সালেক সুফী
নিন্দিত নন্দিত আগস্ট মাসে বাংলাদেশ শক্তিশালী পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে ওদের আঙিনায় টেস্ট ম্যাচে ধরাশায়ী করার পর এখন সিরিজ জয়ের সুবাতাস পাচ্ছে। নেপালকে ৪-১ ব্যাবধানে বিদ্ধস্ত করে জিতেছে অনুর্ধ ২০ সাফ ফুটবল শিরোপা। ভারতকেও পিছনে ফেলেছে বাংলাদেশ জয়ের পথে। দুটি ঐতিহাসিক জয় উৎসর্গ করা হয়েছে কর্তৃত্ববাদী সরকার অপসারণে শহীদ ছাত্র জনতার স্মৃতির উদ্দেশে।
বিজয়গুলো শতাব্দীর প্রলয়ংকারী বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষদের নতুন করে জীবন গড়ার সংগ্রামে উৎসাহ জুগিয়েছে সন্দেহ নেই। অরুণ আলোকে উদ্ভাসিত বাংলাদেশের আধার ঘরের আংগিনা। সাফল্যের ধারবাহিকতা স্মৃতি এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজ জয় এবং ওদের আঙিনায় বাংলাওয়াশ অর্জন হবে বিশাল বোনাস।
প্রথম টেস্ট জয়ে গোটা দল একাত্ম হয়ে খেলেছে বলা যায়। কালে ভদ্রে টেস্ট ম্যাচে সাফল্য লাভ করা বাংলাদেশ শুরু থেকে শেষ অবধি দাপট বজায় রেখে ভড়কে দিয়েছে পাকিস্তানকে। চার পেসার নিয়ে দ্রুত গতির উইকেট বানিয়ে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলার কৌশল বুমেরাং হয়েছে হারার আগে হার না মানা বেঙ্গল টাইগার্সদের লড়াকু মনোভাবের কাছে।
একই মাঠে অনুষ্ঠিতব্য কালকে শুরু হওয়া টেস্টে পাকিস্তান মরিয়া হয়ে লড়বে নিশ্চিত বলা যায়। ইতিমধ্যে পেস বোলিং অল রাউন্ডার আমির জামাল, লেগ স্পিনার আবরার এবং ব্যাটসম্যান কামরান গুলামকে স্কোয়াডে ফেরানো হয়েছে।
অন্তত দুটি পরিবর্তন করা হবে একাদশে বলা যায় বাংলাদেশ ভাবছে তরুণ পেসার নাহিদ রানাকে পরিবর্তন করে পেস আক্রমণের নেতা তাসকিন আহমেদকে একাদশে আনবে কি না। তুখোড় অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান খেলছে সেটি নিশ্চিত করেছে বিসিবি। খেলোয়াড়ি দক্ষতায় সাকিবের খেলা কখনো প্রশ্নবিদ্ধ নয়। খেলোড়াকে খেলা দিয়েই মূল্যায়ন করা যথার্থ।
প্রথম টেস্ট ফিরে তাকালে দেখা যাবে পাকিস্তানের চার পেসার শাহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, খুররাম শাহ্জাদ এবং মোহাম্মদ আলীর তুলনায় বাংলাদেশের শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা কিন্তু ফ্লাট উইকেটে অপেক্ষাকৃত ভালো বোলিং করেছে। উভয় ইনিংসে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছে।
পাকিস্তানের টপ অর্ডারে আব্দুল্লাহ শফিক, শান মাসুদ, বাবার আজম দাঁড়াতেই পারেনি। আর যেই না পঞ্চম দিনের সকালে উইকেটের চরিত্র পাল্টে গেছে বাংলাদেশের বিশ্বমানের স্পিন আক্রমণের সামনে তাসের ঘরের মত ঝরে পড়েছে পাকিস্তানের ব্যাটিং।একাদশে পাকিস্তান প্রথম সারির স্পিনার রাখার কৌশল মাঠে মারা গেছে। উইকেটের চরিত্র বুঝতে ভুল করেছে পাকিস্তান।
প্রমাণিত হয়েছে প্রথম ইনিংস ৪৪৮/৬ ইনিংস ঘোষণাও ছিল ভুল ধারণা। বাংলাদেশের দলের বিশ্বমানের ব্যাটিং বিশেষ করে মুশফিক (১৯১), সাদমান ইসলাম (৯৩), মিরাজ (৭৭), লিটন (৫৫), মোমিনুল (৫০) বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে পাকিস্তানের ধারণা ভুল প্রমাণ করেছে।
দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান ব্যাটিং ভেঙে পড়া উঁচু মানের স্পিনার বিপক্ষে পাকিস্তানের ব্যাটিং দুর্বলতা আবারো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। উপযোগী উইকেটে সাকিব – মিরাজ যুগল বিশ্বের সেরা ব্যাটিং লাইন আপ গুড়িয়ে দেয়ার দক্ষতা আবারো প্রমাণ করেছে।
একই মাঠে উইকেটের চরিত্র পাল্টাবে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশের দোদুল্যমনতা থাকতে পারে উইনিং কম্বিনেশন ভেঙে তাসকিনকে খেলবে কি না। নাহিদ কিন্তু প্রথম টেস্টে দ্রুততম বলার ছিল। লাইন লেংথ আরো ধারবাহিক হলে ম্যাচ জয়ী স্পেল করতে পারবে হয়ত। ত
বে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ ব্যাটিং ধারাবাহিকতা। নাজমুল শান্ত এবং সাকিবের কাছ থেকে লম্বা ইনিংস প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ। সাকিবকে অবশ্যই বাংলাদেশিদের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে হবে মাঠের বাইরের চাপ বিতর্ক উপেক্ষা করে।
৩৫০-৪০০ রান করলে বাংলাদেশকে হারানো কঠিন হবে। বরং বেপরোয়া পাকিস্তান হেরে গেলে আমি বিস্মিত হবো না। সিরিজ জয় বা বাংলাওয়াশ বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনেক উচ্চতায় উড়িয়ে নিবে। সৃষ্টি সুখের উল্লাসে উদ্ভাসিত হবে বাংলাদেশ।