হলো কোনও ধনী বা প্রভাবশালী মানুষের ছত্রচ্ছায়ায় থাকতে পারা। কোনও দায়িত্ব পালনের সময় কোনও গোপন তথ্য জানতে পেরে পরে সেই তথ্যকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করার কাজটিকে বলে ‘ইনসাইডার ট্রেডিং’। সরকারি লাল ফিতার ফাঁস আলগা করে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক দ্রুত কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য যে টাকা দেওয়া হয়, তার নাম ‘স্পিড মানি’। পেশাগত দায়িত্ব হিসেবে কোনও কাজের জন্য বরাদ্দ টাকার অধিকার হাতে পেয়ে তাকে আত্মসাৎ করা হলো ‘তহবিল তছরুপ’।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বেশি কোনটা করেছেন? নিঃসন্দেহে এক্সটর্শন। অন্যগুলোও আছে। তার ভয়াবহ দুর্নীতির আরও আরও তথ্য সামনে আসছে। সর্বশেষ জানা গেল, বেনজীর আহমেদের পরিবারের সদস্যদের নামে ঢাকায় আরও আটটি ফ্ল্যাটের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে ছয়টি ফ্ল্যাট ঢাকার আদাবরের একটি ভবনে। দুটি বাড্ডায়। রূপায়ন লিমিটেড স্কয়ার নামের ১৪তলা ভবনে অবস্থিত বাড্ডার ফ্ল্যাট দুটি বাণিজ্যিক বা অফিস স্পেস। বেনজীর পরিবারের নামে এ নিয়ে ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়া গেল। এর আগে ৭৬ বিঘা জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে বেনজীর পরিবারের নামে জমি পাওয়া গেল ৬৯৭ বিঘা। তবে সন্ধান শেষ হয়নি, আরও পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তো এমন একজন ব্যক্তিকে কি বলা যায়? দুর্নীতির বরপুত্র নাকি দুর্নীতির প্রতীকী চরিত্র? পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে এসব তথ্য সামনে আসায় পুলিশের ভেতরে বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। পরিবার, স্বজন কিংবা বন্ধুদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন বাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা। থানা থেকে সদর দপ্তর পর্যন্ত চলছে বেনজীরকাণ্ড নিয়ে আলোচনা।

বেনজীর আহমেদ ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে র‌্যাবের মহাপরিচালক এবং সর্বশেষ আইজিপির দায়িত্ব পালন পর্যন্ত বাহিনীর ভেতরে নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করেছিলেন। এটি ছিল ক্ষমতা ও দুর্নীতির বলয়। এবং এসব কাজ সম্ভব হয়েছে রাজনৈতিক ক্ষমতা কাঠামো তার পক্ষে থাকায়।

টাকা ছাপানোর মতো করে তিনি অর্থ বানিয়েছেন, আসামী ধরার মতো করে তিনি জমি আর ফ্ল্যাট দখল করেছেন। তো সেই ব্যক্তির কু-কর্মের দায় কে নিবে সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং এই দলের সরকার ঘাড় থেকে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ-কে ফেলে দিতে চাচ্ছে। সম্প্রতি এক দলীয় অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন এই দু’জন আওয়ামী লীগের কেউ নন।

তাহলে প্রশ্ন জাগে তাহলে তারা কারা? একটা কথা ঠিক যে এই দু’জন দল করতেন না, কিন্তু আওয়ামী লীগ দলীয় সরকার কর্তৃক তারা এসব পদে বসেছিলেন এবং সরকারের অনেক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে তাদের এই দুটি পদে বসাতো না, এটা সবাই জানে। আওয়ামী লীগের প্রতি দলীয় আনুগত্যের কারণেই তারা এই শীর্ষ পদে এসেছেন।

পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে বেনজীর ও আজিজ ইস্যুটি এড়িয়ে যেতে চায় আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু নাগরিক মনে প্রশ্ন জাগছে ঠিকই যে, বেনজীর ও আজিজের দুর্নীতি এবং বেআইনি কর্মকাণ্ডের দায় কী সরকার এড়াতে পারে? আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অবশ্য বলেই যাচ্ছেন যে, তাদের কর্মকাণ্ড ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবেই বিবেচিত হবে।

দেশের ভিতরে জেনারেল আজিজ-কে নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ নেই। তবে তার ভাইদের বিষয়ে অনেক রিপোর্ট হয়েছে যেখানে আইন অমান্যের বড় নজির আছে। তবে সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের দুনীতির যে ফিরিস্তি বের হচ্ছে তা পড়ে শেষ করা যাচ্ছে না। একটা মানুষ সরকারি পদ ব্যবহার করে দেশে-বিদেশে এতো সম্পদ দখল করতে পারেন, এতো অর্থ কামাতে পারেন তা অবিশ্বাস্য। একেবারে রূপকথার গল্পকেও হার মানায়। প্রায় প্রতিদিনই দেশের নানা প্রান্তে তার জমির খবর আসছে। বেনজীর আহমেদের সামগ্রিক বিষয়টি বিবেচনা করলে সেটা আর দুর্নীতির পর্যায়ে থাকে না, একেবারের নিরেট কুকর্ম বলেই প্রতীয়মান হয়।

