সালেক সুফী
সিরিজের প্রথম ম্যাচে গোয়ালিয়রে ১১.৫ ওভারেই ৭ উইকেটের বিশাল ব্যাবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। কাল দিল্লিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ম্যাচে হেরেছে ৮৬ রানে, অপেক্ষা এখন তৃতীয় ম্যাচ হেরে এবারে ভারত সফরে টেস্ট এবং টি ২০ সিরিজ দুটিতে সমন্বিত ধবল ধোলাইয়ের কলঙ্ক তিলক পরার। আমাদের যারা বাংলাদেশের ক্রিকেট অগ্রগতি নিয়ে বড়াই করি, নানা কনটেন্ট তৈরী করে ভিউ মাস্টার হয়েছি তাদের কাছে হয়তো উন্নয়নের পথ নকশা আছে। কিন্তু ৫২ বছরের বেশি সময় বাংলাদেশ এবং বিশ্ব ক্রিকেটে সম্পৃক্ত থেকেও আমি বর্তমান কালো গহ্বর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্তরণের সহজ পথ খুঁজে পাচ্ছি না। একে একে টি ২০ থেকে বিদায় নিয়েছে মাশরাফি, মুশফিক, তামিম, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ। ওদের যোগ্য উত্তরসূরি গড়ে উঠেনি। সোনালী প্রজন্মের এই খেলোয়াড়দের অবসরে বাংলাদেশ দ্রুত পায়ের নিজের মাটি হারিয়ে অন্ধের মোট পথ হারিয়ে ফেলেছে।
অথচ এইতো সেইদিন পাকিস্তানকে পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজে ধবল ধোলাইয়ের পর কত আশা জেগেছিলো এবার হয়তো বাংলাদেশ টেস্ট এবং টি ২০ সিরিজে জাত চেনাবে। কিভাবে বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজে নাকানি চুবানি খেয়েছে দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। এর পর ভারতের দ্বিতীয় সারির টি ২০ দলের কাছে যেভাবে দুটি ম্যাচে তুলোধুনা হলো তার জন্য কোনো অজুহাত দেয়া যাবে না। ভারত বুঝিয়ে দিয়েছে কোথায় বাংলাদেশের ক্রিকেট অবস্থান। আমরা যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বা ডিজিটাল প্লাটফর্মে বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগীদের সঙ্গে তর্কে মাটি তাদের ইঁদুরের গর্তে মুখ লুকানো ছাড়া উপায় নেই।
কাল টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিং করতে দিয়েছিলো বাংলাদেশ। শুরুতে তাসকিন,তানজিম, মুস্তাফিজ ৪১ রানের মাঝে সঞ্জু স্যামসং, অভিষেক শর্মা এবং সূর্যকুমার যাদবকে ফিরিয়ে দিলেও কাল চতুর্থ উইকেট জুটিতে নীতিশ কুমার রেড্ডি (৩৪ বলে ৭৪) এবং রিঙ্কু সিংহ (২৯ বলে ৫৩) ১০৮ রানের জুটি বাংলাদেশ বোলিং টস নোচ করে ফেলে। হার্দিক পান্ডিয়া বেধড়ক পিটিয়ে ১০ বলে করে ৩২ রান, ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২১ রানের মাউন্ট এভারেস্টে পৌঁছে ভারত।
বিশাল এই স্কোর তারা করে বাংলাদেশ ম্যাচ জয় করবে কেউ স্বপ্নেও চিন্তা করে নি। অন্তত লড়াই করে কিছুটা সম্মানজনক হার আশা করেছিল বাংলাদেশের ভক্ত অনুরাগীরা। কিন্তু সে গুড়ে বালি। পারভেজ ইমন, লিটন, তাওহীদ হৃদয়, নাজমুল শান্ত কিছুই করতে পারলো না। যাকিছু ব্যাটিং করেছে আন্তর্জাতিক টি ২০ ক্রিকেট জীবনের গধূলি লগ্নে দাঁড়ানো মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ৩৯ বলে ৪১ রান করা রিয়াদ জানান দিলো এখনো বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাইলেন্ট কিলারের সমকক্ষ কেউ তৈরী হয় নি. যাহোক ২০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ালো ১৩৫/৯। ব্যাবধান বিশাল ৮৬ রানের। ০-২ ম্যাচে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশের এখন আরো একটি ধবল ধোলাইয়ের অপেক্ষা। সবাইকে বিশ্রাম দিয়ে ভারত বেঞ্চে বসে থাকা খেলোয়াড়দের পঢ়ক করতে পারে। কেন এই বিড়ম্বনা সেই ব্যাখ্যা দিতে পারে বাংলাদেশ কোচিং স্টাফ পরিবর্তিত বিসিবি।