পাকিস্তান – বাংলাদেশ রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট : বদলে যাওয়া বাংলাদেশ স্বস্তির অবস্থানে

সালেক সুফী

যেন কোন জাদুর কাঠির ছোয়ায় বদলে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্টে ঐতিহাসিক দাপুটে জয়ের পর বৃষ্টি ধুয়ে যাওয়া প্রথম দিনের পর কাল দ্বিতীয় দিন শেষে স্বস্তির অবস্থানে বাংলাদেশ। মিরাজ তাসকিনের বিষাক্ত বোলিং ছোবলে ২৭৪ রানে সীমিত থেকেছে পাকিস্তান ইনিংস। দিনশেষে দুই ওভার খেলে ১০ রান করেছে বাংলাদেশ। রয়ে শোয়ে খেলে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ অবারিত। সিরিজ জয় এমনকি ধবল ধোলাই সম্ভাবনা এখন দৃষ্টির সীমানায়।

প্রথম টেস্টের মত দ্বিতীয় টেস্টের উইকেটেও ছিল সবুজ ঘাসের আস্তরণ।  প্রথম দিনটি বৃষ্টিতে টস করা পর্যন্ত সম্ভব হয় নি. টেস্ট জিতে সিরিজ রক্ষা করার তাগিদে পাকিস্তান প্রথম টেস্টে বিবর্ণ দুই মুল স্ট্রাইক বলার শাহীন আফ্রিদি এবং নাসিম শাহকে বিশ্রাম দিয়ে দলভুক্ত করলো লেগ স্পিন অল রাউন্ডার আবরার আহমেদ এবং পেস অল রাউন্ডার মীর হামজাকে।  সম্পূর্ণ বোলিং আক্রমণ সীমিত অভিজ্ঞতার।  বাংলাদেশ ফিরিয়ে এংলো পেস আক্রমণের নেতা তাসকিন আহমেদকে শরিফুলকে বিশ্রাম দিয়ে। টস জয় করে সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশ বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিলো। প্রথম ওভারেই দুর্দান্ত ইনসুইঙ্গার দিয়ে তাসকিন আবদুল্লাহ শফিকের উইকেট ভেঙে দিয়ে ব্রেক থ্রু আনলেও লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত খেলার ধারা পাকিস্তানকে আশান্বিত করেছিল। অধিনায়ক শান মাসুদ এবং সাঈম আয়ুব আস্থার সঙ্গে খেলছিল। বদলে যাওয়া বাংলাদেশ কিন্তু ভড়কে যায় নি. সঠিক লাইন লেংথে ক্রমাগত বোলিং করে মেহেদী মিরাজ দ্রুত শান মাসুদ ( ৫৭) এবং সাঈম আয়ুবের (৫৮) তুলে নিয়ে মড়ক ধরে পাকিস্তান ব্যাটিং শিবিরে। তাসকিন ফিরে এসে বিদায় করে সাউদ শাকিলকে। সাকিবের বিচক্ষণতা ডানা মেলতে দেয় নি বাবার আজমকে।  গতি আর বাউন্স দিয়ে রিজওয়ানকে পরাজিত করে নাহিদ রানা। বাদ বাকি উইকেট গুলো মেহেদী মিরাজ তুলে নিলে ৬১ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নেয়া মিরাজ রাওয়ালপিন্ডি অনার্স বোর্ডে নাম লেখায়। ২৭৪ রানে পাকিস্তান ইনিংস সাঙ্গ করে বাংলাদেশ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারে। হতে পারে এমনকি ধবল ধোলাই। তবে বাংলাদেশকে লক্ষ্ মঞ্জিলে পৌঁছাতে আজ সারাদিন ব্যাটিং করে প্রাথমিক ভাবে পাকিস্তান সংগ্রহ পেরুতে হবে।  সন্তোষজনক লিড নিতে হবে. কিছুটা আহত মুশফিক ব্যাটিং করতে পারবে কিনা নিশ্চিত নই।  বাংলাদেশ ইনিংসে চারটি ক্যাচ পড়েছে। পাকিস্তান ফেলেছে একটি।  ক্যাচ নাকি ম্যাচ জেতায়।

বাংলাদেশ বদলে গেছে।  যেন গোটা দলের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণের শৃঙ্খল মুক্তি মিলেছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলের হয়ে সেরাটা নিবেদন করছে সবাই। এই বাংলাদেশকে সব সময় কামনা করে জগৎজোড়া বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভক্ত সমর্থকরা।  জয় জয়ের জননী কথাটা সার্বজনীন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

2 × 5 =