তারা দু’জনে সরকারে ছিলেন, সরকারের ঘনিষ্টজন হিসেবে কাজ করেছেন। জেনারেল আজিজ সেনানিবাসে বাস করেছেন সেজন্য মানুষ থেকে কিছুটা দূরেই ছিলেন। কিন্তু জনজীবনে বেনজীর আহমেদের উপস্থিতি ছিল একেবারে আলাদা। তার ভাব ভঙ্গিমায় দৃশ্যমান ছিল যে, তিনিই সরকার, সরকারি কর্মচারী নন। এই যে এতো অনিয়ম, দুর্নীতি, দখল – এগুলো সবই হয়েছে ক্ষমতা-কে ব্যবহার করে এবং সেটা সরকার জানত না এমন কথা কোনো অপ্রকৃতিস্থ মানুষও বিশ্বাস করবে না।

এই দুই ব্যক্তির কাণ্ড নিয়ে এখন আওয়ামী লীগ-বিএনপি তর্কযুদ্ধ হচ্ছে। ওবায়দুল কাদের আর মির্জা ফখরুল রীতিমতো ঝগড়া করছেন। এতে করে ক্ষমতা ব্যবহার করে দুর্নীতি করার বিষয়টি আড়ালে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আলোচনা একবার যখন উঠেছে কিছুদিন হলেও চলবে। বাংলাদেশে উন্নয়ন নিয়ে যত আলোচনা হয় বা হয়েছে, দুর্নীতি নিয়ে ততটা হয় না এবং হয়নি। এবার কিছুটা শুরু হল।

সরকার এই আলোচনা চায় না। কিন্তু মানুষ চায়। হাতের কাছে যাকে পাবেন, তাকেই একটা প্রশ্ন করলে দশ জনের মধ্যে অন্তত আট জন বলবেন, দুর্নীতিই বড় ইস্যু। দ্রব্যমূল্যের পাগলা আঘাতে মানুষের জীবন যে আজ পর্যদুস্ত তার মূলে এই দুর্নীতি। বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে রাস্তাঘাট, সেতু নির্মাণ, সরকারের কেনাকাটা, উন্নয়নের আরও নানা প্রকল্প, নিয়োগ, বদলি, রাজনৈতিক মনোনয়ন; প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয় বলে মানুষের শক্ত ধারণা আছে। আর আগ্রাসী দুর্নীতি ও অনিয়মে ব্যাংকখাতের দুরাবস্থার কথা সবাই অবগত।

অর্থাৎ দুর্নীতি বিষয়টি কোনো সরলরৈখিক কিছু নয়। তার বহু স্তর, বহু মাত্রা, বহু দিক রয়েছে। সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত, সরকারের পুরো গায়েই অনিয়মের কলঙ্ক – এমন দাবি করার জন্য এই লেখা লিখছি না। কিন্তু বলতে হচ্ছে যে, দুর্নীতির ক্ষেত্রে দেশে বিচারহীনতা চলছে। বেনজীরের ব্যাপারে কথা উঠেছে। তদন্ত শুরু হয়নি এখনো। হয়তো তদন্ত হবেও। কিন্তু কখনও জানা যাবে না কোথায় তার কতখানি দোষ ছিল। যেমন করে বেসিক ব্যাংক লোপাটকারী আবদুল হাই বাচ্চুর দুর্নীতির বিষয়টি জনপরিসর থেকে হারিয়েই গেছে।

দুর্নীতি এক কথা, আর জনপরিসরে সেই দুর্নীতির নির্মাণ সম্পূর্ণ অন্য কথা। দুর্নীতি অনেকেই করে। কিন্তু বেনজীর আহমেদ দুর্নীতির নতুন বৈশিষ্ট্যের নির্মাতা। এক ব্যক্তি এতটা আগ্রাসী, এতটা দখলবাজ, এতটা ক্ষমতা প্রয়োগ, তার এতো দিকে থাবা; এমনটা আগে দেখা যায়নি। তিনি নিজে হয়ে উঠেছেন দুর্নীতির এক তাৎপর্যপূর্ণ উদাহরণ।

