এক মঞ্চে আর ফিরবেন না ডেভিড ও রজার

জনপ্রিয় ব্রিটিশ রক ব্যান্ড পিঙ্ক ফ্লয়েডের দু্ই সদস্য ডেভিড গিলমোর ও রজার ওয়াটার্সের মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ১৯৮৫ সালে রজার পিঙ্ক ফ্লয়েড ছেড়ে দেওয়ার পর ব্যান্ডের নাম ব্যবহার করা নিয়ে আইনি লড়াই শুরু হয়। সেই প্রথম তাঁদের দ্বন্দ্বের খবর প্রকাশ্যে আসে। এরপর নানা ইস্যুতে তাঁদের মনোমালিন্য চোখে পড়েছে। তবে সব দূরত্ব সরিয়ে ২০০৫ সালে পিঙ্ক ফ্লয়েডের রি-ইউনিয়ন কনসার্টে এক মঞ্চে পারফর্ম করেন ডেভিড গিলমোর ও রজার ওয়াটার্স।

ওই সময় ভক্তরা মনে করেছিলেন, এবার বোধ হয় দ্বন্দ্ব মিটল তাঁদের। কিন্তু গত দুই দশকে বারবার সংকটে পড়েছে ডেভিড-রজারের সম্পর্ক। এই দ্বন্দ্বের মূল কারণ ছিল গান। এরপর তাঁদের সম্পর্কে প্রভাব ফেলে বিশ্বরাজনীতি। বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে দুজনের মতপার্থক্য গত বছর থেকে তাঁদের সম্পর্ক আরও জটিল করে তোলে। রজারের রাজনৈতিক বিশ্বাস, ইসরায়েল, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র বিষয়ে তাঁর মন্তব্যের সমালোচনা করে অনেক কিছু বলেছেন ডেভিড।

এবার ডেভিড গিলমোর সরাসরি জানিয়ে দিলেন, আর কখনো রজারের সঙ্গে কাজ করবেন না তিনি। তাঁর সঙ্গে এক মঞ্চে কখনো পারফর্ম করার ইচ্ছা নেই ডেভিডের। সম্প্রতি দ্য গার্ডিয়ানকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ডেভিড গিলমোর। ওই সাক্ষাৎকারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রজারের সঙ্গে আর কখনো এক মঞ্চে গাইবেন কি না? উত্তরে তিনি সরাসরি জানিয়ে দেন, ‘অবশ্যই না।’

কারণ ব্যাখ্যা করে ডেভিড বলেন, ‘ভ্লাদিমির পুতিন (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট) ও নিকোলাস মাদুরোর (ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট) মতো গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসকদের যে সমর্থন করে, তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখতে চাই না। আমি এমন কারও সঙ্গে মঞ্চে পারফর্ম করতে চাই না, যে নারী ও এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সঙ্গে এমন জঘন্য আচরণ ঠিক বলে মনে করে। তার চেয়ে আমার ভালো লাগত যদি রিচার্ড রাইটের (প্রয়াত পিঙ্ক ফ্লয়েড সদস্য) সঙ্গে আবার গাইতে পারতাম।’

গত বছর রজার তাঁর বক্তব্যে জার্মানির নাৎসিদের সঙ্গে ইসরায়েলের তুলনা করেছিলেন। এরপর রজারকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে সমালোচনা করেছিলেন ডেভিডের স্ত্রী পলি স্যামসন। পলির এ বক্তব্য সমর্থন করেছিলেন ডেভিডও। এ ঘটনার পর থেকে আরও দূরত্ব তৈরি হয় ডেভিড ও রজারের মধ্যে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালে পিঙ্ক ফ্লয়েড প্রতিষ্ঠিত হয় যে চারজনের হাত ধরে, তাঁদের অন্যতম ছিলেন রজার ওয়াটার্স। বাকি তিনজন ছিলেন সিড ব্যারেট, নিক ম্যাসন ও রিচার্ড রাইট। দুই বছর পর তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন ডেভিড গিলমোর। ১৯৬৮ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে দলত্যাগ করেন সিড, ১৯৮১-তে বেরিয়ে যান রিচার্ড রাইট।

১৯৮৫-তে রজার বেরিয়ে এলে ডেভিড গিলমোর ও নিক ম্যাসন পিঙ্ক ফ্লয়েড চালাতে থাকেন। তবে দিনে দিনে সীমিত হয়েছে ব্যান্ডের কার্যক্রম। পিঙ্ক ফ্লয়েড থেকে বেরিয়ে এলেও রজার তাঁর সাংগীতিক সফর জারি রেখেছেন এখনো। গানের বাইরে সব সময় তিনি সরব থেকেছেন মানবাধিকারের পক্ষে ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 × five =