ওবায়দুল কাদের মিডিয়াকেও দুষেছেন। বলেছেন মিডিয়া কেন আগে রিপোর্ট করেনি। বেনজীরের মতো সরকারের সবচাইতে আস্থাবাজন ক্ষমতাধর ব্যক্তির দুর্নীতির রিপোর্ট যে করা যায় না, করার মতো পরিবেশ দেশে নেই সেটা ওবায়দুল কাদের ভালো করেই জানেন। কিন্তু রাজনৈতিক ময়দানে তাকে এসব কথা বলতে হয়। তবে একথা সত্য যে, দুর্নীতির বহুমাত্রিক ঘটনা শেষ পর্যন্ত একমাত্রিক আখ্যানে পরিণত হলো বেনজীরকে কেন্দ্র করে এবং তাতে গণমাধ্যম এবং প্রচারের ভূমিকা অবশ্যই আছে।

দুর্নীতি জিনিসটা বাংলাদেশে নতুন নয়। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি সংস্থা প্রতি বছর একটি সূচক প্রকাশ করে – করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স। বিশ্বের প্রায় সব দেশে সমীক্ষা করে মাপা হয়, কোন দেশের মানুষ নিজেদের দেশকে কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত মনে করেন। সেই সূচকে দেখা যায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগেও দুর্নীতির মাপকাঠিতে গোটা দুনিয়ায় আমরা যে জায়গায় ছিলাম তার থেকে অবস্থা না বদলে খারাপের দিকেই আছি।

সাধারণ মানুষ প্রতিদিন যে দুর্নীতির শিকার হন, এবং যে দুর্নীতি করেন, তা ছোট মাপের দুর্নীতি। পুলিশের ঘুষ খাওয়া, সরকারি দপ্তরে ফাইলের স্থিতাবস্থা ভাঙতে টেবিলের নিচ দিয়ে কিছু আদানপ্রদানের মতো দুর্নীতি, বিদ্যুৎ ও পানির বিল দিতে ঘুষ দেওয়া, জমির খাজনায় টাকা দেওয়া, কর কমবেশি করতে নজরানা দেওয়ার মতো দুর্নীতিতে মানুষের তীব্র রাগ হয়, দুর্নীতির ধারণাও  বাড়ে। কিন্তু এসব দুর্নীতির দায় পুরোটাই সরকারের ঘাড়ে চাপানো মুশকিল। কারণ সরকারি কর্মকর্তারা যেন মানুষকে সেবা দেন সেজন্য তাদের বেতন আর সুবিধা হয়েছে আকাশচুম্বী।

কিন্তু মিডিয়া যখন বেনজীর আহমেদের মতো নায়কোচিত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে দেয়, তখন বিষয়টি আর সাধারণ পর্যায়ে থাকে না যে সরকার অস্বীকার করবে। রাজনীতি এই উন্মোচনকে বিচিত্রভাবে ব্যবহার করতে পারে, কিন্তু তাতে দায় এড়ানো যায় না। খুচরা দুর্নীতির দায় সরকার না নিলেও এসব বড় দুর্নীতির দায় নিতেই হয়।

গোটা দেশ জুড়ে দুর্নীতির যে রমরমা চলছে, তার কারণ রাজনৈতিক। কারণ ক্ষমতা কাঠামো-কে ব্যবহার করেই এসব দুর্নীতি হয়। আর  সে কারণেই যে দলের সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, এই দুর্নীতি ঠেকানোর উপায় নেই। বিএনপি আমলে হয়েছে, এখনও হচ্ছে। কথাটা ভেবে দেখতে হবে সেই বিবেচনাতেই। ব্যাংকখাতে হলমার্ক কেলেঙ্কারি, ফার্মার্স ব্যাংক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংক আর্থিক জালিয়াতি, পি কে হালদারের লিজিং ডাকাতি, কোনো একক ব্যক্তির ব্যাংকখাত দখলের কেলেঙ্কারি, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি সবই হয়েছে ক্ষমতাবানদের দ্বারা। বেসরকারি ক্ষেত্রেও যে বড় বড় অনিয়ম হয় সেগুলোও হয় রাজনৈতিক যোগসাজশে। এগুলো সবই বড় বড় দুর্নীতি, কিন্তু তেমন কিছু হয়নি কারও।

দুর্নীতির গল্পগুলো এখন মানুষের সামনে উন্মোচিত। শাস্তির ভয় নেই, তাই সামাজিক স্তরে গল্প তৈরি হলেও ব্যক্তি বিচলিত হয় না। সে দুর্নীতি করে। দুর্নীতি দমনে স্থায়ী ভূমিকা গ্রহণ করে নীতিজ্ঞান। আমাদের রাজনীতিতে নীতি বলে কিছু নেই। আর সে কারণেই শাসনব্যবস্থা হয়ে উঠে দুর্নীতি সহায়ক।

লেখক: সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, প্রধান সম্পাদক, ঢাকা জার্নাল

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: প্রচ্ছদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

ten − 9 =